1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘অবৈধ’ নিয়োগপ্রাপ্তরা কাজে যোগ দিতে আন্দোলনে

২৩ জুন ২০২১

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম আদুস সোবহানের শেষ কর্মদিবসে ‘অবৈধভাবে’ নিয়োগ পাওয়া ১৩৮ জন শিক্ষক এবং কর্মচারী কাজে যোগ দেয়ার দাবিতে আন্দেলন করছেন৷ তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বৈঠক পন্ড করে দিচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/3vQtV
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ছবি: DW/A. Khanom

তারই অংশ হিসেবে তারা মঙ্গলবার রাত থেকে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত ভিসি অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহার বাসার সামনে অবস্থান করছেন৷ তাদের দাবির মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা স্থগিত করা হয়েছে৷ মঙ্গলবার রাতে ওই সভা হওয়ার কথা ছিলো৷ ‘অবৈধদের’ আশঙ্কা ছিল সিন্ডিকেট সভায় তাদের নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত হতে পারে৷

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ৬ মে তার শেষ কর্মদিবসে ১৩৮ জনকে নিয়োগ দেন৷ তাদের মধ্যে শিক্ষক নয় জন, সেকশন অফিসার ১৭ জন এবং বাকিরা তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী৷ উপাচার্য এক দিন আগে ৫ মে নিয়োগপত্রে সই করলেও তা প্রকাশ হয় তার শেষ কর্মদিবস ৬ মে৷ ওই দিনই শিক্ষামন্ত্রণালয় এসব নিয়োগকে মৌখিকভাবে অবৈধ ঘোষণা করে৷ এর পর পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য তাদের যোগদান স্থগিত করে দেন৷

যারা নিয়োগ পেয়েছেন তাদের মধ্যে সরাসরি ছাত্রলীগের পদে আছেন ৫০ জন৷ আর বাকীরা আওয়ামী লীগ নেতাদের ও সাবেক ভিসির আত্মীয়-স্বজন৷ আর এই নিয়োগে আর্থিক লেনদেনেরও অভিযোগ আছে৷

এ নিয়োগ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ও স্থগিতের পর কয়েকদিন নিয়োগপ্রাপ্তরা চুপচাপ থাকলেও এখন তারা বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছেন৷ গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স কমিটির বৈঠকের দিন তারা বিশেষ সক্রিয় হয়ে ওঠেন৷ তারা ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দিয়ে সভা পন্ড করে দেন৷ তাদের কথা, তারা কাজে যোগদানের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের  প্রশাসনিক কোনো গুরত্বপূর্ণ সভা হতে পারবে না৷ তাদের আশঙ্কা ওইসব সভায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত হতে পারে৷

‘আমাদের নিয়োগ অবৈধ এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয় কাগজে কলমে বলেনি’

এর আগেও তারা ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে অফিসে আটক রাখাসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে৷ প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে৷ গত সোমবার তারা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে বৈঠকও করেন৷ জানাগেছে, ওই বৈঠকে যারা ছাত্রলীগের পদে আছেন তাদের নিয়োগ বহাল রাখার আশ্বাস দেয়া হয়েছে৷

আন্দোলনকারীদের একজন রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের লাইব্রেরি ও পাবলিসিটি সেক্রেটারি এবং উচ্চমান সহকারী হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত বোরহান উদ্দিন বাপ্পি  দাবি করেন, ‘‘আমাদের নিয়োগ অবৈধ এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয় কাগজে কলমে বলেনি৷ আর বিশ্ববিদ্যালয়ও আমাদের নিয়োগ স্থগিত করেছে মৌখিকভাবে৷ তাই আমাদের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নাই৷ আমরা এখন আন্দোলনে আছি৷ ভিসি স্যার তিন দিন সময় নিয়েছেন৷ তিন দিন পর কী সিদ্ধান্ত হয় তা দেখে আমরা পরবর্তী আন্দোলনের কর্মসূচি দেব৷ আমাদের পদায়ন ও কাজে যোগ দেয়ার সুযোগ দিতে হবে৷’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কোনো বৈঠক হলেই তাতে বাধা দিচ্ছেন কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আমরা আশঙ্কা করছি ওইসব সভায় আমাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত হতে পারে৷ তাই আমরা বাধা দিচ্ছি৷ আমাদের কাজে যোগ দেয়ার আগে কোনো সভা হতে দেব  না৷’’

কমিটি যে প্রতিবেদন দেবে তার ভিত্তিতে আমরা ব্যবস্থা নেব: রেজিস্ট্রার

এই তৎপরতা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনও অনেকটা নির্বিকার৷ তাদের ব্যাপারে এখনো তারা কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না৷ এনিয়ে কথা বলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ভিসিকে পাওয়া যায়নি৷ তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. আবদুস সালাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যারা আন্দোলন করছেন তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ নন, বহিরাগত৷ বিদায়ী ভিসি তাদের নিয়োগ দিয়েছেন৷ শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের নিয়োগ অবৈধ বলে একটি তদন্ত কমিটি করেছে৷ তদন্তও শেষ বলে আমরা জেনেছি৷ তবে আমরা কোনো প্রতিবেদন এখনও পাইনি৷ কমিটি যে প্রতিবেদন দেবে তার ভিত্তিতে আমরা ব্যবস্থা নেব৷ আর আমরা তাদের যোগদান স্থগিত করেছি আগেই৷’’

বহিরাগতরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে আন্দোলন এবং ভিসির বাসার সামনে কীভাবে অবস্থান নেয় জানাতে চাইলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর মো. লিয়াকত আলী বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে বাইরের লেকের চলাচলের সড়ক আছে৷ তাই ঢুকতে পারে৷ তবে যারা অবস্থান নিয়েছেন তারা এখনো শান্তিপূর্ণভাবেই আছেন৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত পুলিশ আছে৷ এখনও খারাপ কিছু হয়নি৷’’

তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ লোক কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘তাদের নিয়োগ একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে৷  তাই তারা বৈধ না অবৈধ সে ব্যাপারে আমি মন্তব্য করতে পারছি না৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য