‘আই হ্যাভ এ ড্রিম’ এর অজানা কিছু কথা
১৯৬৩ সালের ২৮ আগস্ট দিনটি অ্যামেরিকার ইতিহাসে অমর হয়ে আছে৷ সেদিন ‘আই হ্যাভ এ ড্রিম’ খ্যাত একটি ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র, যিনি অ্যামেরিকায় আফ্রিকান-অ্যামেরিকান নাগরিক অধিকার আন্দোলনের নেতা৷
লক্ষ্য বর্ণবাদের অবসান
এই সেই বিখ্যাত ছবি৷ ১৯৬৩ সালের ২৮ আগস্ট ওয়াশিংটনের লিংকন মেমোরিয়ালে প্রায় আড়াই লক্ষ সমর্থকের উদ্দেশ্যে ‘আই হ্যাভ এ ড্রিম’ খ্যাত ভাষণ দিয়েছিলেন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র৷ যুক্তরাষ্ট্র থেকে বর্ণবাদ দূর করাই ছিল তাঁর মূল লক্ষ্য৷
নাগরিক অধিকার আন্দোলন
বর্ণবাদ অবসানের লক্ষ্যে ‘সিভিল রাইটস মুভমেন্ট’ বা নাগরিক অধিকার আন্দোলন শুরু করেছিলেন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র৷ তারই অংশ হিসেবে ১৯৬৩ সালের ২৮ আগস্ট আয়োজিত ‘মার্চ অন ওয়াশিংটন’ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন তিনি৷ ছবিতে সামনের সারিতে বাম থেকে দ্বিতীয়তে দেখা যাচ্ছে তাঁকে৷
যেভাবে আন্দোলনের শুরু
ছবির এই নারীর নাম রোজা পার্কস৷ বাস চালকের নির্দেশের পরও বাসের পেছনে বসতে অস্বীকৃতি জানানোয় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল৷ তার প্রতিবাদেই শুরু হয়েছিল নাগরিক অধিকার আন্দোলন - যাঁর অন্যতম নেতা ছিলেন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র৷ মার্কিন কংগ্রেস পরবর্তীতে রোজা পার্কসকে ‘দ্য ফার্স্ট মিনিস্টার অফ সিভিল রাইটস’ উপাধি দিয়েছিল৷
বাস বয়কটের দায়ে অভিযুক্ত
রোজা পার্কসের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বাস বয়কট আন্দোলন শুরু করেছিলেন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র৷ ১৯৫৬ সালের ২২ মার্চ তোলা ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে মার্টিন লুথার কিংকে স্বাগত জানাচ্ছেন তাঁর স্ত্রী কোরেটা স্কট কিং৷ এটা আদালত ছাড়ার সময়কার ছবি৷ মন্টগোমারি শহরের বাসে চালু থাকা নিয়ম ভঙ্গের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছিল লুথার কিং এর বিরুদ্ধে৷ তবে তাঁর আপিলের পর বিচারক ৫০০ ডলারের জরিমানা মওকুফ করে দিয়েছিলেন৷
কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য ভোটাধিকার
১৯৬৫ সালের ৩০ মার্চের এই ছবিতে কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য ভোটাধিকারের দাবিতে ঘোষিত কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে মার্টিন লুথার কিং ও তাঁর স্ত্রী সহ অন্যান্যদের৷
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা
কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য ভোটাধিকারের দাবি নিয়ে ১৯৬৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসনের সঙ্গে আলোচনা করতে দেখা যাচ্ছে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রকে৷
জন্ম
১৯২৯ সালের ১৫ই জানুয়ারি জর্জিয়ার অ্যাটলান্টায় জন্মগ্রহণ করেন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র৷ ১৯৫৫ সালে বস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাভ করেন ডক্টর অব ফিলোসোফি ডিগ্রি৷ নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অহিংস আন্দোলনের জন্য ১৯৬৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি৷ তখন তাঁর বয়স মাত্র ৩৫৷ নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ীদের মধ্যে তিনিই ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ৷ ছবিটি ‘আই হ্যাভ এ ড্রিম’ ভাষণের৷
জার্মান মার্টিন লুথার
মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র এর নাম কিন্তু শুরুতে ছিল মাইকেল কিং৷ পরবর্তীতে তাঁর বাবা ষোড়শ শতকে যে জার্মান ক্যাথলিক যাজক প্রোটেস্টান্ট গির্জা প্রতিষ্ঠা করেন, সেই মার্টিন লুথারের নামে তাঁর ছেলে ও নিজের নাম পরিবর্তন করে রাখেন মার্টিন লুথার কিং৷
মৃত্যু
১৯৬৮ সালের ৪ এপ্রিল এক আততায়ীর গুলিতে নিহত হন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র৷ তাঁকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল জেমস আর্ল রে’কে (ছবিতে যাকে দেখা যাচ্ছে)৷ ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত রে একবার জেল থেকে পালিয়ে যাবার পর এফবিআই তাঁকে ধরতে এই পোস্টারটি ছাপিয়েছিল৷ তিনটি ছবিই রে’র৷