নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা
১৮ নভেম্বর ২০১৩
বিকেলে বঙ্গভবনে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির রওশন এরশাদ, রহুল আমিন হাওলাদার ও আনিসুল ইসলাম মাহমুদ৷ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন জাতীয় পার্টির সালমা ইসলাম ও মুজিবুল হক চুন্নু৷ এছাড়া জাতীয় পার্টির জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে মন্ত্রীর পদ মর্যাদায় উপদেষ্টা নিয়োগ করা হয়েছে৷
শপথ নেয়ার পর বঙ্গভবনে মন্ত্রীরা বর্তমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে তাঁদের ভূমিকা রাখার কথা বলেছেন৷ তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতেই মন্ত্রীত্ব নিয়েছেন তিনি৷ তাঁর কথায়, বিএনপি চাইলে এখনও সর্বদলীয় সরকারে যোগ দিতে পারে৷ এখনও প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ বহাল আছে৷
রাশেদ খান মেনন বলেন, এবার তাঁদের মন্ত্রীত্ব মন্ত্রণালয় চালানোর জন্য নয়৷ এবার তাঁরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সহায়তা করার দায়িত্ব পেয়েছেন৷ তিনি বলেন, এই সর্বদলীয় মন্ত্রিসভা সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সফল হবে৷
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, এখন দেশ একটি কঠিন সময় পার করছে৷ এই সংকটকে মোকাবেলা করাই তাঁদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন তিনি৷ তিনি জানান, জানুয়ারির প্রথম দিকেই নির্বাচন হবে৷ আর তাঁদের কাজ হবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করা৷ আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, সর্বদলীয় সরকারে বিএনপিকে যোগ দিতে নতুন করে আমন্ত্রণ জানানোর দরকার নেই৷ তাদের আগেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে৷
নতুন মন্ত্রীদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ ছাড়াও মন্ত্রিসভার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন৷ শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ৷
সর্বদলীয় মন্ত্রিসভায় পুরনো মন্ত্রিসভা থেকে আরো অন্তত ১২ থেকে ১৪ জন মন্ত্রী অন্তর্ভুক্ত হবেন৷ তবে তাঁদের নতুন করে শপথ নিতে হবে না৷
এদিকে বিএনপি সর্বদলীয় মন্ত্রিসভায় অংশ নেয়ায় বিরত থেকে, মন্ত্রিসভাকে তামাশা হিসেবে অভিহিত করে একে মহাজোট সরকারের বর্ধিত মন্ত্রিসভা বলেছে৷ শুধু তাই নয়, এর প্রতিবাদে সারা দেশে কালো পতাকা নিয়ে মিছিলও করেছে তারা৷ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হান্নান শাহ ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, বিএনপিকো সর্বদলীয় মন্ত্রিসভায় যোগ দিতে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি৷ সরকার চায় একটি একদলীয় নির্বাচন৷ আর তারা সে দিকেই যাচ্ছে৷ কিন্তু এই নির্বাচন প্রতিহত করা হবে৷
তবে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দাবি করেছেন, বিরোধী দল বিএনপির সঙ্গে নেপথ্যে এখনও যোগাযোগ করা হচ্ছে৷ তারা চাইলে সর্বদলীয় সরকারে যোগ দিতে পারে৷
অন্যদিকে মন্ত্রীরা শপথ নেয়ার পর বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের সাক্ষাত্ চেয়েছেন৷ একথা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শমসের মবিন চৌধুরী৷ জানা গেছে, চলমান রাজনৈতিক সংকট নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা বলতে চান খালেদা জিয়া৷ বিএনপির নির্দলীয় সরকারের দাবি উপেক্ষা করে সর্বদলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করার উদ্দেশ্য নিয়ে সরকার এগিয়ে যাওয়ায়, সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চাইতে পারেন বিএনপি চেয়ারপার্সন৷ শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খালেদা জিয়াকে বঙ্গভবনে সাক্ষাতের সময় দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি৷