অস্ট্রিয়ায় ‘বোরকা পরায় নিষেধাজ্ঞা'র এক বছর
৬ অক্টোবর ২০১৮বোরকার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে সেটি বৈষম্য হিসেবে দেখা হতে পারে, এই আশঙ্কায় অস্ট্রিয়ার তৎকালীন সরকার ‘অ্যান্টি-ফেস-কাভারিং অ্যাক্ট' শীর্ষক একটি নিরপেক্ষ আইন করেছিল৷ এর আওতায় পুরো মুখ ঢাকার বিষয়টি অবৈধ করা হয়৷
আইনটির প্রধান লক্ষ্য মুসলিম নারীরা হলেও অস্ট্রিয়ায় বসবাসকারী ঠিক কতসংখ্যক মুসলিম নারী বোরকা পরেন তার কোনো হিসেব কখনো প্রকাশ করা হয়নি৷ তবে সংখ্যাটি যে খুব বেশি নয়, তা পরবর্তীতে আইন বাস্তবায়নের পরিসংখ্যান থেকে বোঝা গেছে৷
রাজধানী ভিয়েনার পুলিশ বলছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে তাঁরা মাত্র ২০ জন আইনভঙ্গকারীকে জরিমানা করেছেন৷ দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুরো দেশের পরিসংখ্যান দিতে অস্বীকার করেছে৷
ভিয়েনার ভিক্টর আডলার মার্কেটে একটি সসেজ বিক্রির দোকানের মালিক ফেসনা ডুডেক বলছেন, আইন বাস্তবায়নের আগে কয়েকজন বোরকাধারীকে দেখা যেতো, এখন সেটি নেই৷
তবে আইন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ভিয়েনার পুলিশ একবার এক ইলেক্ট্রিক পণ্যের দোকানের কর্মীকে জরিমানা করেছিল৷ কারণ, ঐ কর্মী ‘শার্ক স্যুট' পরে ক্রেতাদের মধ্যে প্রচারপত্র বিতরণ করছিলেন৷ ঘটনাটি সেই সময় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও স্যাটায়ার প্রোগ্রামগুলোতে আলোচিত হয়েছিল৷
এছাড়া রাস্তায় গান করেন এমন শিল্পী, সাইকেল আরোহী যাঁরা মাথার কাপড়টি মুখের উপর একটু বেশিই টেনে দিয়েছিলেন, তাঁরাও ঐ আইনের কারণে পুলিশের হয়রানির শিকার হয়েছেন৷
আরেক আইনের খসড়া
এদিকে, অস্ট্রিয়ার নতুন সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেনে হিজাব পরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারির প্রস্তাব করেছে৷ যদিও ঐ বয়সের কোনো মেয়ে মাথায় হেডস্কার্ফ পরে কিনা, তার পরিসংখ্যান নেই৷ গত এপ্রিলে যখন এই আইনটি প্রস্তাব করা হয়, তখন দেশটির প্রধান মুসলিম সংগঠন উদ্বেগ জানিয়ে এর প্রতিবাদ করেছিল৷ তাঁরা বলেছিলেন, বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছানোর আগে সাধারণত মুসলিম মেয়েরা হেডস্কার্ফ পরে না৷ তবে সরকারের এই আইন মুসলিম সমাজে অস্থিরতা তৈরি করবে৷ তাঁরা প্রশ্ন তুলেছিলেন, খ্রিষ্টানদের ক্রস আর ইহুদিদের টুপি ‘কিপা'-র ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না কেন?
উল্লেখ্য, ভিয়েনা ইসলামিক ফেডারেশনের হিসেব অনুযায়ী, অস্ট্রিয়ায় প্রায় ছয় লাখ মুসলমান বাস করেন, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার সাত শতাংশ৷
ক্রিস্টিয়ান বার্টলাউ/জেডএইচ