হুমায়ূন আহমেদের ‘দেয়াল'
২০ জুলাই ২০১২হুমায়ূন আহমেদের অপ্রকাশিত নতুন উপন্যাস ‘দেয়াল'৷ বাংলাদেশের একটি দৈনিক পত্রিকায় গত সপ্তাহে এই উপন্যাসের দু'টি অধ্যায় প্রকাশের পর দেশব্যাপি ব্যাপক সমালোচনা ও বিতর্ক তৈরি হয়েছে উপন্যাসটি ঘিরে৷
সমালোচকরা বলছেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী কর্ণেল ফারুককে এই উপন্যাসে কিছুটা মহান করে দেখানো হয়েছে এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যার ঘটনাটি খন্দকার মুশতাক জানতেন না বলে দেখানো হয়েছে৷
তবে, ড. সৈয়দ মনজুরুল বলেছেন, দেয়াল'এর খসড়া কপি হুমায়ূন আহমেদ তাঁকে পড়তে দিয়েছিলেন৷ ‘‘বইটি পড়ে মনে হয় নি খলনায়কদেরকে মহান করে দেখানো হয়েছে৷ বরং সমগ্র বইটি পড়লে বঙ্গবন্ধুর জন্য একধরনের আন্তরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জন্মায় আমাদের মনে৷''
তবে, মনজুরুল ইসলাম বলেছেন, ‘‘বইটিতে তথ্যগত ছোটো-খাটো কিছু ভুল আছে'', যা তিনি নিজেও হুমায়ূন আহমেদকে জানিয়েছেন৷ এই ভুলত্রুটিগুলো ঠিক করে নিলে ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাস‘দেয়াল' একটি সুখপাঠ্য বই হবে বলেই আশা করেন তিনি৷
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড সহ অন্যান্য রাজনৈতিক ইতিহাসকে আশ্রয় করে নির্মিত হয়েছে এর পটভূমি৷ কিন্তু ঐতিহাসিক এ ঘটনার কিছু তথ্যকে ‘অসত্য' ও ‘বিকৃত' করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷ বঙ্গবন্ধুর ছোট ছেলে শেখ রাসেল এর মৃত্যুর দৃশ্য বইটিতে যেভাবে বর্ণনা করা হয়েছে তা সঠিক হয় নি বলে রুল'ও জারি করেছে বাংলাদেশের আদালত৷ আদালত তার রুলে বলেছে, আদালত আশা করছে হুমায়ূন আহমেদ তার উপন্যাসে বর্ণিত ‘তথ্যগত অসঙ্গতি ও বিভ্রান্তিগুলো' দূর করে ইতিহাসের সঠিক ঘটনা চিত্রায়ন করবেন৷
ইতিহাস আশ্রিত এই গ্রন্থটি নিয়ে যে তুমুল আলোচনা চলছে, সেটিকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ড. মনজুর বলেন, ‘‘ইতিহাস আর সাহিত্য এক নয়৷ ইতিহাসের আশ্রয়ে কল্পনাকে অবলম্বন করে সাহিত্য রচিত হয়৷ তবে, লক্ষ্য রাখতে হবে কল্পনা যেন ইতিহাসের সত্য থেকে দূরে সরে না যায়৷ হুমায়ূনের ‘দেয়াল'-ও এরকমই একটি গ্রন্থ৷ ইতিহাস থেকে দূরে সরে যায়নি৷''
কল্পনা ও ইতিহাসের মিশ্রণে তৈরি এই উপন্যাসটির দুটি অধ্যায় প্রকাশের পর পাঠকের প্রতিক্রিয়া এবং আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার পর হুমায়ূন আহমেদ তাঁর ‘দেয়াল' বইটির খানিকটা পরিমার্জনা করবেন বলেই আশা করেন ড. মনজুরুল ইসলাম৷
প্রতিবেদন: আফরোজা সোমা
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী