'আপনারা চান ইরাকে আমরা আত্মসমর্পনের সাদা পতাকা ওড়াই'
৩ অক্টোবর ২০০৮এর পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক দু ক্ষেত্রেই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে ঘায়েল করারও চেষ্টা করলেন তাঁরা৷
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে এবার হোয়াইট হাউসের টিকিট কে পাবেন তা যেন অনেকটাই নির্ভর করছে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের রানিং মেটের পারফরমেন্সের ওপর৷ তাই অন্যবারের চেয়ে এবার বেশ আলোচনা হচ্ছে ডেমোক্র্যাট জো বাইডেন ও রিপাবলিকান স্যারাহ পেলিনের নির্বাচনী বিতর্ক নিয়ে৷ শুক্রবার এ দুই ভাইস প্রেসিডেন্ট পদ প্রার্থী টিভিতে উপস্থিত হন সামনাসামনি লড়াইয়ে৷ অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সমস্যা সহ নানা ইস্যুতে তারা মেতেছিলেন তুমুল বিতর্কে৷ লক্ষ্য ছিলো একটাই নিজ নিজ দলের প্রেসিডেন্ট পদ প্রার্থীদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করা৷
বিতর্কে বাইডেন বলেন, জন ম্যাককেইন ইরাকের গত সাত শতাব্দীর ইতিহাস না পড়েই বলছেন সেখানে শিয়া ও সুন্নীরা একসঙ্গে বসবাস করছে৷ ম্যাককেইন সেখানে প্রচুর তেল থাকার কথাও বলেছেন৷ যদিও আমি তাঁকে পছন্দ করি কিন্তু যুদ্ধ পরিচালনার মৌলিক বিষয়গুলোতে তার অবস্থান মারাত্মক ভুল৷ এক্ষেত্রে বারাক ওবামাই সঠিক৷ এবং এটিই আসল ঘটনা৷
তবে তার সঙ্গে পুরোপুরি দ্বিমত জানিয়ে স্যারাহ পেলিন পাল্টা আক্রমণ করে বলেন, আপনারা চান ইরাকে আমরা আত্মসমর্পনের সাদা পতাকা ওড়াই যা আমাদের সেনারা চায় না৷ বারাক ওবামা এখনও স্বীকার করতে চান না যে সেখানে অভিযান কাজে লেগেছে৷ ইরাকে আমাদের কাজ তখনই শেষ হবে যখন ইরাকি সরকার তাদের জনগণকে পরিচালনা করতে পারবে এবং সেখানকার মানুষ নিরাপত্তা পাবে৷ আর আমাদের কমান্ডাররাই আমাদের সেটা জানাবেন৷
তবে কেবল আন্তর্জাতিক ইস্যুই নয় মার্কিন অর্থনীতির বর্তমান দুরবস্থা সহ ঘরোয়া নানা বিষয় নিয়েও একে অপরকে ঘায়েল করার চেষ্টা করেছেন দুই ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী৷ যেমন পেলিন বলেছেন, আমেরিকানরা যাতে বেশী চাকরির সুযোগ পায় সেজন্য কর ছাড় দেয়া প্রয়োজন৷ অথচ যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচে বড় কর বাড়ানোর পক্ষে বারাক ওবামা ও জো বাইডেন তাদের ভোট দিয়েছেন৷ এমনকি বারাক ওবামা বছর শেষেও কর বাড়ানো সমর্থন করেছেন৷ তবে বাইডেন বলেছেন, এ অভিযোগ একেবারেই সত্য নয়৷ বারাক ওবামা কর বাড়াতে ভোট দেননি৷ যে ভোটের কথা স্যারাহ পেলিন বলেছেন সেখানে জন ম্যাককেইনও ভোট দিয়েছেন৷ এটা ছিলো বাজেট সংশ্লিষ্ট ভোট৷ এটা ট্যাক্স বাড়ানোর কিছু ছিলো না৷
এদিকে জো বাইডেন ও স্যারাহ পেলিনের এ বিতর্কে কে জিতেছেন তা নিয়েও চলছে বেশ পর্যালোচনা৷ তাত্ক্ষণিক এক ফলাফলে ডেমোক্র্যাট বাইডেন এগিয়ে থাকলেও সমালোচকরা বলছেন রিপাবলিকান পেলিনের পারফরমেন্স ছিলো আগের যে কোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশী ধারালো ও সুদক্ষ৷ এদিকে সমর্থকদের মত মার্কিন গণমাধ্যমও বিতর্কের ফলাফল নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে৷ ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতে শুক্রবারের বিতর্কের মধ্য দিয়ে স্যারাহ পেলিন আগের চেয়ে নিজেকে আরও সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে গেছেন৷ অপরদিকে নিউইয়র্ক টাইমস সমালোচনা করে বলেছে, জন ম্যাককেইন তাঁর রানিং মেট বাছাইয়ে যে ভুল করেছেন এ বিতর্ক তাতে কোন পরিবর্তন আনবে না৷ তবে ওয়াশিংটন টাইমস অনেকটা মাঝামাঝি অবস্থান নিয়ে বলেছে, বিতর্কে উভয় প্রার্থীই আসল বিষয় বাদ দিয়ে কেবল কথা কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন৷