সিরিয়া সংঘাত
২৪ মার্চ ২০১২মধ্য সিরিয়ার হোমস শহরটি আসাদ প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের মূল কেন্দ্র৷ সেখানে রাউন্ডের পর রাউন্ড মর্টারের গোলা এসে পড়েছে ভোররাত থেকে৷ কাছের কুসেইর শহরটিরও এক দশা৷ এখানে সব মিলিয়ে সাত জন মানুষের নিহত হওয়ার কথা বলেছে সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস৷ সারা দেশ থেকে অন্তত ১৪ জনের নিহত হবার কথা শোনা গেছে শনিবার৷ তাদের মধ্যে চারজন নাকি সরকারি সৈন্য৷
হামাতেও প্রায় দু'সপ্তাহ ধরে অভিযান চালাচ্ছে আসাদের সেনাবাহিনী৷ প্রদেশটি মধ্য সিরিয়ায়৷ এখানে কালাত-আল-মাদিক শহরটি জয় করার চেষ্টা করছে সেনারা৷ সেখানেও শনিবার মর্টারের গোলাবর্ষণ এবং মেশিনগানের গুলি চলেছে৷ ওদিকে খফার সুজা জেলায় এবং আলেপ্পোতে আসাদ বিরোধীদের বিক্ষোভের ছবি দেখা গেছে ইউ-টিউবে৷ রাজধানী দামেস্কেরও কিছু এলাকায় নাকি তীব্র সংঘর্ষ চলেছে, বলে জানিয়েছেন বিরোধীরা৷
জাতিসংঘের প্রাক্তন মহাসচিব এবং বর্তমানে জাতিসংঘ তথা আরব লিগের দূত কোফি আন্নানের মস্কো যাবার উদ্দেশ্য সম্ভবত এই যে, তিনি যাচাই করতে চান, রাশিয়া তার গুরুত্বপূর্ণ আরব মিত্র সিরিয়ার উপর কতোটা চাপ দিতে রাজি৷ জাতিসংঘ আসাদ প্রশাসনের প্রতি বিক্ষোভের শহরগুলো থেকে সৈন্য সরিয়ে নেওয়ার ডাক দিয়েছে৷ রাশিয়া যে সেই ডাকে যোগ দিয়েছে, সেটাই একটা প্রগতি৷ আন্নান আগামীকাল রবিবার রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে মিলিত হবেন৷ তিনি তার সাথে যে শান্তি পরিকল্পনাটি নিয়ে মস্কোয় এসেছেন, তা অনুযায়ী সিরিয়ায় প্রতিনিধিত্বমূলক সরকারের দিকে একটি - আন্নানের ভাষায় - ‘‘রাজনৈতিক উত্তরণ'' শুরু হতে পারবে৷ তবে সেই উত্তরণে আসাদের কি ভূমিকা থাকবে অথবা হবে, সে ব্যাপারটা খোলাই রাখা হয়েছে৷
ক্রেমলিন শনিবার একটি বিবৃতিতে বলছে যে, ‘‘রাশিয়া সিরিয়ায় অবিলম্বে হিংসাবসানকে অগ্রাধিকার দেয়৷'' রাশিয়ার মতে প্রধান কাজ হল, সিরিয়ার বিরোধীপক্ষকে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গোলটেবিলে বসে আলোচনায় রাজি করানো, যাতে সংকটের একটা শান্তিপূর্ণ সমাধান হতে পারে৷ অথচ বাস্তবে সিরিয়ায় যা ঘটছে, তা সেই গোলটেবিল থেকে এতোই দূরে যে, রাশিয়াকেও হয়তো শেষমেষ স্বীকার করতে হবে যে, আসাদের বিদায় ছাড়া অন্য কোনো পথ কিংবা পন্থা নেই৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: জাহিদুল হক