1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যা সর্বনাশ করছে ইন্টারনেটের

২ অক্টোবর ২০১৬

ইরানের পথিকৃৎ ব্লগার হোসেইন দেরাখশান৷ ব্লগিং-এর জন্য তাঁকে ছ'বছর জেলে কাটাতে হয়েছিল৷ জেল থেকে বেরিয়েই তিনি লক্ষ্য করেন কী পরিমাণ অকিঞ্চিতকর হয়ে উঠেছে ইন্টারনেট৷ ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সে কথাই বলেছেন তিনি৷

https://p.dw.com/p/2Qjfu
হোসেইন দেরাখশান
ইরানের পথিকৃৎ ব্লগার হোসেইন দেরাখশানছবি: DW/M. Müller

হোসেইন দেরাখশানের জন্ম ইরানে, ১৯৭৫ সালে৷ ২০০১ সালে তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য যান ক্যানাডার টরন্টোয়৷ সেখান থেকে তিনি হোদার ছদ্মনামে ব্লগ করতে শুরু করেন এবং ফার্সিতে ব্লগ করা সম্বন্ধে একটি গাইডের অনুবাদ করেন – যা থেকে ফার্সি ভাষায় ব্লগিং-এর ধুম শুরু হয়৷ ২০০৪ সালে ব্লগারদের সংখ্যার হিসেবে বিশ্বে ইরানের অবস্থান ছিল পঞ্চম৷

কিন্তু অচিরেই বিপদে পড়তে থাকেন মুক্তমনা ব্লগাররা৷ ২০০৮ সালে দেরাখশানকেও কারারুদ্ধ করে ইরান সরকার৷ দীর্ঘ ছ'বছর পরে তাঁকে অপ্রত্যাশিতভাবে মুক্তি দেওয়া হয়, এবং সেটা নাকি সম্ভব হয় স্বয়ং আয়াতোল্লাহ খামেনেই-এর হস্তক্ষেপে৷ সরকারের সঙ্গে এই যোগাযোগ দেরাখশানকে বিপাকে ফেলে; ইরানের অনলাইন কমিউনিটি তাঁর রাজক্ষমাকে সন্দেহের চোখে দেখে৷

২০১৫ সাল থেকে দেরাখশান তেহরানে বাস করছেন, প্রবন্ধ লিখছেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব ও অনলাইনে রাজনৈতিক বাকবিতণ্ডা, যুক্তিতর্ক, আলাপ-আলোচনা কমে যাওয়া সম্পর্কে বক্তৃতা দিয়ে বেড়াচ্ছেন৷

ডয়চে ভেলে: মিস্টার দেরাখশান, আপনি জেলে থাকাকালীন ছ'বছর অফলাইন ছিলেন৷ সেই সময়ে ইন্টারনেট বিপুলভাবে বদলে গেছে৷ জেল থেকে বেরনোর পর আপনি কী দেখলেন?

হোসেইন দেরাখশান: আমি ইন্টারনেটে একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করি; একটি বিকেন্দ্রিক, বৈচিত্র্যপূর্ণ, লিংক-ভিত্তিক, সংযোগমূলক, কৌতূহলী, বহির্মুখী এবং রচনাকেন্দ্রিক স্পেস থেকে সেটি একটি ইমেজ-কেন্দ্রিক স্পেস হয়ে উঠেছে, যার মূল উপজীব্য আলোচনা, বিতর্ক বা চিন্তাধারা না হয়ে মনোরঞ্জন হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ ইন্টারনেট এখন বেশ কেন্দ্রীভূত ও সোশ্যাল নেটওয়ার্কগুলির দ্বারা প্রভাবিত৷ আগের চেয়ে অনেক কম বৈচিত্র্যপূর্ণ৷ মনোরঞ্জনই এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ৷ রাজনীতি সহ সিরিয়াস কন্টেন্ট কম৷

আপনি যে ব্লগারদের সাথে কাজ করতেন, তাদের কী খবর?

অনেক সাবেক ব্লগার আর অ্যাক্টিভিস্ট এই নতুন ‘স্পেসে' যোগ দিয়েছেন৷ তাঁরা যেন ভুলে গেছেন যে, রাজনীতি তাঁদের জীবনে এককালে একটা বড় ভূমিকা নিয়েছিল৷ এখন তাঁরা সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ছোটখাটো যা কিছু দেখেন, তাই নিয়েই খুশি৷ ক্রমেই আরো কম লোক সিরিয়াস নিউজ বা সিরিয়াস ডিসকাশনে আগ্রহী, বলে আমার ধারণা৷

নব্বই-এর দশকে ইন্টারনেট যখন বেরোয়, তখন তা সিরিয়াস আলাপ-আলোচনা, তর্ক-বিতর্কের জন্য একটা সুযোগ সৃষ্টি করেছিল৷ ২০ বছর পরে এখন সেই সুযোগ অন্তর্হিত হচ্ছে, ইন্টারনেট টেলিভিশনের মতো হয়ে যাচ্ছে৷

সোশ্যাল নেটওয়ার্কগুলি কি কোনো কাজের নয়, বলে আপনি মনে করেন?

কোনো বিশেষ খবর বা ঘটনার প্রতি আবেগ-অনুভূতিগত প্রতিক্রিয়া হিসেবে সোশ্যাল নেটওয়ার্কগুলির উপযোগিতা থাকতে পারে – হয়ত কোনো কোনো ক্ষেত্রে মানুষজনকে পথে বার করে আনতে৷ কিন্তু একজন মিশরী আন্দোলনকারী যেমন বলেছেন: তার ফলে মিশরী বিপ্লবের কোনো সুবিধা হয়নি৷ সোশ্যাল নেটওয়ার্কগুলি জনতাকে ঘর থেকে বার করে এনে তাদের চলতি পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিবাদের কণ্ঠ দিয়েছে, কিন্তু সেটা একটি নেতিবাচক কণ্ঠ; তা থেকে ইতিবাচক কিছু আসেনি৷ সকলে পরস্পরের সঙ্গে মারামারি শুরু করেছে..

কাজেই (সোশ্যাল নেটওয়ার্কগুলি) জনতাকে কোনো কিছুর বিরুদ্ধে সংগঠিত করতে পারে, কিন্তু কোনো ইতিবাচক কাজে তাদের ঐক্যবদ্ধ করতে পারে না, কেননা সোশ্যাল নেটওয়ার্ক নেতৃত্বের বিকল্প হতে পারে না৷

ইরানের পথিকৃৎ ব্লগার হোসেইন দেরাখশানের সাক্ষাৎকারটি আপনার কেমন লাগলো? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

ইউলিয়া হিৎস/এসি

দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান