1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে চায় ইইউ

৩০ অক্টোবর ২০২০

করোনা সংকট মোকাবিলায় যথেষ্ট কার্যকর ভূমিকা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছে ইইউ৷ বৃহস্পতিবার এক ভিডিও কনফারেন্সে শীর্ষ নেতারা আরো সমন্বয়ের অঙ্গীকার করলেন৷

https://p.dw.com/p/3kdTB
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েনছবি: Virginia Mayo/Pool/AP/picture alliance

করোনা ভাইরাস মোকাবিলার লক্ষ্যে ইউরোপের নেতারা যে যার ঘর সামলানোর প্রচেষ্টার পর এবার ইউরোপীয় স্তরে সমন্বয়ের উদ্যোগ শুরু হলো৷ বৃহস্পতিবার ভিডিও লিংকের মাধ্যমে তাঁরা বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আলোচনা করেন৷ করোনা সংকটের শুরু থেকে রাষ্ট্রজোট হিসেবে ইইউ জোরালো ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে, এমন অভিযোগের মুখে সম্মিলিত ও কার্যকর সিদ্ধান্ত নেবার জন্য চাপ বাড়ছিলো৷ আচমকা সীমানা বন্ধ করার মতো কিছু সিদ্ধান্তও সমালোচনার মুখে পড়ছিল৷ এবার দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে সমন্বয়ের পথে এগোচ্ছে ইইউ৷

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন ও জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল পণ্য পরিবহণ চালু রাখতে ইইউ-র অভ্যন্তরীণ সীমানা খোলা রাখার পক্ষে কথা বলেন৷ করোনা সংক্রমণের হার দ্রুত বেড়ে চলা সত্ত্বেও তাঁরা ‘অতীতের ভুল' পুনরাবৃত্তি না করার পক্ষে যুক্তি দেখান৷ ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেন, সংকটের শুরুতে মরিয়া হয়ে এমন পদক্ষেপ নেবার ফলে অভ্যন্তরীণ বাজার ও পণ্যের সরবরাহ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছিল৷ তাছাড়া এর ফলে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া বন্ধ হয়নি৷ তবে জরুরি কারণ ছাড়া মানুষের অবাধ চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা যেতে পারে বলে তিনি মনে করেন৷ ম্যার্কেল বলেন, অনেক আগেই ইইউ-র সক্রিয় হওয়া উচিত ছিল৷

সীমানা সংক্রান্ত পদক্ষেপ ছাড়াও অন্যান্য বিষয়ে সমন্বয় নিশ্চিত করতে ইইউ নেতারা নিয়মিত ভিডিও কনফারেন্স আয়োজনের অঙ্গীকার করেন৷ জার্মানি, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডসসহ বিভিন্ন দেশ সম্পূর্ণ বা আংশিক লকডাউনের মাধ্যমে সংক্রমণের হার কমানোর চেষ্টা চালাচ্ছে৷ দেশের মধ্যে ‘কনট্যাক্ট ট্রেসিং’ কমবেশি সম্ভব হলেও ইউরোপীয় স্তরে এ বিষয়ে সমন্বয়ের অভাবের কারণে সমালোচনা বাড়ছে৷ সংক্রমণের উৎস ও আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার উদ্যোগ আরো জোরালো করার চেষ্টা চালাচ্ছে ইইউ৷ ইইউ কমিশন সদস্য দেশগুলির উদ্দেশ্যে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত তথ্যের আদানপ্রদান বাড়ানোর ডাক দিয়েছে৷ জাতীয় কনট্যাক্ট ট্রেসিং অ্যাপ-গুলিকে ইইউ মানদণ্ড অনুযায়ী একে অপরের উপযুক্ত করে তোলার পরামর্শও দিচ্ছে কমিশন৷ করোনা সংক্রমণ দ্রুত শনাক্ত করতে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা চালু করে আরো কার্যকরভাবে সংকট মোকাবিলার প্রস্তাবও রাখা হয়েছে৷

করোনা ভাইরাসের টিকা আবিষ্কার হলে জনসাধারণের মধ্যে সেটি বিতরণের ক্ষেত্রেও ইউরোপীয় স্তরে সমন্বয়ের উদ্যোগ এখন থেকেই শুরু করার জন্য চাপ বাড়ছে৷ ইউরোপীয় সরকার পরিষদের প্রধান শার্ল মিশেল বলেন, কিছু টিকার একাধিক ডোজের প্রয়োজন হতে পারে৷ বিভিন্ন তাপমাত্রায় সেগুলি রাখতে হয়৷ তাঁর মতে, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নিশ্চিত করতে সাংগঠনিক প্রস্তুতির প্রয়োজন৷ তাছাড়া বয়স্ক ও অসুস্থ মানুষ এবং চিকিৎসাকর্মীদের মতো কিছু গোষ্ঠীকে সবার আগে টিকা দেবার ব্যবস্থা রাখতে হবে৷ অর্থাৎ, অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রেও ইইউ স্তরে সমন্বয়ের প্রয়োজন রয়েছে৷

আপাতত হাসপাতালে চাপ সামলাতে প্রয়োজনে রোগীদের প্রতিবেশী দেশে পাঠানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে৷ এবার থেকে রোগীদের স্থানান্তরের ব্যয় ইইউ বহন করবে৷ ইইউ কমিশন সেই লক্ষ্যে ২২ কোটি ইউরো ধার্য করেছে৷ কোনো দেশের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা অবকাঠামো যাতে বিপর্যস্ত না হয়ে পড়ে, সেই লক্ষ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা তরান্বিত করতে চায় ইইউ৷

এসবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)