হারলেও সহজে ক্ষমতা ছাড়বেন কি ট্রাম্প?
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০সাংবাদিক সম্মেলনে সরাসরি প্রশ্ন করা হয়েছিল ট্রাম্পকেই। হেরে গেলে আপনি কি শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর করবেন? ট্রাম্পের জবাব, তখন দেখতে হবে কী হয়।
বুধবারই তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ভোটের ফলাফল নিয়ে বিতর্ক সুপ্রিম কোর্টেও যেতে পারে বলে তাঁর বিশ্বাস। কারণ তিনি আগেই পোস্টাল ভোটিং নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। আর করোনার কারণে অ্যামেরিকার ভোটদাতাদের পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেয়ার জন্য উৎসাহিত করছে অধিকাংশ রাজ্য।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাকি আর মাত্র ৪১ দিন। তার মধ্যেই ট্রাম্প এই বোমাটা ফাটিয়েছেন। একটা সন্দেহ তৈরি করে দিয়েছেন ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে, যা হলো, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় মৌলিক বিষয়। ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী ভোটে হেরে গেলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে জয়ী প্রতিদ্বন্দ্বীর জন্য ক্ষমতা ছেড়ে দেন। কিন্তু ট্রাম্প বলেছেন, ''আমি ব্যালট নিয়ে সমানে জোরালো অভিযোগ করছি। আর এই ব্যালটই বিপর্যয়ের কারণ হবে।''
নতুন নয়
ট্রাম্প অবশ্য এই ধরনের কথা ২০১৬ সালেও বলেছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিন্টনের কাছে হেরে গেলে সেই ফল তিনি মেনে নেবেন না। হিলারি বলেছিলেন, ট্রাম্প গণতন্ত্রের মূলে আঘাত করছেন। তবে সেই ভোটে তিনি জিতেছিলেন। তাই তখন আর ফল অস্বীকার করার প্রশ্ন আসেনি।
এখন সেই ট্রাম্প বলছেন, ব্যালটের সমস্যার সমাধান করুন। তা হলে দেখবেন সবকিছু শান্তিপূর্ণভাবে হচ্ছে। ক্ষমতার হস্তান্তর হবে না। কারণ, তিনি হারবেন না।
গত মাসেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন হিলারি ক্লিন্টন। তিনি বলেছিলেন, যদি ব্যবধান কম থাকে তা হলে রিপাবলিকানরা আইনজীবীদের নামিয়ে দেবে ভোটের ফল আদালতে চ্যালেঞ্জ করার জন্য। তাই কোনো পরিস্থিতিতে বাইডেন যেন হার স্বীকার না করেন।
সুপ্রিম কোর্ট নিয়ে ট্রাম্প
ভোটের আগে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগ করা নিয়ে অ্যামেরিকায় প্রবল বিতর্ক চলছে। বাইডেনের দাবি, ট্রাম্প এখন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগের মতো গুরুতর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। ভোটের পর যিনি প্রেসিডেন্ট হবেন, তিনিই এই সিদ্ধান্ত নেবেন।
কিন্তু ট্রাম্প বলেছেন, ভোটের ফলাফল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন হতে পারে। তাই সেখানে নয় জন বিচারপতি থাকা দরকার। ট্রাম্পের সাফ কথা, ডেমোক্র্যাটরা ভোটে একটা কেলেঙ্কারি করবেন। সেই কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টেই আবেদন হবে। তাই সুপ্রিম কোর্টের শূন্য পদে একজন নারী বিচারপতি নিয়োগ করতে বদ্ধপরিকর ট্রাম্প।
ট্রাম্পের আপত্তি পোস্টাল ব্যালট নিয়ে। তিনি সেখানে জালিয়াতির আশঙ্কা করছেন। এ বার করোনার কারণে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেয়ার প্রবণতা বাড়বে। ফেডারেল ইলেকশন কমিশনের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, এই অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। পোস্টাল ব্যালট নিয়ে জালিয়াতির কোনো সম্ভাবনা নেই।
পোস্টাল ব্যালট নিয়ে অভিযোগ যে এর আগে ওঠেনি তা নয়। কিছু রাজ্যে উঠেছে। ২০১৭ সালের একটি সমীক্ষা বলছে, শূন্য দশমিক শূ্ন্য শূন্য শূন্য শূন্য চার থেকে নয় শতাংশ হারে জালিয়াতি হতে পারে, যা ধর্তব্যের মধ্যেই পড়ে না।
জিএইচ/এসজি()এপি, রয়টার্স, এএফপি