পুটিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান ম্যার্কেল
১৮ এপ্রিল ২০১৮মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে ম্যার্কেল বলেছেন, ‘‘সিরিয়া সংকট নিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব ও রাশিয়ার মধ্যে যে উত্তেজনা বিরাজ করছে, সেসব নিয়ে আলোচনা করতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গে তাঁর দেখা হওয়া উচিত৷ রাশিয়া যেহেতু আসাদ সরকারের সহযোগী, তাই রাসায়নিক হামলার জন্য তারা উভয়ই দায়ী৷'' তবে তাঁর এই মন্তব্যের আগে দুই দেশের নেতারা নিজেদের মধ্যে ফোনালাপ করেছেন৷
অন্যদিকে, এই ফোনালাপ নিয়ে ক্রেমলিন তাদের বিবৃতিতে সম্ভাব্য বৈঠক সম্পর্কে কোনো আভাস দেয়নি৷ তবে এতে বলা হয়েছে, ‘‘যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য যে বিমান হামলা চালাচ্ছে, তাতে সিরিয়ায় শান্তি প্রক্রিয়া হুমকির মুখে পড়বে৷ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, কেননা, এই হামলা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন৷''
ওপিসিডাব্লিউ'র বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ভুয়া খবর
সিরিয়ার যেসব স্থানে রাসায়নিক অস্ত্র হামলা হয়েছে বলেঅভিযোগ রয়েছে, সেসব স্থানে রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ সংগঠন বা ওপিসিডাব্লিউ'র বিশেষজ্ঞরা এরই মধ্যে পরিদর্শন করছেন বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা৷ তবে জাতিসংঘে নিযুক্ত সিরিয়ার দূত বাশার জাফারির দাবি, ঐ এলাকায় কেবল জাতিসংঘ নিরাপত্তা সংস্থার একটি দল প্রবেশ করেছে৷ মঙ্গলবার নিরাপত্তা পরিষদে ঐ দূত বলেন, দুমার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছে দলটি৷ তারা প্রথমে এলাকাটি ওপিসিডাব্লিউ'র বিশেষজ্ঞদের জন্য নিরাপদ কিনা তা দেখছেন৷ জাফারি বলেন, ‘‘জাতিসংঘের দলটি ঐ এলাকা পরিদর্শনের পর সবুজ সংকেত দিয়েছে৷ তাই বুধবার, অর্থাৎ, আজই ঐ এলাকা পরিদর্শনে যেতে পারেন ওপিসিডাব্লিউ'র বিশেষজ্ঞরা৷' অথচ মঙ্গলবার সকালেই সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম প্রচার করে যে, ওপিসিডাব্লিউ'র বিশেষজ্ঞরা দুমায় প্রবেশ করেছেন৷
পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, এই খবর একেবারেই মিথ্যা৷ মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, ৭ এপ্রিল দুমার যেসব এলাকায় রাসায়নিক অস্ত্র হামলা চালানোর অভিযোগ আছে, সেসব এলাকায় ওপিসিডাব্লিউ'র বিশেষজ্ঞরা এখনো প্রবেশ করেনি৷ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কূটনৈতিক প্রতিনিধি এ খবর নিশ্চিত করেছেন৷ যদিও গত সপ্তাহেই সিরিয়ায় পৌঁছেছে বিশেষজ্ঞ দলটি৷ তবে, ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আশঙ্কা এই এলাকাটি পরিদর্শনে বিলম্ব হওয়াতে হামলার অনেক তথ্য-প্রমাণ নিশ্চিহ্ন করা হতে পারে৷ কেননা, এলাকাটির নিয়ন্ত্রণ সিরিয়া সরকার এবং রাশিয়ার সেনাবাহিনীর হাতে রয়েছে৷
লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশের উপর বিষক্রিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আলাসতাইর হে ওপিসিডাব্লিউ'র বিশেষজ্ঞদের তদন্ত প্রসঙ্গে ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘তদন্তকারীদের উচিত হামলার শিকার ব্যক্তি এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলা৷ এর ফলে পুরো ঘটনার একটা চিত্র পাবেন তাঁরা৷ এছাড়া যেসব এলাকায় হামলা হয়েছে, সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে পারেন, যার মাধ্যমে জানতে পারবেন কোথায় কোথায় হামলা চালানো হয়েছে এবং এখনো কোনো রাসায়নিক পদার্থ সেখানে আছে কিনা৷ রাসায়নিক অস্ত্রের কারণে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পরীক্ষা করা যেতে পারে৷ ''
রাসায়নিক হামলার পর নিহতদেরবেশ কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে৷ সেসব দেখে স্তব্ধ হয়ে পড়ে পুরো বিশ্ব৷ এর ফলশ্রুতিতে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য এ সপ্তাহে একযোগে হামলা চালায় সিরিয়ার সামরিক ঘাঁটিগুলোতে৷
এপিবি/এসিবি (এপি, এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)