সেমিফাইনালে কারা যাবে, কারা যাবে না?
২৭ জুন ২০১৯এই প্রশ্নের সহজ কোনো উত্তর নেই৷ মাঠের লড়াইয়ের পাশাপাশি মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ে জেতাটাও এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ৷
নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে হিসেবটা অনেক কঠিন করে তুলেছে পাকিস্তান৷ নিজেদের জন্য সম্ভাবনার দুয়ার তো খুলেছেই সঙ্গে অন্য দলগুলোর দুশ্চিন্তাও বাড়িয়েছে৷ গতকাল থেকে তাই ‘কারা উঠবে' প্রশ্নটা ঘুরছে সব জায়গায়৷
পয়েন্ট তালিকার শেষ তিনটি দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ, সাউথ আফ্রিকা এবং আফগানিস্তানের সেমিফাইনালে ওঠার আর কোনো আশা নেই৷ তবে অন্যের বাড়া ভাতে ছাই দেয়ার সুযোগ আছে তাদের৷ সেটা কারো জন্য বড় আশা, কারো জন্য দুশ্চিন্তা৷
অস্ট্রেলিয়ার সেই দুশ্চিন্তা একেবারেই নেই৷ দুই ম্যাচ হাতে রেখেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়নরা৷ সাত ম্যাচে ছয় জয় এবং এক পরাজয়ে তাদের মোট পয়েন্ট ১২৷ ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের আগে অস্ট্রেলিয়ার ঠিক পরের তিনটি স্থানে রয়েছে নিউজিল্যান্ড, ভারত এবং ইংল্যান্ড৷ এই তিন দলের মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থা ভারতের৷ এখনো পর্যন্ত একমাত্র তারাই কোনো ম্যাচ হারেনি৷ সাতটি করে ম্যাচ খেলে নিউজিল্যান্ড আর ইংল্যান্ডের পয়েন্ট যেখানে ১১ এবং আট, সেখানে পাঁচ ম্যাচে ঝুলিতে নয় পয়েন্ট পুরে ফেলেছে কোহলির দল৷
সেমিফাইনাল নিশ্চিত করার দৌড়ে এই তিন দল, অর্থাৎ নিউজিল্যান্ড, ভারত এবং ইংল্যান্ড বাকি দলগুলোর চেয়ে অবশ্যই খানিকটা এগিয়ে৷ তবে আসর থেকে ছিটকে পড়া কারো জন্যই একেবারে অসম্ভব নয়৷ লিগ পর্বে নিজেদের শেষ দুই ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড৷ দুটো ম্যাচ হারলে দুর্দান্ত শুরুর পরও শেষদিকের ব্যর্থতায় ডুবতে পারে তারা৷
ভারত বাকি চার ম্যাচের তিনটি হারলেও চূর্ণবিচূর্ণ হতে পারে শেষ চারে ওঠার স্বপ্ন৷ ইংল্যান্ডের অবস্থা আরো অনিশ্চিত৷ বিশ্বকাপের আগের অপ্রতিরোধ্য দলটি তিন ম্যাচ হেরে বসে আছে৷ বাকি দুই ম্যাচ ভারত আর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে৷ দুটোই কঠিন ম্যাচ৷ ফলে আগেভাগে বিদায়ঘণ্টা তাদেরও বাজতেই পারে৷
বাংলাদেশ, পাকিস্তান আর শ্রীলঙ্কার আশা সেখানেই৷ নিউজিল্যান্ড, ভারত আর ইংল্যান্ড যত ব্যর্থ হবে, আশা তত বাড়বে তাদের৷ তবে পাশাপাশি বাকি ম্যাচগুলোতে নিজেদের শতভাগ সাফল্য নিশ্চিত করতে হবে সবার আগে৷ তার মানে, বাংলাদেশকে বাকি দুই ম্যাচে ভারত আর পাকিস্তানকে হারাতে হবে৷ আর বাংলাদেশের কাছে হেরে গেলে পাকিস্তানের পক্ষে আর '৯২-র পুনরাবৃত্তি সম্ভব হবে না৷ তাদেরও জিততেই হবে আফগানিস্তান আর বাংলাদেশের বিপক্ষে৷ বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের মধ্যে যে দল বাকি দুই ম্যাচ জিতবে, তাদেরই ৯ ম্যাচে হয়ে যাবে ১১ পয়েন্ট৷ তবে ওই ১১ পয়েন্ট কিন্তু সেমিফাইনাল নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট নয়৷সাউথ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর ভারতকে হারাতে পারলে ৯ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার পয়েন্ট হয়ে যাবে ১২৷ সুতরাং কাকে রাখবেন, কাকে বাদ দেবেন? বিশ্বকাপ তো এখনো সাউথ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর আফগানিস্তান ছাড়া সবার জন্যই উন্মুক্ত!
তাই লড়াইটা হাড্ডাহাড্ডি হবে– এ আশা করতেই পারি৷ অবশ্য বৃষ্টি বাগড়া দিলে অন্য কথা৷ তাহলে আবার বেশ কিছু ‘যদি', ‘কিন্তু' এসে হাজির হবে৷
এ মুহূর্তে একটা ‘যদি' খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ পয়েন্ট যার বেশি হবে সে তো সেমিফাইনালে উঠবেই, কিন্তু যদি পয়েন্ট সমান হয়ে যায়? তাহলে লিগপর্বে যে দল বেশি ম্যাচ জিতেছে তারা অগ্রাধিকার পাবে৷ জয়ও যদি সমান হয় তাহলে দেখা হবে নেট রানরেট৷ তারপরও গেরো না খুললে গুরুত্ব পাবে নিজেদের ম্যাচের (হেড টু হেড) ফলাফল৷ তারপরও ‘যদি' আছে, তবে এত যদিতে না গিয়ে আগে নিজেদের ম্যাচগুলো জেতার কথা ভাবাই ভালো৷ বাংলাদেশের জন্য সেটাই আশা জাগিয়ে রাখার একমাত্র মন্ত্র!