দ্বন্দ্ব অবসানের হাতিয়ার!
২ জুলাই ২০১৪তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে তথ্য নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতিতে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলির ভূমিকা৷ মঙ্গলবার সকালে বক্তব্যের প্রথমেই ইউক্রেন সংকটের প্রসঙ্গ তোলেন স্টাইনমায়ার৷ বলেন, জার্মানি এই সংকট সমাধানে কাজ করে যাচ্ছে৷ দু'দেশের সাথেই চলছে আলোচনা৷ তবে পরিস্থিতি খুব জটিল দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷ ইউক্রেন প্রসঙ্গে জার্মান পুনরেকত্রীকরণের বিষয়টির উল্লেখ করেন স্টাইনমায়ার৷
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘অনেক সময় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম, যেমন ফেসবুক-টুইটারের উপর নির্ভর করে তথ্য যাচাই না করেই সাংবাদিকরা সংবাদ পরিবেশন করেন, যা একেবারেই কাম্য নয়৷'' এ প্রসঙ্গে তিনি ইউক্রেন নিয়ে ফেসবুকে তাঁর একটি ‘স্ট্যাটাস' প্রসঙ্গে বলেন, সেখানে তাঁর লেখা পড়ে অনেকেই তাঁকে ইউক্রেনের সমর্থক বলে সম্বোধন করেছেন৷
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলির সবচেয়ে বড় নেতিবাচক দিক হিসেবে এটাকেই উল্লেখ করেছেন স্টাইনমায়ার৷ বলেছেন, ‘‘ফেসবুকে কোনো একটি মন্তব্য লেখা হলে সেটাকে কেউ নিরপেক্ষভাবে দেখেন না৷ ব্যক্তিকে কোনো একটি দলে অন্তর্ভুক্ত করে ফেলেন জনগণ, যা আসলেই নেতিবাচক৷''
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের ইতিবাচক দিক প্রসঙ্গে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘সিরিয়া, ইরাক ও ইউক্রেনে যা ঘটছে তার ছবি ফেসবুক বা টুইটারে দেখে আমরা ঘটনাগুলো সম্পর্কে জানতে পারছি৷ কিন্তু এটাও ঠিক যে, এমন কিছু ছবি বা তথ্য এখানে আপলোড করা হয়, যা থেকে সহিংসতার সৃষ্টি হয়৷
স্টাইনমায়ার বলেন, ‘‘পররাষ্ট্রনীতি মানেই কোনো একটি মত জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়া নয়, বরং জনগণের সাথে নীতি নির্ধারকদের মতবিনিময়ের মাধ্যমে করণীয় ঠিক কী – সেটা নির্দিষ্ট করা৷ তাঁর মতে, পররাষ্ট্র নীতি বদলাচ্ছে, এমনকি দেশে দেশে সংঘাত ও দ্বন্দ্বের ধরণেও পরিবর্তন এসেছে৷ তাই স্টাইনমায়ারের কথায়, অনলাইন মিডিয়ার কাজ হওয়া উচিত বাস্তব ঘটনাকে তুলে ধরে এমনভাবে উপস্থাপন করা, যাতে সহিংসতার বদলে তা দ্বন্দ্বের অবসান ঘটায়৷
এরপর তথ্য নিরাপত্তা নিয়েও কথা বলেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ বলেন, ‘‘বর্তমানে কোটি কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে৷ ফলে বিপুল পরিমাণ তথ্য বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে পৌঁছে যাচ্ছে এবং তথ্যের গোপনীয়তা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে৷ প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের এনএসএ এবং স্নোডেনের কথা উল্লেখ করে স্টাইনমায়ার বলেন যে, হোয়াইট হাউজের সাথেও তাদের কথা হচ্ছে যাতে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আন্তর্জাতিকভাবে কোনো আইন করা হয়৷
গ্লোবাল মিডিয়া ফোরামের এই অনুষ্ঠানকে ‘ভালো আয়োজন' বলে মন্তব্য করে স্টাইনমায়ার বলেন, ‘‘এই অনুষ্ঠানের ফলে নানা দেশের মানুষ যেমন তাঁদের তথ্য বিনিময় করতে পারছেন, তেমনি অনেক দেশের সাংবাদিকরাও তাঁদের মত বিনিময়ের সুযোগ পাচ্ছেন৷''
তাই নিজ বক্তব্যে বর্তমান যুগকে ‘ক্লিক' যুগ বলে অভিহিত করেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাংক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার৷ বলা বাহুল্য, অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের সাথে উপস্থিত ছিলেন ডয়চে ভেলের মহাপরিচালক পেটার লিমবুর্গ৷
অমৃতা পারভেজ
দেবারতি গুহ