আফগান তরুণরা ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন
২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০আফগানিস্তানে শান্তি ফেরাতে এক বছরের বেশি সময় ধরে আলোচনার পর কাতারের দোহায় তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এ চুক্তি সাক্ষর হচ্ছে৷
চুক্তি অনুযায়ী, তালেবান শর্ত মানলে আফগানিস্তান থেকে সব সৈন্য সরিয়ে নেবে যুক্তরাষ্ট্র৷
তালেবান রাজনৈতিক দল হিসেবে দেশটির মূল রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে এবং হয়তো আবারও তাদের ক্ষমতার কেন্দ্রে যাওয়ার পথ তৈরি হবে৷
১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ছিল তালেবান৷ ওই সময় তারা দেশে কট্টর শরিয়া আইন জারি করেছিল৷ বিশেষ করে নারীদের উপর নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল৷ তাদের শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পর্যন্ত ছিল না৷
যুক্তরাষ্ট্রের অভিযানে তালেবান ক্ষমতা থেকে উৎখাত হওয়ার পর অবস্থার পরিবর্তন হয়৷
কাবুলের ১৩ বছরের সারা হাবিব সেখানে একটি মিউজিক অ্যাকাডেমিতে গিটার শেখে৷
চুক্তির পর গিটার শেখা চালিয়ে যেতে পারবে কিনা তা নিয়ে উদ্বিগ্ন এই কিশোরী, ‘‘আমি আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুটা চিন্তিত৷ যদি তালেবান বা তাদের মতো কেউ দেশের ক্ষমতায় চলে আসে, তবে আমার শিক্ষা গ্রহণের অধিকার আর থাকবে না৷''
যদিও তালেবান বলছে, তারা তাদের আদর্শে আধুনিকায়ন করেছে৷ ইসলাম নারীদের ব্যবসা, মালিকানা, শিক্ষা গ্রহণ, কাজ করার, স্বামী নির্বাচন করার এবং নিরাপত্তা ও ভালো থাকার অধিকার দিয়েছে৷
কিন্তু দেশটির নারীরা এখনো তাদের উপর আস্থা রাখতে পারছে না৷
পাঁচ বছর আগে হাবিবা ‘ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অব কাবুল'-এ লেখাপড়া করতো৷ স্কুলে তার প্রিয় বিষয় ছিল সংগীত৷
নিরাপত্তার কারণে স্কুলটি বন্ধ হয়ে গেলে হাবিবা গিটার বাজানো শেখা শুরু করে৷ তার জীবনে আনন্দ ফিরে আসে৷
হাবিবার অ্যাকাডেমিতে গিটার শেখেন মাহদি ফায়াজি৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রতিদিনই আলোচনা চলছে৷ অন্য দেশ আমাদের ভাগ্য নির্ধারণ করছে; কত দিন আমরা এটা সহ্য করবো? এ কারণে আমি দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে হতাশ৷''
গত ১৮ বছর ধরে তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ চলে আসছে৷ আফগানিস্তানে এখনো ১২ থেকে ১৩ হাজার মার্কিন সৈন্য রয়েছে৷
২৯ তারিখ চুক্তির পর তালেবান ও আফগান সরকারের মধ্যে আগামী ১০ মার্চ আলোচনা শুরু হতে পারে৷
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে একবার দুই পক্ষ চুক্তির কাছাকাছি চলে গিয়েছিল৷ কিন্তু সংঘাত চলতে থাকায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প শেষ মুহূর্তে সরে যান৷
এসএনএল/এসিবি (রয়টার্স)
এক বছর আগের ছবিঘরটি দেখুন: