অপরিচ্ছন্ন আইসোলেশন সেন্টার নিয়ে প্রশ্ন
১৮ মার্চ ২০২০যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানির মতো দেশ থেকে যাঁরা ভারতে ফিরছেন, তাঁদের বিমানবন্দরেই পাসপোর্ট নিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তারপর বেশ কিছুক্ষণ তাঁদের বিমানবন্দরে রাখার পর নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আইসোলেশন সেন্টারে। তার মধ্যে দিল্লি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির ফ্ল্যাটও আছে। অভিযোগ, বাড়িগুলি অত্যন্ত নোংরা, ভাঙা, দেওয়ালে সিপেজ, বাথরুমের অবস্থাও কহতব্য নয়। এই ধরনের ফ্ল্যাটে যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হচ্ছে। তার মানে তাঁদের অন্তত ১৪ দিন এখানেই থাকতে হবে। ফলে দেশে ফেরা নাগরিকদের মধ্যে শুরু হয়েছে প্রবল বিক্ষোভ। তাঁদের অভিযোগ, এই সব ফ্ল্যাট বাসের অযোগ্য। তাঁরা তাঁদের ক্ষোভের কথা ঢালাও জানাচ্ছেন সামাজিক মাধ্যমে।
দিন দুই আগে ফ্রান্স থেকে দেশে ফিরেছিলেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, বিমানবন্দরেই তাঁদের পাসপোর্ট নিয়ে নেওয়া হয়। তারপর টার্মিনালেই একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বসিয়ে রাখা হয়েছিল। ওই জায়গা ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি ছিল না। ছোট জায়গার মধ্যে কয়েকশো লোক। ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয়েছে। কোনও খাবার নেই। বাথরুমের অবস্থা খুবই খারাপ। তাঁর বারবার মনে হচ্ছিল, এ বার শরীর খারাপ হওয়াটা অনিবার্য। বারো ঘন্টা বসিয়ে রাখার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকিদের নিয়ে যাওয়া হয় নারেলাতে ডিডিএ এর ফ্ল্যাটে। সেখানকার অভিজ্ঞতা আরও খারাপ।
দিল্লিতে এখন মোট আটটি হোটেল ও বাড়ি চিহ্নিত করা হয়েছে এই ধরনের বিদেশ ফেরত যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার জন্য। তার মধ্যে তিনটি হোটেল। সেগুলি নিয়ে অভিযোগ নেই। ইন্দো টিবেটান বর্ডার পুলিশ বা আইটিবিপি-র ছাওলা শিবির নিয়েও কোনও অভিযোগনেই। কিন্তু নারেলা ও সুলতানপুরে ডিডিএর ফ্ল্যাট, দিল্লি আরবান শেল্টার ইমপ্রুভমেন্ট বোর্ডের অ্যাপার্টমেন্ট, দ্বারকায় সরকারি বাড়ি ও ছত্তরপুরে ধর্মশালায় যেখানে যাত্রীদের রাখা হচ্ছে, সেগুলি নিয়ে বিস্তর অভিযোগ। তবে এর বিকল্প হল, দিল্লি সরকারের চিহ্নিত করা বিলাসবহুল হোটেলে থাকা। তবে থাকা, খাওয়ার বিপুল খরচ দিতে হবে নিজেকেই।
যাত্রীরা জানিয়েছেন, ফ্ল্যাটের বাথরুম নোংরায় পুরো কালো হয়ে আছে। তা এতটাই অস্বাস্থ্যকর যে একবার দেখলে দ্বিতীয়বার ঢোকার প্রবৃত্তি হয় না। বিভিন্ন জায়গা ভাঙা। বাইরের দিকের অবস্থাও তথৈবচ. ছাদের নিচে ও জানলার কার্নিশের ওপরের জায়গা হয় ভাঙা, না হয় প্রবল সিপেজ হয়ে আছে। সেই অবস্থা যাতে লোকের চোখে না পড়ে, সে জন্য ছাদ থেকে প্লাস্টিকের শিট নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে কিছু জায়গায়। ফ্ল্যাটের ছবি সামাজিক মাধ্যমে দিয়ে বিদেশ ফেরত নাগরিকরা প্রশ্ন তুলছেন, তাঁরা কি এই বাড়িতে থাকলে অসুস্থহয়ে পড়বেন না?
ডিডিএ ফ্ল্যাটে রাখা হয়েছে এমন একজনের দাবি, ''মেঝেতে পুরু ধুলোর স্তর। অনেক জায়গায় কাজ চলছে। এরকম জায়গায় কেউ থাকতে পারে?'' ডিডিএর ভাইস চেয়ারম্যান তরুণ কাপুরের যুক্তি, ''এই ফ্ল্যাটে কোনও লোক ছিল না। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আমাদের এই ফ্ল্যাটগুলিকে আইসোলেশন সেন্টারে পরিণত করতে হয়েছে। এটা চ্যলেঞ্জ ছিল। আমরা যথাসাধ্য করেছি। বিদ্যুৎ আছে। জল আছে। খাট, গদি, তোয়ালে, সাবান ইত্যাদি দেওয়া হয়েছে। তবে ওখানে গিজার নেই। কেউ গরম জল চাইলে আমাদের কর্মীরা তার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছেন। আমরা সাধ্যমতো সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।''