নোবেল সাহিত্য পুরস্কার স্থগিত
৪ মে ২০১৮গত নভেম্বর মাসে একটি সুইডিশ দৈনিক ১৮ জন মহিলার বিবৃতি প্রকাশ করে, যারা দাবি করেছেন যে, সুইডিশ অ্যাকাডেমির সদস্য কাটারিনা ফ্রস্টেনসনের স্বামী জাঁ-ক্লোদ আর্নো তাদের ধর্ষণ করেছেন, অথবা তাদের উপর যৌন হামলা চালিয়েছেন কিংবা অন্যান্যভাবে যৌন হয়রানি করেছেন৷ ফ্রস্টেনসন সুইডেনের সাংস্কৃতিক মহলে একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি৷ তিনি ও তাঁর ফরাসি স্বামী আর্নো যে সাংস্কৃতিক চক্রটি চালিয়ে থাকেন, তা অ্যাকাডেমির কাছ থেকে অর্থসাহায্য পায়৷
আর্নোর বিরুদ্ধে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত ব্যক্তিদের নাম ফাঁস করারও অভিযোগ উঠেছে৷ তিনি সব ধরনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন৷
যৌন কেলেঙ্কারির কথা জানাজানি হওয়ার পর ১৮ সদস্য বিশিষ্ট সুইডিশ অ্যাকাডেমির একাধিক সদস্য সরে দাঁড়ান অথবা সরাসরি পদত্যাগ করেন, যাদের মধ্যে সারা ডানিয়ুসও আছেন, যিনি ১৭৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই অ্যাকাডেমির প্রথম মহিলা প্রধান৷ ফ্রস্টেনসন নিজেও পদত্যাগ করেন৷ সুইডিশ অ্যাকাডেমি স্বীকার করে যে, ‘‘অকাঙ্খিত ঘনিষ্ঠতার মতো অগ্রহণযোগ্য আচরণ’’ ঘটেছে, কিন্তু এই স্বীকৃতি সত্ত্বেও অ্যাকাডেমির সুনামের যে হানি ঘটেছে, তা রোধ করা যায়নি – যে কারণে অ্যাকাডেমি দৃশ্যত এ বছরের নোবেল সাহিত্য পুরস্কার স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে৷
কারণ হিসেবে সুইডিশ অ্যাকাডেমি তার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বর্তমানে অ্যাকাডেমির সদস্যসংখ্যা, এবং অ্যাকাডেমির উপর জনসাধারণের আস্থা হ্রাস পাওয়ার কথা বলেছে৷ পরবর্তী নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করার আগে অ্যাকাডেমির উপর জনসাধারণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন, বলেছেন অ্যাকাডেমির স্থায়ী সচিব আন্ডার্স অলসন৷ দৃশ্যত ২০১৮ সালের নোবেল সাহিত্য পুরস্কার ২০১৯ সালে প্রদান করা হবে – সেই সঙ্গে ২০১৯ সালের নোবেল সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ীর নামও ঘোষণা করা হবে৷ নোবেল পুরস্কার নিধি এই সিদ্ধান্ত সমর্থন করেছে৷
‘‘নোবেল পুরস্কারের উপর সুইডিশ অ্যাকাডেমির সংকটের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে,’’ বলেছেন নোবেল প্রাইজ ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট কার্ল-হেনড্রিক হেলডিন৷ অ্যাকাডেমির সিদ্ধান্ত নোবেল পুরস্কারের দীর্ঘমেয়াদি সুনাম রক্ষা করতে সাহায্য করবে, বলে তিনি মন্তব্য করেছেন৷ আলফ্রেড নোবেল ১৯০০ সালে নোবেল পুরস্কার নিধি প্রতিষ্ঠা করেন৷
সুইডিশ অ্যাকাডেমি উল্লেখ করেছে যে, নোবেল সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা পিছিয়ে দেওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়৷ ১৯১৫, ১৯১৯, ১৯২৫, ১৯২৬, ১৯২৭, ১৯৩৬ এবং ১৯৪৯ সালে একটি ‘‘সংরক্ষিত পুরস্কার’’ ঘোষণা করা হয় ও তার মধ্যে পাঁচটি পুরস্কার পরের বছরের পুরস্কারের সঙ্গে একযোগে প্রদান করা হয়৷
ক্রিস্টিনা বুরাক/এসি