আনিস হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবিতে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ
গভীর রাতে উর্দি পরা চারজন আমতার সারদা দক্ষিণ খান পাড়ায় ছাত্রনেতা আনিস খানের বাড়িতে গিয়ে তিনতলা থেকে ফেলে তাকে হত্যা করে৷ অভিযোগটা পুলিশের বিরুদ্ধেই৷ আনিসের পরিবারের দাবি-নিরপেক্ষ তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচার৷
নিহত আনিসের শোকাচ্ছন্ন বাড়ি
খাঁ খাঁ করছে বাড়ি৷ সব থেকেও যেন কিছু নেই৷ ২৮ বছর বয়সি প্রতিবাদী তরুণ আনিস খানের হত্যার বিচারের দাবিতে সরব তার পরিবার৷ হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি ৷ তবে দোষীরা এখনও অধরা৷
আনিসকে হারানো পরিবার
আনিসকে হারিয়ে দিশেহারা তার পরিবার৷ অনেকদিন ধরে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছিল৷ বিষয়টি ২৩ মে চিঠি লিখে জানানো হয়েছিল পুলিশকে৷ তারপর বারবার নিরাপত্তা চেয়েছেন, কিন্তু পুলিশের কোনো সাড়া পাননি আনিস৷ তাকে হারানোর ব্যথা অপরাধীদের বিচার হলে কিছুটা লাঘব হবে বলে মনে করে তার পরিবার৷
বিচারের দাবিতে সোচ্চার, অনড় সালেম খান
আমতার সারদা দক্ষিণ খান পাড়ায় আনিসের বাড়ি৷ আনিসের বাবা সালেম খানের অভিযোগ, শুক্রবার রাতে উর্দি পরা এক পুলিশ অফিসার তার বুকে বন্দুকের নল ধরেন এবং অন্য তিনজন সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে যান৷ তারপরই তিনতলা থেকে হত্যা করা হয় আনিসকে৷ ঘটনার পর অনেকবার ফোন করেছেন পুলিশকে৷ পুলিশ এসেছে ছয় ঘণ্টা পরে৷ সন্তানহারা সালেম খান এখন চান শুধু সিবিআই তদন্ত এবং হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তি৷
এই সেই ঘটনাস্থল
তিনতলার এই ঘর থেকে আনিসকে নীচে ফেলে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ পরিবারের৷ এখনও কেউ বিশ্বাস করতে পারছেন না পরোপকারী, প্রতিবাদী ছেলেটি আর নেই৷
সুবিচারের দাবিতে লড়াই
‘সিট’ সদস্যরা মঙ্গলবার দু’বার আনিসের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন৷ তবে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পুলিশের তদন্ত নয়, তারা চান সিবিআই তদন্ত৷ কারণ, পুলিশের ওপর তাদের কোনো আস্থা নেই৷ তদন্তকারী দলের সদস্যরা আনিসের মোবাইল ফোনটি চাইলে সালেম খান জানান, তিনি শুধু আদালত বা সিবিআই-এর মোবাইলটা দিতে চান, অন্য কারো কাছে নয়৷
বাড়ির সামনে পুলিশি নিরাপত্তা
২০২১ সালের মে মাস থেকে নিরাপত্তা চেয়ে অনেকবার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন আনিস৷ জানিয়েছিলেন, তার বাড়িতে হামলা হয়েছে, হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে৷ আনিসের মৃত্যুর পর বাড়িতে অবশেষে পুলিশ এসেছে৷
সাসপেন্ড তিন পুলিশ
সেই রাতে এলাকায় টহলের দায়িত্বে থাকা তিন পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে৷ তবে আমতা থানার কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি৷ অথচ আনিস থানার কাছেই নিরাপত্তা চেয়েছিলেন, হত্যাকাণ্ডের পর তার বাবা সালেম খানও আমতা থানার কর্মকর্তাদের সহায়তাই চেয়েছিলেন বারবার৷
প্রতিবাদ দফায় দফায়
ছাত্রনেতা আনিস খানের হত্যআকারীদের বিচার চেয়ে বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা৷ রাস্তায় নেমেছে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়-সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা৷
‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’
সোমবার ভাষা দিবসের দিনও হত্যার বিচার চেয়ে পথে নেমেছিলেন প্রেসিডেন্সি, যাদবপুর-সহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা৷ তাদের অনেকের প্রশ্ন- ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হলে, বিরোধী রাজনীতি করলে কি বেঁচে থাকার অধিকারটুকুও থাকবে না?
‘আমার নাম আনিস খান’
১৫ বছর আগের রিজওয়ানুর রহমানের স্মৃতি যেন ফিরে এলো৷ কোনো রাজনৈতিক দলের পতাকা ছাড়াও দেখা গেল ‘নাগরিক মিছিল’৷ তাদের হাতের পোস্টারে লেখা, ‘আমার নাম আনিস খান৷’
পুলিশের বাধা
কলকাতার রাজপথে দফায় দফায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছে আনিস হত্যার বিচার চেয়ে৷ ছাত্র সংগঠনগুলোর বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় আন্দোলনকারীদের৷
প্রতিবাদ তীব্রতর
বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ৷ আন্দোলনকারীদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়৷ কিন্তু তার পরেও প্রতিবাদের ঝড় অব্যাহত৷ কলকাতাসহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে৷