সিরিয়ায় সত্যি হামলা চালাবেন ট্রাম্প?
১২ এপ্রিল ২০১৮বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়াকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ওয়াশিংটন শীঘ্রই সিরিয়ার উপর সামরিক হামলা চালাবে৷ বাশার আল আসাদ প্রশাসনকে সমর্থনের জন্য তিনি মস্কোর সমালোচনা করেন৷
ট্রাম্প যথারীতি টুইটারের মাধ্যমে সিরিয়ার সাম্প্রতিক ঘটনাবলি সম্পর্কে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান৷ নিরীহ মানুষের উপর সম্ভাব্য রাসায়নিক হামলার জন্য তিনি বাশার আল-আসাদ ও তাদের মদতদাতা দেশ রাশিয়ার তীব্র সমালোচনা করেন৷ সিরিয়ায় ‘সুন্দর, নতুন ও স্মার্ট ক্ষেপণাস্ত্র আসছে' বলে প্রচ্ছন্ন হুমকিও দিয়েছেন তিনি৷
উল্লেখ্য, রাশিয়া এর আগে ওয়াশিংটনকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিল, সিরিয়ায় মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে সেগুলি ধ্বংস করে দেওয়া হবে এবং যে স্থান থেকে সেই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হবে, তার উপর হামলা চালানো হবে৷
হোয়াইট হাউস অবশ্য স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মোটেই টুইটারের মাধ্যমে সামরিক হামলার পরিকল্পনা প্রকাশ করেননি৷ এমন হামলার জন্য এখনো কোনো নির্দিষ্ট সময়সূচি স্থির করা হয়নি৷ প্রতিক্রিয়ার সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখে তারপরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিম ম্যাটিস-ও সংযম প্রকাশ করে বলেছেন, বিভিন্ন সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ আসাদ প্রশাসন রাসায়নিক হামলা চালিয়েছে, এমন অভিযোগের সপক্ষে প্রমাণ সংগ্রহেরও কাজ চলছে৷
ট্রাম্পের বার্তার পর রাশিয়াও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে৷ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘স্মার্ট' ক্ষেপণাস্ত্র সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা উচিত – কোনো বৈধ সরকারের উপর নয়৷ রাশিয়ার সেনাবাহিনীর ধারণা, ঝুঁকি এড়াতে ওয়াশিংটন সম্ভবত নৌবাহিনীর মাধ্যমে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করবে৷ কারণ বিমান হামলা চালালে রাশিয়া ও সিরিয়া পালটা হামলা চালাতে পারে৷ ভূমধ্যসাগরে ইউএসএস ডোনাল্ড কুক নামের রণতরি থেকেই মার্কিন হামলার আশঙ্কা করছে মস্কো৷
বাশার আল-আসাদ প্রশাসনও ট্রাম্পের হুমকির কড়া সমালোচনা করেছে৷ বর্তমান সংকটে কিছু বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে সমর্থন ও মদত দেবার কারণে সিরিয়া অ্যামেরিকার সমালোচনা করে এসেছে৷ সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, এমন প্রেক্ষাপটে ‘সন্ত্রাসবাদীদের স্পনসর' হিসেবে ওয়াশিংটনের রণহুঙ্কার মোটেই বিস্ময়ের কারণ নয়৷
সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগেরঅভিযোগের ফলে ইউরোপেও অনেক দেশ বিচলিত৷ আসাদ প্রশাসনই এমন জঘন্য হামলার জন্য দায়ী বলে মনে করছে ব্রিটেন ও ফ্রান্স৷ এই দুই দেশও সিরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে৷ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে সিরিয়া পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন৷ বৃহস্পতিবারই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে সিরিয়ার বিষয়ে আলোচনা হবে৷ সিরিয়ার উপর সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কায় বেসামরিক বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে৷
এসবি/ডিজি (রয়টার্স, এএফপি)