ইউক্রেনে রুশপন্থিদের হামলা
২৪ জুন ২০১৪এই গোলাগুলিতে অবশ্য এখনও পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি৷ কিয়েভ সরকারের এক মুখপাত্র তাঁর ফেসবুক পাতায় লিখেছেন, ‘‘রুশপন্থিরা অস্ত্রবিরতি ভেঙে ইউক্রেনের নিরাপত্তারক্ষীদের উপর গুলি চালিয়েছে৷ বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত শহর স্লাভিয়ানস্ক এর কাছে ইউক্রেনের সেনাঘাঁটিতে গ্রেনেড লঞ্চার এবং মর্টার নিয়ে হামলাও চালাচ্ছে বিদ্রোহীরা৷''
তিনি আরো জানান, ‘‘গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট অস্ত্র বিরতি ঘোষণার পর ইউক্রেনের সরকারি বাহিনী কোনো ধরনের সেনা অভিযানে অংশ নেয়নি৷''
প্রসঙ্গত, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেট্রো পোরোশেঙ্কো দেশের পূর্বাঞ্চলে রুশপন্থিদের বিদ্রোহের অবসান ঘটাতে এক শান্তি পরিকল্পনা পেশ করেন৷ তারই রূপরেখা তুলে ধরা হয়ে লুক্সেমবুর্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে৷ তার আওতায় এক সপ্তাহের একতরফা যুদ্ধবিরতি শুরু করে ইউক্রেনের সরকার৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের প্রতিক্রিয়া
লুক্সেমবুর্গের সেই সম্মেলনে ইইউ-ভুক্ত ২৮টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইউক্রেন সরকারের অস্ত্রবিরতি ও শান্তি পরিকল্পনাকে সমর্থন দেয়ার জন্য রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানান৷ রাশিয়া এতে সমর্থন না দিলে আরো কঠোর অবরোধ আরোপের হুমকিও দেন তাঁরা৷ রাশিয়ার উদ্দেশ্যে তাঁদের বার্তা – সীমান্তের অপর প্রান্ত থেকে রুশপন্থি বিদ্রোহীদের জন্য অস্ত্র ও যোদ্ধা পাঠানো বন্ধ করতে হবে৷ সীমান্তে রুশ সৈন্যসংখ্যাও কমাতে হবে৷
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ বলেন, ‘‘রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের উচিত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উদ্যোগে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখানো৷''
তবে এরই মধ্যে সম্মেলনে রাশিয়ায় অবরোধ আরোপের ‘ফেজ-৩' নিয়েও আলোচনা হয়েছে৷ বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ব্রাসেলসে এই ইস্যুটি নিয়ে আরো আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে৷
হেগ বলেছেন, ‘‘শুক্রবারের মধ্যে আমরা নিশ্চিত হয়ে যাব রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া আসলে কি? বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য আমরা প্রস্তুত এবং রাশিয়ার কোনো একজন মানুষেরও এ বিষয়ে সন্দেহ থাকা উচিত নয়৷''
কিয়েভে অবস্থানরত জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাংক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার বলেছেন, ‘‘এটা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, ইউক্রেনের জন্য এই সপ্তাহটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ৷''
ওদিকে, রাশিয়া ইউক্রেনের অংশবিশেষ দখল করায় শাস্তিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে ক্রাইমিয়া ও সেভাস্টোপল থেকে আমদানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইইউ৷ এছাড়া, রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির পাশাপাশি ইইউ-র সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগামী শুক্রবার পোরোশেঙ্কো এক চুক্তি স্বাক্ষর করতে চলেছেন৷ পোরোশেঙ্কো ইউক্রেনের পূ্র্বাঞ্চলের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত৷ কিন্তু রুশপন্থি বিদ্রোহী নেতাদের সঙ্গে কোনো রকম সংলাপের বিরোধী তিনি৷
উল্লেখ্য, ২৭শে জুন পর্যন্ত এক সপ্তাহের একতরফা যুদ্ধবিরতি শুরু করে ইউক্রেনের সরকার৷ শুধু তাই নয়, সীমান্তের অপর প্রান্ত থেকে রাশিয়াকে রুশপন্থি বিদ্রোহীদের জন্য অস্ত্র ও যোদ্ধা পাঠানো বন্ধ করার আহ্বানও জানায় তারা৷
এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)