1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অ্যালজি ও শামুক যখন পুষ্টির উৎস

২৩ মে ২০১৭

চিংড়ি সহ সামুদ্রিক মাছ আমাদের খাদ্যতালিকায় স্থান পেলেও অ্যালজি বা সামুদ্রিক উদ্ভিদ এখনো ব্রাত্য থেকে গেছে৷ অথচ অত্যন্ত পুষ্টিকর এই উদ্ভিদ ও কিছু প্রজাতির ঝিনুক মানুষের কাজে লাগতে পারে৷

https://p.dw.com/p/2dPiY
Algen
ছবি: picture-alliance/OKAPIA KG, Germany

বাল্টিক সাগরে কয়েকজন মেরিন বায়োলজিস্ট সমুদ্র থেকে নতুন কৃষিপণ্য উত্তোলন করতে নিজেদের জ্ঞান কাজে লাগাচ্ছেন৷ নিজেদের তৈরি ব়্যাফট বা নৌকায় কয়েক মিনিটের মধ্যে আন্ডারওয়াটার ফার্মে পৌঁছনো যায়৷ সেই অ্যাকোয়া ফার্ম বা সামুদ্রিক কৃষিক্ষেত্রে জলের উপর শুধু বয়া ভাসতে দেখা যায়৷ তার নীচে ঝোলানো দড়ির উপর অ্যালজি চাষ করছেন বিজ্ঞানীরা৷

গবেষকরা কয়েক বছর ধরে অ্যালজি চাষ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চলেছেন৷ গবেষণাগারে চারা প্রস্তুত করা হয়৷ অ্যালজির মধ্যে বিশাল সম্ভাবনা লুকিয়ে রয়েছে, যা সত্যি অবাক করার মতো৷ মেরিন বায়োলজিস্ট টিম স্টাউফেনব্যার্গার বলেন, ‘‘শুকনা অ্যালজিতে আগুন লাগিয়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করার কথা উঠেছিল৷ কিন্তু তার মধ্যে এত পুষ্টি রয়েছে যে, ভালো কিছু করার সুযোগ রয়েছে৷’’

‘সি বেল্ট’ নামের খয়রি রঙের অ্যালজি থেকে বায়োলজিস্টরা প্রসাধনদ্রব্য তৈরি করছেন৷ ত্বকের জন্য তা খুবই ভালো, কারণ অ্যালজি অনেক পরিমাণ তরল ধারণ করতে পারে৷ বিপুল সম্ভাবনা নিয়ে এই উদ্যোগ শুরু হলেও দ্রুত শেষ হয়ে যেতে পারে৷ কারণ এই প্রজাতির অ্যালজি জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কা সামলে উঠতে পারবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে৷ টিম স্টাউফেনব্যার্গার বলেন, ‘‘সি বেল্ট তার সহ্যশক্তির সীমায় পৌঁছে গেছে৷ এখনো সে বহাল তবিয়তে রয়েছে বটে, কিন্তু তাপমাত্রা আরও বাড়লে সেটা তার পছন্দ হবে না৷ এখন ভবিষ্যতের পূর্বাভাষ নিয়ে ভাবতে হবে, কারণ হিসাব অনুযায়ী তাপমাত্রা আরও বাড়বে৷ তাই অন্য প্রজাতির অ্যালজি চাষ করে তা দিয়ে প্রসাধনদ্রব্য তৈরির কথা ভাবতে হবে৷’’

অন্যদিকে ক্ল্যাম বা ভেনাস ঝিনুক উত্তাপ পছন্দ করে৷ তাই বায়োলজিস্টরা এবার মাসল্ বা কম্বোজ ঝিনুক চাষ করছেন, যা অত্যন্ত পুষ্টিকর খাদ্য৷ কম্বোজ ঝিনুক একটু বেশি উত্তাপ পছন্দ করে৷ তখন তারা জল থেকে আরও খাদ্য সংগ্রহ করতে পারে৷ খাদ্যের অভাব নেই৷ মোটকথা উত্তাপ তারা খুবই ভালোবাসে৷

বায়োলজিস্টরা নমুনা সংগ্রহ করতে চান৷ বিক্রির আগে যাচাই করে নিতে হবে, ঝিনুকের মধ্যে কোনো রোগের বীজ বা ক্ষতিকারক পদার্থ আছে কিনা৷ জলের নীচে ঝিনুক বেড়ে উঠছে কিনা, তা পরীক্ষা করতে এক ডুবুরি কাজে নেমেছেন৷ বাল্টিক সাগরের জল বেশ ঘোলাটে, তবে দূষণের কারণে নয়৷ অসংখ্য ক্ষুদ্র জীব সেখানে থাকে৷ ফলে বেড়ে উঠতে দড়িতে ঝোলানো ঝিনুকের খাদ্যের অভাব হয় না৷

এই প্রজাতির ঝিনুক ৭ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বড় হতে পারে৷ মানুষের খাদ্য হিসেবে সেগুলি খুবই উপযোগী৷ গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকায় অত্যন্ত স্বাস্থ্যকরও বটে৷

জলের নীচে দড়ির গায়ে ঝিনুক চাষ অন্য যে কোনো পদ্ধতির তুলনায় বেশি পরিবেশবান্ধব৷ এতকাল সমুদ্রতলের মাটিতে এই চাষ করা হতো৷ ফলে সেই মাটির মারাত্মক ক্ষতি হতো৷ জার্মানির প্রথম অরগ্যানিক ঝিনুক চাষিরা কোনো রাসায়নিক পদার্থও ব্যবহার করেন না৷