বাংলাদেশে আইএস
২৭ মে ২০১৫জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বাংলাদেশের গোয়েন্দা পুলিশ গত রবিবার দু'জনকে আটক করে৷ এর মধ্যে একজন তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ আমিনুল ইসলাম বেগ আইএস-এর সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছিলেন বলে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র এবং গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মনিরুল ইসলাম৷ আটক হওয়া অন্যজন লালমাটিয়ার একটি ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ে শিক্ষক৷
উচ্চশিক্ষিত এ সব মানুষের আইএস-এর সঙ্গে জড়িত হওয়ার খবরে চিন্তিত ফেরদৌস আহমদ ফয়সল৷ ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘‘আন্তর্জাতিকভাবে জঙ্গিরা তাদের শক্তিটা ছড়িয়ে দিচ্ছে, তাই দেশে জঙ্গি নির্মূল সহজ কোনো ব্যাপার না৷ এদের ব্যাপারে সবসময়েই সতর্ক থাকতে হবে, জঙ্গিদের আইনের আওতার পাশাপাশি জঙ্গি উৎপাদনের কারখানাগুলো বন্ধ করতে না পারলে এভাবে ধরপাকড় করেও জঙ্গিদের নির্মূল করা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করে না৷ তাই চাই দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন৷''
অনিকা খান শিক্ষিত মানুষের জঙ্গি হওয়ার খবরে বিস্মিত হয়েছেন৷ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘শিক্ষিত হয়ে জঙ্গি হয়েছে...!! তাহলে পড়ালেখা করার কি দরকার ছিল...??'' প্রথম আলোর ফেসবুক পাতায় শেয়ার করা এ সংক্রান্ত খবরের নীচে মন্তব্যের ঘরে এই প্রতিক্রিয়া জানান তিনি৷ শামীম আহমেদ লিখেছেন, ‘‘আইএস কখনো ইসলামিক দল হতে পারে না, এরা ইসলামকে বিকৃত করতে এমন পন্থা অবলম্বন করছে৷ তারা ইসলামের নামে বিশ্বে যাহা করছে তা ইসলাম সমর্থন করে না৷''
তবে এ প্রসঙ্গে দেয়া পুলিশের বক্তব্য বিশ্বাস করছেন না অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী৷ জিল্লুর রহমান লিখেছেন, ‘‘সবই হাসিনার পুলিশ লীগের সাজানো নাটক৷ সাধারণ মুসলিম দাঁড়িওয়ালা ব্যক্তিদের টার্গেট করে জঙ্গি সাজানোর অপকৌশল মাত্র৷'' মুহিব খান লিখেছেন, ‘‘পুরো দুনিয়া যু্দ্ধ করে যাদের থামাতে পারতেছে না, সেখানে যারা এই সরকারের আমলে একটা হত্যাকাণ্ডেরও আসামি ধরতে পারে না তারাই নাকি আইএস ধরতেছে!!!!????'' আব্দুর রহিম মনে করছেন, বর্তমান সরকার এভাবে পুলিশ দিয়ে ঘটনা সাজিয়ে বিদেশি প্রভুদের খুশি করে বাকশালী ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চাইছে৷
এদিকে, সবাক পাখি আইএস-এর কোনো সদস্যকে গ্রেপ্তারের পরপরই ফাঁসি দেয়ার প্রস্তাব করেছেন৷ তবে স্বভাবতই তাঁর এই প্রস্তাবকে সমর্থন করেননি অনেকে৷ কারণ সেটা হলে তো আর আইএস-এর সঙ্গে তাঁর (সবাক পাখি) কোনো তফাৎ থাকবেনা বলে মন্তব্য তাদের৷ কিন্তু সবাক পাখি এই যুক্তি খণ্ডন করার চেষ্টা করেছেন এভাবে, ‘‘... আমরা আইএস-কে কী কারণে চিনি? ওরা ধরে ধরে শিরশ্ছেদ করে৷ এটাই ওদের পরিচয়ের বোল্ড পয়েন্ট৷ এখন কারো ভাইকে যদি আইএস ধরে নিয়ে যায় কল্লা কাটার জন্য, সে কী চাইবে? সরকারের কাছে কী দাবি জানাবে? অথবা তার সামনে যদি তার ভাইকে জবাই করতে থাকে, সে কী ভাববে? ভাইকে জবাই করা শেষে নিকটস্থ থানায় গিয়ে অজ্ঞাতনামা কিছু মানুষের নামে কিভাবে মামলা করবে৷ তারপর আসামি গ্রেপ্তার হচ্ছে না কেন, এটা বলে সরকারের পদত্যাগ চাইবে? এর বাইরে আইনত আর কী কী করার আছে? শুভ অশুভ-র লড়াই কেমন হয়? নিশ্চিত খুনির হাত থেকে স্বজনকে বাঁচানোর লড়াই কেমন হয়? সামনে একটা সাপ পাইলে বিষাক্ত নাকি বিষাক্ত না, সেটা নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট না করে সাপ মেরে ফেলে, অথচ আইএস-এর জন্য ব্যাপক মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে বসে আছে এই দেশের অনেক মানুষ৷''
সংকলন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ