মালিকানা নেই নারীদের
১৬ জুলাই ২০১৪‘নারীর জন্য অর্থনৈতিক ন্যায্যতা: ন্যায্য মজুরি, সম্পদ ও সম্পত্তিতে অধিকার এবং বাজারে প্রবেশাধিকার' শীর্ষক এক গবেষণায় নারীর সম্পদে অধিকারহীনতা ছাড়াও আরো অনেক তথ্য উঠে এসেছে৷ ‘স্টেপস টুওয়ার্ডস ডেভেলপমেন্ট' এবং ‘ওয়ার্ল্ড ভিশন' যৌথভাবে গবেষণাটি পরিচালনা করেছে৷
গবেষণায় দেখা যায়, ৭০ শতাংশ নারীর সম্পদের মালিকানা নেই৷ এক শতাংশের সম্পদ থাকলেও পরবর্তীতে তা হারিয়েছে৷ ২৯ ভাগ নারী সম্পদের মালিক হয়েছে উত্তরাধিকার সূত্রে৷ নারী উদ্যোক্তা ও শ্রমিকদের ৮২ শতাংশ জানান, তাঁদের সম্পদে নিজের অধিকার বা মালিকানা নেই৷ অধিকাংশ নারীই নিজের সম্পদ ব্যবহারে কোনো মতামতও দিতে পারেন না৷ মাত্র ২৬ শতাংশ নারী মতামত দেয়ার সুযোগ পান৷
এছাড়া নারী উদ্যোক্তাদের বাজারে প্রবেশে নানাধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়৷ ৬০ শতাংশ নারী তাঁদের পণ্য বা সেবা বাজারজাত করতে গিয়ে লিঙ্গ বৈষম্যের শিকার হন৷
দেশের ছয় বিভাগের ৮ উপজেলার ৮৩ জন ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তা ও ১১৯ শ্রমিকের ওপর এই জরিপ চালানো হয়৷ শ্রমিকদের মধ্যে ৫১ জন পুরুষ ও ৬৮ জন নারী ছিলেন৷
এ প্রসঙ্গে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল বলেন, সমাজে সমতা ছাড়া ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়৷ সবার আগে সমতা আনতে হবে৷ নারী এখনও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে৷ তিনি বলেন, নারী যদি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ না করত তবে অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যেত৷ নারীকে শুধু অর্থ উপার্জন করার সুযোগ দিয়ে তার অর্থনৈতিক মুক্তি বা স্বাধীনতা দেয়া যায় না৷ তাকে সম্পদের মালিকানাও দিতে হবে, দিতে হবে সিদ্ধান্ত নেয়ার স্বাধীনতা৷
মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নারী নেত্রী অ্যাডভোকেট এলিনা খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, প্রচলিত আইন এবং দীর্ঘদিনের সামাজিক এবং পারিবারিক ব্যবস্থাই সম্পদে নারীর মালিকানা প্রতিষ্ঠায় বড় বাধা৷ তিনি বলেন নারী এখনো উত্তারাধিকার সূত্রে পুরুষের চেয়ে কম সম্পদ পান৷ আর পেলেও তা অনেক সময়ই তার নামে থাকে না৷ অন্যদিকে পরিবারের যৌথ আয়ের সম্পদেও নারীকে মালিকানা দেয়া হয় না৷ তিনি বলেন অনেক সময় নারীদের অসচেতনতাও সম্পদের মালিকানা অর্জনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়৷
এলিনা খান জানান, বাংলাদেশের উত্তরাধিকার আইন ‘পার্সোনাল ল' দিয়ে পরিচালিত হয়৷ তাই একেক ধর্মে নারীদের উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পদের বিধান একেক রকম৷ আর পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার কারণেও নারীরা তাদের প্রাপ্য সম্পদ পান না৷