সিরিয়ার সঙ্গে আরও সংঘাতের পথে অ্যামেরিকা, ফ্রান্স
১২ জুলাই ২০১১সোমবার আসাদপন্থী জনতা দামেস্কে মার্কিন ও ফরাসি দূতাবাসের উপর হামলা চালায়৷ মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট ফোর্ড ও ফরাসি রাষ্ট্রদূত এরিক শেভালিয়ে হামা শহরে গিয়ে সরকার-বিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংহতি দেখানোর প্রতিবাদে আসাদপন্থীরা এই প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন ও ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রঁসোয়া ফিয়ঁ এপর্যন্ত সবচেয়ে কড়া ভাষায় এই হামলার নিন্দা করেছেন৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র প্রধান ক্যাথরিন অ্যাশটনের সঙ্গে আলোচনার পর ক্লিন্টন বলেন, ‘‘আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলে আসাদের আর কোনো বৈধতা নেই৷ তিনি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা তিনি পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন৷ নিজের দেশের মানুষের নিপীড়নের লক্ষ্যে তিনি ইরানের কাছে সহায়তা চেয়েছেন এবং তা গ্রহণও করেছেন৷ ফলে আসাদ আর অপরিহার্য নয়৷'' ফ্রান্স জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে সিরিয়ায় গত দুই দিনের ঘটনাবলী নিয়ে আলোচনা করার উদ্যোগ নিচ্ছে৷ ফিয়ঁ বলেছেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট আসাদ এবার সীমা ছাড়িয়ে গেছেন৷ নিরাপত্তা পরিষদের নীরবতা অসহনীয় হয়ে উঠছে৷''
সিরিয়ার প্রতিক্রিয়া
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা সঙ্গে সঙ্গে ক্লিন্টনের বক্তব্যের নিন্দা করে বলেছে, প্ররোচনামূলক এই বক্তব্যের উদ্দেশ্যই হলো সিরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা জিইয়ে রাখা৷ ওয়াশিংটন যে খোলাখুলি সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে চলেছে, এই বিবৃতি তার আরও একটা প্রমাণ৷ সিরিয়ার মানুষই দেশের নেতৃত্বের বৈধতা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে, অ্যামেরিকা বা অন্য কোনো দেশের এবিষয়ে কথা বলার অধিকার নেই৷
অসহায় পশ্চিমা বিশ্ব
এখনো পর্যন্ত আসাদ প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিদের উপর কিছু নিষেধাজ্ঞা চাপানো ছাড়া অন্য কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না অ্যামেরিকা, ফ্রান্স বা অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলি৷ রাশিয়া ও চীনের বিরোধিতার ফলে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেও সিরিয়ার বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর প্রস্তাব আনতে পারছে না তারা৷ তবে এই প্রথম মার্কিন প্রশাসন সরাসরি আসাদকে ক্ষমতা ছেড়ে চলে যাবার ডাক দিল৷ এদিকে সিরিয়ার গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার ফেসবুকে আসাদকে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতে পেশ করার ডাক দেওয়া হয়েছে৷ আদালত সত্যি এমন উদ্যোগ নিলে আসাদ বেশ কোণঠাসা হয়ে পড়বেন, এবিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক