অবলুপ্তির পথে কলকাতার সার্কাস
আগে ছোট-বড় সকলের স্লোগান ছিল, শীতে সার্কাস দেখা চাই। এখন দিন বদলেছে। টিভি, ডিজিটাল মাধ্যমে হরেক বিনোদনের মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছে সার্কাস।
এবার কলকাতায় একমাত্র সার্কাস
এই শীতে কলকাতায় একটিমাত্র সার্কাস কোম্পানির শো চলছে। অজন্তা সার্কাস। কয়েকবছর আগেও কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে গোটা চারেক সার্কাস কোম্পানি তাবু ফেলত। জেমিনি, অজন্তা, অ্যাপোলো সার্কাস তাদের সেরা আকর্ষণ নিয়ে বিজ্ঞাপন দিতো। সেদিন আর নেই। এবার একটিমাত্র কোম্পানি এসেছে।
পশুদের খেলা বন্ধ
আগে সার্কাসের অন্যতম আকর্ষণ ছিল পশুদের নিয়ে খেলা। সিংহের মুখে মাথা ঢুকিয়ে দিচ্ছেন রিং মাস্টার, বাঘ লাফ মারছে আগুনের গোলার ভিতরে-- এই সব দৃশ্য শিহরিত করত দর্শকদের। এখন সার্কাসে পশুদের নিয়ে খেলা বন্ধ। তবে ঘোড়ার খেলা দেখানো যায়।
আগুনের খেলা
তবে পশুদের খেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরেও সার্কাসের আকর্ষণ শেষ হয়ে যায়নি। আছে নানা রকমের দর্শনীয় খেলা। যেমন আগুনের এই খেলা। প্রথমে মশালে আগুন জ্বালিয়ে নেয়া হয়।
মুখ থেকে আগুন
তারপর মুখের কাছে মশাল নিয়ে যাওয়া হয়। মুখ থেকে বের করা হয় আগুনের বিশাল হলকা। সার্কাসের এই খেলা যথেষ্ট জনপ্রিয়।
জলের খেলা
আগুনের মতোই জনপ্রিয় জলের খেলা। মুখ থেকে ফোয়ারার মতো জল বের হচ্ছে তো হচ্ছেই।
হাসায় জোকাররা
সার্কাসের অন্যতম আকর্ষণ হলেন জোকাররা। তারা সারাক্ষণ হাসিয়ে যেতে থাকেন। নিজেদের যত দুঃখই থাক না কেন, তারা দর্শকদের পুরোটা সময় আনন্দে রাখার চেষ্টা করেন।
জোকারদের কেরামতি
হাসানোর ফাঁকে জোকাররাও কিছু খেলা দেখান নিজের মতো করে। তার মধ্যেও থাকে হাসির উপাদান। যে সার্কাসের জোকার যত হাসাতে পারেন, তার আকর্ষণ তত বেশি।
তোতাপাখির ব্যালান্স
পাখিদের নিয়ে খেলা দেখানো এখনো নিষিদ্ধ হয়নি। তোতাপাখির বল-ব্যালান্সের খেলা সার্কাসে খুবই আকর্ষণীয়।
মেয়েদের রিংয়ের খেলা
সার্কাসে আরেকটি জনপ্রিয় খেলা মেয়েদের রিং নিয়ে কেরামতি। একাধিক রিং নিয়ে শরীরে তা ঘোরাতে থাকেন এই মেয়েরা।
পাঁচটি রিং নিয়ে
পাঁচটি রিং নিয়ে অসাধারণ দক্ষতায় খেলা দেখাচ্ছেন এই নারী।
ত্রিফলায় শরীর রেখে
একটা টেবিলে তিনটি ধারালো ফলা পাশাপাশি রাখা। তার উপরই পুরো শরীর ভাসিয়ে রেখেছেন তিনি। অজন্তা সার্কাসের মনোমুগ্ধকর খেলা এটি।
বুকের নীচেও
শুধু পিঠ নয়, বুকের নীচেও ত্রিফলা নিয়ে শরীর ভাসিয়ে রাখেন তিনি।
মৃত্যুকূপে মোটরসাইকেল
একটা বিশাল ঘেরা জায়গা। সাধারণত তাকে বলা হয় মৃত্যুকূপ। তার মধ্যে মোটরসাইকেল নিয়ে কেরামতি দেখান সার্কাসের কর্মীরা। দেখে শিহরিত হতে হয়।
শুটিংয়ের কেরামতি
চোখ রয়েছে সামনে, কাঁধের পিছনে তাক করা বন্দুক। কিছুটা দূরে লক্ষ্যভেদের জায়গা। সেই অবস্থায় নিখুঁতভাবে লক্ষ্যভেদ করেন এই শুটাররা।
চমকপ্রদ দক্ষতা
শুটিংয়ের সঙ্গে মিশেছে জিমন্যাসটিক্স। এভাবেই লক্ষ্যভেদ করছেন তারা।
ট্রাপিজের খেলা
সার্কাসের অন্যতম সেরা আকর্ষণ এই ট্রাপিজের খেলা। এই খেলার আকর্ষণ চিরকালীন।
অসাধারণ দক্ষতায়
এই খেলাতে দেখা যায় সার্কাসের শিল্পীদের অসাধারণ দক্ষতা। দিনের পর দিন অনুশীলনের ফল এটা। তাই ট্রাপিজের খেলা সাধারণত একেবারে শেষে হয়।
তাও হারিয়ে যাচ্ছে
এত আকর্ষণ সত্ত্বেও হারিয়ে যাচ্ছে সার্কাস। অনেক কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক কোম্পানি দেনায় চলছে। এরকম চলতে থাকলে হয়তো শেষ হয়ে যাবে বিনোদনের এই মাধ্যম। শিল্পীরা আর দেখাতে পারবেন না তাদের অসাধারণ দক্ষতা।