তুমি মোরে করেছ মহান
২২ আগস্ট ২০১৫৪০ বছর আগে স্বামীর মৃত্যুতে যে ঘরে আঁধার নেমে এসেছিল আজ সেখানে আলো জ্বেলেছেন সুভাসিনী৷ মানব প্রেমের আলো, সেবাপরায়ণতার আলো৷ নিজের স্বামীকে প্রায় বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু বরণ করতে দেখে বুঝেছিলেন দারিদ্র্যের কারণে যথাযথ চিকিৎসা করাতে না পারলে প্রিয়জনের মৃত্যু চেয়ে চেয়ে দেখতে হয়, সে জ্বালা বড় অসহনীয়, সেই দুঃখ অমোচনীয়৷
তবে বড় মনের মানুষ তো ধনে দরিদ্র হলেও, মনে হয় না৷ সুভাসিনী তেমনই এক আকাশের মতো উদার, বৃক্ষের মতো স্নেহপরায়ণ৷ তাই জীবনভর সামান্য টাকা আয় করেছেন, সেই আয় থেকেই সঞ্চয় করেছেন, সেই সঞ্চয়কে পূঁজি করেই স্বপ্ন দেখেছেন...৷ স্বপ্নটা কিন্তু বিশাল৷ সমাজের খুব বড়লোকদেরও এমন স্বপ্ন দেখার মন থাকে না৷ সুভাসিনীর আছে৷ সে কারণেই তাঁর মতো আর কারো স্বামী বা নিকট আত্মীয়কে যেন বিনা চিকিৎসায় মরতে না হয় সে ব্যবস্থা করার ভাবতে পেরেছেন, তিল তিল করে জমানো সঞ্চয় দিয়েই গড়তে পেরেছেন কুঁড়ে ঘর, সেই কুঁড়ে ঘরে আজ গড়ে উঠেছে মানবকল্যাণের হাসপাতাল ‘হিউম্যানিটি হসপিটাল'৷ ‘জীবে প্রেম করে যে-ই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর' – সুভাসিনীর চেয়ে মানবদরদী, সৃষ্টিকর্তাপ্রেমী মানুষ আছে ক'জন!
মারামারি, হানাহানি, ভেদাভেদ কত দেশে কত ঘর শোকের আঁধারে ঢাকে! অন্যদিকে ‘হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বী'-তে সুভাসিনীর মতো মানুষেরা যুগে যুগে আঁধার ঘরে আলো জ্বালতেই উৎসর্গ করেছেন জীবন৷ অনেক অশুভ, অনেক অসুন্দরের পাশেও পৃথিবী তাই এত সুন্দর!