হতাশা কাটাতে ভূতের দুয়ারে
২৬ আগস্ট ২০২০অন্ধকার একটি ঘরে স্বচ্ছ কাঁচের কফিনে আপনাকে বন্দি করে ফেলা হবে৷ এরপরই শুরু হবে ভয়ংকর সব কাণ্ডকারখানা, যাতে আপনার আত্মা শুকিয়ে যাওয়ার দশা হবে৷ বন্ধ ঘরে ভয়ংকর চিৎকার চলতে থাকবে, ঘুরে বেড়াবে ভৌতিক সব চরিত্র৷ তারা এমনকি কফিন থেকে তুলে নিতে চাইবে আপনাকে৷ মাত্র ১৫ মিনিটের জন্য হলেও সেটি আপনার কাছে অনন্তকাল মনে হতে পারে৷ যেতে চান এমন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে?
করোনার এই সময়ে বাইরের বিনোদন থেকে বঞ্চিত টোকিওবাসী৷ গ্রীষ্ম বিদায় নিতে শুরু করলেও বেড়াতে কিংবা বিনোদন পার্কগুলোতে যাওয়ার সুযোগ এবার মেলেনি৷ সে কারণে অনেকের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা৷ তা থেকে মুক্তি দিতেই এমন অদ্ভুত উপায় বের করেছে একটি প্রতিষ্ঠান৷ বিনা পযসায় নয়, এজন্য আট হাজার ইয়েন বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ছয় হাজার টাকা খরচ করছেন অনেকেই৷
আইডিয়াটি ২৫ বছরের তরুণ কেনটা ইওযানার। তিনি ‘কোয়াগারাসেতাই’ বা ‘আতঙ্ক স্কোয়াড’ নামের কোম্পানিটির প্রতিষ্ঠাতা৷ ডয়চে ভেলেকে ইওয়ানা বলেন, ‘‘মানুষ সাধারণ গ্রীষ্মের ছুটি যেভাবে কাটায় এবার তা সম্ভব হয়নি৷ এ কারণে তারা হতাশা বা বিষন্নতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন৷ বিনোদন পাওয়ার জন্য তারা মরিয়া হয়ে আছেন৷ কিন্তু সেটা সম্ভব হচ্ছে না৷ কারণ থিম পার্কগুলো বন্ধ, এমনকি ভ্রমণে বের হওয়াও সম্ভব নয়৷’’
এর সমাধান হিসেবেই টোকিওর সুনজুকু শহরের দূর পাল্লার বাস টার্মিনালে মানুষকে ভয় দেখানোর এই আয়োজন করেছেন তিনি৷ ইওয়ানার সঙ্গে আছেন আরো দুইজন৷ কারা আসেন সেখানে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘বেশিরভাগই ২০ বছরের তরুণ-তরুণীরা আসে৷ তবে দুইটি পরিবারও এসেছিল৷’’ যারা অভিজ্ঞতা নিয়েছেন টুইটারে তারা নিজেদের অভিজ্ঞতাও জানিয়েছেন৷ যেমন, একজন লিখেছেন, ‘‘খুবই শক্তিশালী ছিল, যেন ফোর ডাইমেনশনের কোন ভৌতিক সিনেমা৷ এই গ্রীষ্মে আমার জন্য সবচেয়ে উপভোগ্য সময় এটা৷’’ তাদের আরেক গ্রাহক লিখেছেন, ‘‘কফিনের ভিতর আটকে থাকা আমি যতটা ভেবেছিলাম তার চেয়েও ভয়ংকর ছিল৷ আর কিছুক্ষণ বেশি হলে আমার জন্য বিপদজনক হতে পারত৷’’
জুলিয়ান রায়াল/এফএস