হাতের লেখার ভবিষ্যৎ
১ নভেম্বর ২০১৩বাংলাদেশে এমন একটা সময় ছিল, যখন পরীক্ষার খাতায় লেখা থাকত হাতের লেখার জন্য ৫ নম্বর৷ যুগ পাল্টেছে৷ এখন সবার ঘরে ঘরে ল্যাপটপ, হাতে মুঠোফোন বা ট্যাব৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাসাইনমেন্ট বা পরীক্ষার খাতাও এখন দেখা হয় অনলাইনে৷ তাই অভিভাবকরা এখন আর হাতের লেখার প্রতি তেমন একটা জোর দেন না৷ যুক্তরাষ্ট্রেও দেখা যাচ্ছে একই চিত্র৷ তবে একেবারে প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্র থেকেই৷
ওয়াশিংটন থেকে এক ঘণ্টার দূরত্ব পেরোলে এলিকট শহরের ট্রিয়াডেলফিয়া রিজ এলিমেন্টারি স্কুল৷ সেখানে তৃতীয় শ্রেণির শিশুদের হাতের লেখা শেখাতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন শিক্ষকরা৷ আট বছর বয়সি ওরেন ও তার সহপাঠী সোফিয়া ছয় সপ্তাহের প্রচেষ্টায় পেন্সিল ধরা শিখেছে এবং প্রথম যে অক্ষরটি লিখেছে সেটি হলো আই৷
যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যের ৪৫টির মধ্যে কিন্ডাগার্টেন থেকে হাইস্কুল পর্যন্ত জরিপ করে দেখা গেছে লেখার প্রতি এবং লেখা শেখানোর প্রতি আগ্রহ দিন দিন কমছে৷ লেখার চেয়ে টাইপিং শেখানোর প্রবণতা বেড়েছে স্কুলগুলোতে৷
ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার শিক্ষানীতির সহযোগী অধ্যাপক মর্গান পলিকফ জানালেন, যুক্তরাষ্ট্রে এখন খুব কম মানুষই হাতে লেখালিখি করেন৷ বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি ইমেলে জানিয়েছেন, অন্য দেশে সবাই যদি হাতে লিখে সেখানে সেটা বন্ধ করা বোকামি হবে৷
লস অ্যাঞ্জেলেসের মেলরোজ এভিনিউ এলিমেন্টারি স্কুলের অধ্যক্ষ বার্নাদেত্তে লুকাস বললেন, সবাই এখন ই-মেল করে, মুঠোফোনে বার্তা পাঠায়, তাই হাতের লেখা এখন প্রাচীন কলার অংশ৷
তাদের স্কুল বোর্ড ২ কোটি ২০ লাখ টাকা খরচ করে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে অ্যাপেল আইপ্যাড কিনে দিয়েছে৷ তবে বিশেষজ্ঞরা বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, একসময় হয়ত যুক্তরাষ্ট্রে এমন একটি প্রজন্ম গড়ে উঠবে যারা নিজের হাতে সই পর্যন্ত করতে পারবে না৷ নর্থ ক্যারোলাইনার আইনজীবী প্যাট হারলে জানালেন, হাতের লেখাটা এখনও বেশ জরুরি৷ তাই এটা শেখানোর প্রতি গুরুত্ব দেয়া উচিত৷
ক্যানাডায় ৭১৮ জন শিক্ষার্থীর উপর গবেষণা করে দেখা গেছে, দ্বিতীয় শ্রেণির যেসব শিক্ষার্থী হাতের লেখা শিখছে, তাদের বানান এবং গ্রাফিক মোটর দক্ষতাও বেশ ভালো হয়৷
এপিবি/ডিজি (এএফপি, এপি)