সিরিয়ায় হামলা
২৬ মে ২০১২প্রায় ছয় সপ্তাহ আগে সিরিয়ায় সহিংসতা বন্ধে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল সেখানে পর্যবেক্ষণ শুরু করার পর থেকে শনিবারই সবচেয়ে নির্মম হত্যাযজ্ঞ ঘটল৷ স্থানীয় বাসিন্দা ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, শনিবার ভোরে হাওলা শহরে প্রথমে গোলা হামলা চালানো হয়৷ এতে ১২ জন নিহত হয়৷ এরপরই ‘শাবিহা' নামে পরিচিত সরকারের বিশেষ বাহিনী স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালায়৷ তারা নির্বিচারে নারী-পুরুষ ও শিশুদের গুলি করতে থাকে৷ ইউটিউবে প্রকাশিত কিছু ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, বেশ কিছু শিশুর ক্ষত-বিক্ষত দেহ এবং সারিবদ্ধভাবে শুইয়ে রাখা নিহত শিশুদের লাশ৷
হাওলা শহরের সাধারণ মানুষের উপর এমন নৃশংস হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ৷ ইদলিব প্রদেশের কফার্নাবেল শহরের নারী-পুরুষ নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পথে নেমে আসে৷ তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং হত্যাযজ্ঞ বন্ধে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর হস্তক্ষেপের দাবি জানান৷ এছাড়া সম্প্রতি সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক দূত কোফি আনানের প্রস্তাবিত অস্ত্র বিরতি পরিকল্পনা সত্ত্বেও এমন হত্যাযজ্ঞ ঘটায় জাতিসংঘ ও কোফি আনানকে এজন্য দায়ী করেন বিক্ষোভকারী সাধারণ জনতা৷
হাওলা শহরে এমন গণহত্যার প্রেক্ষিতে আবারও সিরিয়ার মিত্র দেশগুলোর জরুরি বৈঠক আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছে ফ্রি সিরিয়া আর্মি - এফএসএ৷ এছাড়া বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর সর্বোচ্চ সংঘ সিরীয় জাতীয় পরিষদ এসএনসি এই গণহত্যার ঘটনা খতিয়ে দেখতে এবং এ প্রেক্ষিতে করণীয় ঠিক করতে দ্রুত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছে৷ আর সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস এমন নৃশংস গণহত্যার জন্য আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর নিশ্চুপ থাকাকে দায়ী করেছে৷
এফএসএ'র দাবির সাথে একমত পোষণ করে বিবৃতি এসেছে ফ্রান্স থেকে৷ ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রী লরঁ ফাবিউ হাওলা শহরের গণহত্যার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, তিনি দ্রুত প্যারিসে সিরিয়ার মিত্র দেশগুলোর জরুরি বৈঠক ডাকার ব্যবস্থা করছেন৷ এছাড়া শনিবারের হত্যাযজ্ঞ খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে হাওলার পার্শ্ববর্তী তালদাও গ্রামে গেছেন জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক দল৷ তবে হাওলায় গণহত্যার জন্য বরাবরের মতোই সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীদের দায়ী করেছে দেশটির সরকার৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই (রয়টার্স, এএফপি, এপি)
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়