1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘হাইব্রিড রেজিমে বাংলাদেশ’

১১ ডিসেম্বর ২০১৯

বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ব্যবস্থাকে হাইব্রিড রেজিম বলছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. আলী রীয়াজ৷

https://p.dw.com/p/3Ua2n
Bangladesch Parlament | Gebäude
ছবি: picture alliance/Bildagentur-online/Tips Images

১৯৯০ সালের পর থেকে এর যাত্রা শুরু হয়ে ২০১৮ সালের নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে এ অবস্থায় পৌঁছেছে বলে ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মত দেন তিনি৷ 

ডয়চে ভেলে: বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থাকে হাইব্রিড রেজিম কেন বলছেন?

আলী রীয়াজ: রাষ্ট্র বিজ্ঞানে হাইব্রিড রেজিম বলতে বোঝায় একটি দো-আঁশলা ব্যবস্থাকে যেখানে গণতন্ত্রের উপাদানগুলো অনুপস্থিত থাকে৷ ১৯৯১ সালের পর বাংলাদেশ গণতন্ত্রের যে প্রতিশ্রুতি ছিল সেগুলো পূরণ হয়নি৷ কখনো বিএনপি, কখনো আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসেছে৷ কিন্তু কী দাঁড়ালো? বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত হচ্ছে না, নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে না, দুর্নীতি দমন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে না৷ ৯১ পররবর্তী সময় থেকেই আমরা এ অবস্থাটি খেয়াল করছি৷ ৯৬ সালে বিএনপি একদলীয় নির্বাচন করলো৷ দেখা গেলো গণতন্ত্রের ইনক্লুসিভনেস এর ধারণাকে সে নিশ্চিত করছে না৷ সৌভাগ্য যে সেটা টেকে নি৷

পরিক্রমায়, ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর একটি অথারিটারিয়ান ইলেকটোরাল সিস্টেমে প্রবেশ করল বাংলাদেশ৷ আর সব মিলিয়ে এটিকে হাইব্রিড রেজিম বলা যায়৷ এ তালিকায় রয়েছে রাশিয়া, তুরস্ক, ভেনিজুয়েলাসহ আরো অনেক দেশ৷

‘অথারিটারিয়ান ইলেকটোরাল সিস্টেমে প্রবেশ করল বাংলাদেশ’

ডয়চে ভেলে: একবছর হলো বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আছে? এ সময়ে জাতীয় সংসদকে কতোটা কার্যকর দেখতে পান?

আলী রীয়াজ: এই সংসদ থেকে আমার কোন প্রত্যাশা নেই৷ কারণ এর নৈতিক বৈধতা নেই৷ ২০১৪ সালেও ছিল না৷ শুধু বিরোধী দল অংশ নেয়নি বলে নয়৷ আপনি হয়তো এর সাংবিধানিক বৈধতা দেখাতে পারেন৷ কিন্তু এর নৈতিক বৈধতা নেই৷ আপনি যদি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় জিতে আসতেন...এমনকি পরাজিত শক্তিরও নৈতিক বৈধতা থাকে যদি স্বচ্ছতার মধ্য দিয়ে নির্বাচন হয়৷

ডয়চে ভেলে: পশ্চিমা বিশ্ব সবসময়ই গণতন্ত্রের কথা বলে৷ আপনি বলছেন বাংলাদেশে গণতন্ত্র উপস্থিত নেই৷ কিন্তু পশ্চিমা সরকারগুলোতো বর্তমান সরকারের সাথে কাজ করে যাচ্ছে? এটা কেন হচ্ছে?

আলী রীয়াজ: পশ্চিমা দেশগুলো এ স্বীকৃতিকে আমি এতোটা গুরুত্ব দেখি না৷ এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যদি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তাহলে আপনি চাপ প্রয়োগ করবেন কীভাবে? সেই স্বার্থেই তারা যোগাযোগ রাখছে৷  যেমন,  মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র  বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন যদি সম্পর্ক নষ্ট করে তাহলে বিশ্বের অনেক দেশের সাথেই তাদের সম্পর্ক নষ্ট হবে৷ সেক্ষেত্রে গণতন্ত্র এ মানবাধিকারের যে মূলনীতি নিয়ে তারা কাজ করতে চায় সেটি নিয়ে আর এগুতে পারবে না৷ 

ডয়চে ভেলে: বাংলাদেশে গনতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় গণমাধ্যম কতোটা শক্তিশালী ভূমিকা রাখেছে বলে আপনি মনে করেন?

আলী রীয়াজ: গণতন্ত্র না থাকলে গণমাধ্যম স্বাধীন থাকবে এটা হয় না৷ আপনি যদি বিরোধী কন্ঠগুলো না রাখেন, শক্তি প্রয়োগকে প্রধান বলে বিবেচনা করেন, বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করেন তাহলে সংবাদপত্র থাকবে, টেলিভিশন থাকবে তারা আবার বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছেন সেটি হবে না৷  অধিকাংশ গণমাধ্যম এখন ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষার বর্ম হিসেবে কাজ করছে৷ যেটি বর্ম সেটি কীভাবে স্বাধীন হয়?

ডয়চে ভেলে: জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে সরকারের ভূমিকাকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন?

আলী রীয়াজ: আপাত দৃষ্টিতে সাফল্য অর্জিত হয়েছে৷ তবে জঙ্গীবাদ থামানো হয়েছে শক্তি প্রয়োগ করে৷ কিন্তু দেখুন, ২০০৭ সালে জেএমবির পুরো নেতৃত্বকে দমন করা হয়েছিল৷ ২০১৬ সালে দেশে আবারো জঙ্গীবাদ দেখা গেল৷ কেন হলো? কারণ সহিংস উগ্রবাদী চিন্তায় কেউ কেউ কেন আকৃষ্ট হয়েছে সে বিষয়ে খুব বেশি আলোচনা হচ্ছে না৷ এ বিষয়গুলোকে চিহ্নিত করে মোকাবেলা করতে হবে৷

ডয়চে ভেলের সাংবাদিক রাহাত রাফি৷
রাহাত রাফি ডয়চে ভেলের সাংবাদিক৷
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য