২০১৬ সালে পর্যটনের ‘ভালো’ এবং ‘খারাপ’ দেশ
ব্রাসেলস, প্যারিস, ইস্তানবুল এবং সর্বশেষ বার্লিনে হামলার প্রভাব পড়েছে পর্যটন খাতে৷ অনেক পর্যটক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তাদের গন্তব্য পরিবর্তন করেছেন৷ যে কারণে কিছু দেশে পর্যটক নাটকীয়ভাবে বেড়েছে৷
আইসল্যান্ড – বছরের রাইজিং স্টার
পর্যটন খাতে গতবছর আইসল্যান্ডের বৃদ্ধি ছিল ৩৪ শতাংশ৷ এর আগে ইউরোপের অন্য কোনো দেশে পর্যটকের সংখ্যা এত দ্রুতগতিতে বাড়েনি৷ ইউরোপের ট্রাভেল কমিশন জানিয়েছে, ১৭ লাখের মতো পর্যটক গিয়েছেন আইসল্যান্ডে, যাঁদের মধ্যে মার্কিন এবং এশীয় পর্যটকও ছিল৷
স্লোভাকিয়া – এক নতুন গন্তব্য
পূর্ব ইউরোপের এই দেশটি সামগ্রিকভাবে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে৷ সেদেশে পর্যটকদের হার আগের তুলনায় ১৯ শতাংশ বেড়েছে৷ স্লোভাকিয়ার বালুময় সমুদ্রতট বা ভূমধ্যসাগরীয় ক্লাইমেট নেই৷ তবে সেদেশের ভ্রমণ বেশ সস্তা আর সেখানকার কার্পেথিয়ান পর্বতমালা এবং রাজধানী ব্রাতিস্লাভার পুরনো শহর পর্যটকদের বেশ টানে৷
সাইপ্রাস – রুশদের প্রিয় দেশ
ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ সাইপ্রাসে পর্যটকের হার একলাফে বেড়েছে ১৯ শতাংশ৷ ফলে দ্বিতীয় অবস্থানে স্লোভাকিয়ার পাশেই রয়েছে দেশটি৷ গত গ্রীষ্মে অনেক রুশ পর্যটক দেশটি ভ্রমণ করেছে৷ তুরস্কে জঙ্গি হামলা এবং আঙ্কারার সঙ্গে মস্কোর সাময়িক বিবাদের কারণে সেদেশ বেছে নেয় রাশিয়ার পর্যটকরা৷
বুলগেরিয়া – বলকান সি’র এক জনপ্রিয় গন্তব্য
জার্মান এবং রাশিয়ার পর্যটকদের মধ্যে যাঁরা বুলগেরিয়ার কৃষ্ণ সাগর উপকূলে ছুটি কাটাতে গেছেন, তাঁদের মতামত হচ্ছে এটা ইবিজার চেয়ে সস্তা এবং তুরস্কের চেয়ে নিরাপদ৷ পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে পর্যটন বৃদ্ধির হার ১৩ শতাংশ৷ তালিকার তৃতীয় অবস্থান নেয়ার জন্য এটা যথেষ্ট৷
স্পেন – এ বছরের বিজয়ী
গতবছর স্পেনের পর্যটন খাতের বৃদ্ধির হার ছিল দশ শতাংশ৷ আইসল্যান্ড এবং সাইপ্রাসের তুলনায় এই হার কম হলেও সংখ্যার বিবেচনায় অনেক৷ গতবছর ৭৪ মিলিয়ন পর্যটক গেছেন সেদেশে যা এক নতুন রেকর্ড৷ স্পেনের সূর্য, সমুদ্র, বালু সবই আছে, তবে এই বৃদ্ধির পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ নিরাপত্তা৷
ব্রিটেন – আগের চেয়ে সস্তা
ব্রেক্সিট ভোটের পর পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে ব্রিটেনে, কেননা পাউন্ডের দাম আগের চেয়ে কমে গেছে৷ গত ছয়মাসে সেদেশের পর্যটন খাত বেড়েছে আট শতাংশ৷
গ্রিস – মিশ্র বার্তা
ভূমধ্যসাগরীয় দেশটির জন্য বছরটা কঠিন ছিল৷ পর্যটন খাতের বৃদ্ধির হার ১.৫ শতাংশ৷ দেশটির কিছু দ্বীপ জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারলেও লেসবসে পর্যটক কমেছে ৬৩ শতাংশ৷
তুরস্ক – সবচেয়ে হারিয়েছে যে দেশ
সন্ত্রাসী হামলা আর রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে গতবছর তুরস্কে বিদেশি পর্যটক কমেছে প্রায় ৩৩ শতাংশ৷ শুধুমাত্র আগস্টে আগের বছরের তুলনায় ৭৪ শতাংশ কম রুশ এবং ৩৪ শতাংশ কম জার্মান সেদেশে গেছেন৷ তবে সৌদি আরব থেকে পর্যটক আগমনের হার বেড়েছে সেদেশে৷
বেলজিয়াম – নেতিবাচক ভারসাম্য
ব্রাসেলসে সন্ত্রাসী হামলার পর পর্যটকের হার ১৩ শতাংশ কমেছে সেদেশে৷ পর্যটকদের কাছে সেদেশের অন্যতম জনপ্রিয় শহর ব্রুজেও পর্যটকদের আনাগোনা কমে গেছে৷ তবে একটি সুসংবাদ হচ্ছে, বেলজিয়ামের বিয়ার ইউনেস্কোর ইন্টেনজিবল কালাচারাল লিস্টে জায়গা করে নিয়েছে৷
প্রতিবেদন: কের্স্টিন স্মিড্ট/এআই
সম্পাদনা: জাহিদুল হক