সৌরশক্তির কার্যকর প্রয়োগ
৩০ আগস্ট ২০১৩সূর্য আমাদের আলো ও উত্তাপ দেয়৷ সৌরশক্তি দিয়ে বিদ্যুতও উৎপাদন করা হয়৷ সোলার সেল সৌরশক্তি ধারণ করে৷ তারপর তা বিদ্যুতে পরিণত করে৷
তা সত্ত্বেও প্রায় এক চতুর্থাংশ সৌরশক্তি নষ্ট হয়৷ কারণ সাধারণ সোলার প্যানেল এখনো সূর্যের ইনফ্রারেড রশ্মি ধারণ করতে পারে না৷ ফ্রাউনহোফার ইন্সটিটিউট-এর বিজ্ঞানী স্টেফান কন্টারমান তা বদলাতে চান৷ তিনি বললেন, ‘‘সূর্যের আলোর স্পেকট্রামের মধ্যে ইনফ্রারেড রশ্মিও রয়েছে৷ আমাদের এই সোলার সেল-এর পেছনে কালো সিলিকন বসানো রয়েছে, যা এই রশ্মিকে বিদ্যুতে পরিণত করতে পারে৷''
ফলে নতুন এই প্লান্ট-এর মাধ্যমে সৌরশক্তি থেকে জ্বালানি উৎপাদনের প্রক্রিয়া আরও উন্নত হয়ে উঠবে৷ সাধারণ সোলার সেল-ও সিলিকন দিয়ে তৈরি৷ সেই সিলিকন-এর উপর লেজার প্রয়োগ করলে নতুন ও উন্নত সোলার সেল-এর উপাদান তৈরি করা যায়৷ কন্টারমান আরও জানালেন, ‘‘আমাদের উচ্চশক্তির লেজার পালস উপরের ভাগে পরিবর্তন আনে৷ তারপর সেই রুক্ষ সারফেস-এর উপর সূক্ষ্ম চোঙার মতো কাঠামো তৈরি হয়৷ ফলে প্রায় কোনো প্রতিফলন ছাড়াই আরও অনেক বেশি আলো ধরা পড়ে৷ খালি চোখে দেখলে তখন সেটা কালো মনে হয়৷''
অর্থাৎ কৃত্রিমভাবে তৈরি এই রুক্ষ সারফেস জ্বালানির অপচয় হতে দেয় না, আরও বেশি জ্বালানি ধারণ করে৷ কন্টারমান-এর মতে, ‘‘এটা একটা সিলিকন চাকতি, যার উপরটা পালিশ করা৷ তার উপর আমরা লেজার দিয়ে তিনটি অক্ষর খোদাই করেছি৷ এই কালো সিলিকন এবার আমার হাতের উত্তাপ শুষে নিচ্ছে৷ ইনফ্রারেড ক্যামেরার সামনে ‘ওয়েভার' রাখলে আমার হাতের উত্তাপ তার মধ্য দিয়ে গলে যাবে৷ কিন্তু যেখানে লেজারের ছোঁয়া পড়েছে, সেখানে কিন্তু উত্তাপ জমা থাকবে৷''
পরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, যেখানেই কালো সিলিকন রয়েছে, সেখানে সোলার সেল ইনফ্রারেড রশ্মি শুষে নিচ্ছে৷ ডান দিকের ল্যাম্প সাধারণ আলো তৈরি করছে, বামের ল্যাম্প ইনফ্রারেড রশ্মি বিকিরণ করছে৷ সেই বিদ্যুতই চাকাটিকে ঘোরাচ্ছে৷
এর ফলে সৌরবিদ্যুৎ শিল্পে নতুন জোয়ার আসতে চলেছে৷ অনেক কোম্পানি এখনই কালো সিলিকন-এর এই নতুন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করছে৷ এমনকি সূর্যের আলো ছাড়াই সেগুলি কাজ করতে পারে৷ কন্টারমান বললেন, ‘‘ইনফ্রারেড রশ্মি খালি চোখে দেখা যায় না৷ তাই ঘর অন্ধকার থাকলেও এই উত্তাপ কাজে লাগানো যায়, বিদ্যুতে রূপান্তরিত করা যায়৷''
বড় যন্ত্র বা কারখানাও ইনফ্রারেড রশ্মির উৎস হতে পারে৷ বছর দেড়েকের মধ্যেই হাইনরিশ হ্যারৎস ইন্সটিটিউটের সোলার সেল বাজারে আসবে৷ ফলে গোটা বিশ্বে বিকল্প জ্বালানি উৎপাদনে বিপ্লব আসতে চলেছে৷