1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চীন

১৫ মার্চ ২০১২

চীনের পিপলস কংগ্রেস’এর ১০ দিনের অধিবেশন শেষ হলো৷ যদিও ডেলিগেট’দের সামনে সম্মতি জানানো ছাড়া অন্য কোনো পথ খোলা ছিল না৷ তা সত্ত্বেও, গোপনীয়তার বেড়াজালে ঘেরা চীনের রাজনীতির অনেক দিকই স্পষ্ট হয়ে গেল৷

https://p.dw.com/p/14KcS
ছবি: Reuters

অর্থনৈতিক উন্নতির গতি কমছে

এবারের সম্মেলনের অন্যতম প্রধান বিষয় ছিল চীনের অর্থনৈতিক উন্নতি৷ প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও বলেন, এবার প্রবৃদ্ধির হারের লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা কমানো হচ্ছে৷ বিগত কয়েক বছর ধরে লক্ষ্যমাত্রা একটানা প্রায় ৮ শতাংশ রাখার পর চলতি বছরে তা ৭.৫ শতাংশে কমানো হচ্ছে৷ এর ফলে কর্মসংস্থানের উপর কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সমস্যা হবে বলে আশঙ্কা করছে কমিউনিস্ট পার্টি৷ তবে অতীতে বার বার দেখা গেছে যে, শেষ পর্যন্ত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে৷

চীনাদের বিশ্বাস, সংখ্যা হিসেবে আট সৌভাগ্য বয়ে আনে৷ তা সত্ত্বেও নেতারা এবার সেই প্রতীকের আশ্রয় নিচ্ছেন না৷ জার্মানির বন শহরে ‘সেন্টার ফর গ্লোবাল স্টাডিজ'এর প্রধান গু শুয়েউ মনে করেন, চীনের সামনে এখন কঠিন চ্যালেঞ্জ রয়েছে৷ তিনি বললেন, ‘‘আপাতত চীনের প্রধান কাজ হলো বাড়তি অপ্রয়োজনীয় উৎপাদন ক্ষমতা কমিয়ে আনা এবং অর্থনৈতিক কাঠামোকে বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া৷ কর্মসংস্থান বা সামাজিক সমস্যাগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ পেতে হলে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির কোনো প্রয়োজন নেই৷''

China Premierminister Wen Jiabao Pressekonferenz Peking 14.03.2012
প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাওছবি: Reuters

প্রবৃদ্ধি ভালো কথা, কিন্তু তার মান ও স্থায়িত্বের কথাও ভাবতে হবে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে অর্থনীতির বেহাল অবস্থার কারণে চীনের রপ্তানি বাণিজ্য ধাক্কা খাচ্ছে৷ তাই চলতি বছরে প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে প্রত্যাশা কমানো বাস্তবসম্মত বলে মনে করেন হংকং'এর রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ উইলি লাম৷ তিনি বললেন, ‘‘একথা ভুললে চলবে না যে গত কয়েক বছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটা বড় অংশের পেছনে রাষ্ট্রীয় লগ্নিকারীদের অবদান ছিল৷ ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক সংকটের পর থেকেই এমনটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ এটা কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী সমাধানসূত্র হতে পারে না৷ ফলে চীনের সরকার এখন দেশের মধ্যে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ানোর চেষ্টা করছে৷''

সামরিক শক্তিবৃ্দ্ধি

চলতি বছর চীনের সামরিক বাজেট ১১.২ শতাংশ বাড়ছে৷ গত কয়েক বছর ধরে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ব্যয়ের মাত্রা বেড়েই চলেছে৷ উইলি লাম মনে করেন, এশিয়া মহাদেশে চীন তার প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে৷ এক্ষেত্রে অ্যামেরিকার সঙ্গে একই পর্যায়ে নিজের অবস্থান পাকা করতে চায় বেইজিং৷ তিনি বললেন, ‘‘সামরিক ক্ষেত্রেও একই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে৷ আর্থিক সংকটের কারণে অ্যামেরিকাকে সামরিক বাজেট কমাতে হচ্ছে৷ চীনের কাছে এটা মস্ত বড় এক সুযোগ৷ বিশেষ করে নৌ ও বিমান বাহিনীকে অ্যামেরিকার সমকক্ষ করে তোলার চেষ্টা করতে পারে চীন৷''

এসবের পাশাপাশি সরকারি পরিসংখ্যানে আরও একটি বিষয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা অনেক বিশেষজ্ঞের কাছে সত্যি দুশ্চিন্তার কারণ৷ পুলিশ ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য যে ব্যয় করা হচ্ছে, তার মাত্রা প্রতিরক্ষা খাতের চেয়েও বেশি৷ উইলি লাম'এর সূত্র অনুযায়ী, বছরে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার প্রতিবাদ, বিক্ষোভ ও অশান্তির ঘটনা নথিভুক্ত হচ্ছে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার পুলিশের ক্ষমতা বাড়াচ্ছে৷

অমীমাংসিত বিষয়

তিব্বত ও শিনচিয়াং প্রদেশে সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতির উন্নতির যে দাবি উঠছে, এবারের পিপলস কংগ্রেসে সেবিষয়ে কোনো নতুন নীতির কথা শোনা যায় নি৷ এছাড়াও সামাজিক ক্ষেত্রে নানারকম সংঘাত দেখা যাচ্ছে৷ কিন্তু পার্টি এবারেও এই সব বিষয় উপেক্ষা করেছে৷ অনেকের আশঙ্কা, এর ফলে অসন্তোষ আরও বাড়তে থাকবে৷ তাছাড়া রাজনৈতিক সংস্কারের অঙ্গীকার শোনা গেলেও বাস্তবে এখনো তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না৷ সবার নজর আপাতত পার্টি কংগ্রেসের দিকে৷ সেখানে ক্ষমতাকেন্দ্রে পালাবদল ঘটার কথা৷

প্রতিবেদন: হাইয়ে চাও / সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য