নাৎসি সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ঘটনাটা ঘটে ১৯৪৪ সালে, মে থেকে জুলাই মাসের মধ্যে৷ হাঙ্গেরি থেকে অন্তত ৪ লাখ ২৫ হাজার ইহুদিকে পোল্যান্ডের কুখ্যাত সেই কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায় নাৎসিরা৷ সাবেক নাৎসি সদস্য অস্কার গ্র্যোনিং এ কাজে সাহায্য করেছিলেন বলে অভিযোগে৷ জানা গেছে, এঁদের মধ্যে ৩ লাখ মানুষকে গ্যাস চেম্বারে নিয়ে হত্যা করা হয়, অর্থাৎ হলোকস্ট বা ইহুদি নিধনযজ্ঞের বলি হন তাঁরা৷
হানোফারের উত্তরাঞ্চলের একটি শহরে অস্কার গ্র্যোনিং-এর বিচার কাজ চলছে৷ সেখানে সরকার পক্ষের আইনজীবীরা বলেন, অস্কারের প্রধান কাজ ছিল যাঁদের হত্যা করা হয় তাঁদের সব জিনিস সরিয়ে রাখা, যাতে নতুন বন্দিদের তা চোখে না পড়ে৷ এছাড়া বন্দিদের কাছে থাকা অর্থ ও অন্যান্য জিনিস সংগ্রহ করে তা বার্লিনে নাৎসি কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোও ছিল তাঁর অন্যতম কাজ৷
আইনজীবীরা আরো বলেন, অস্কার গ্যাস চেম্বারে ঐ নীরিহ মানুষদের হত্যার ব্যাপারে অবগত ছিলেন৷ তাই স্থানীয় আদালত এখন সিদ্ধান্ত নেবে তাঁর বিরুদ্ধে বিচারকাজ শুরু হবে কিনা৷
জার্মানির যে অফিস নাৎসিদের হত্যাযুদ্ধ বা ইহুদি নিধনযজ্ঞ নিয়ে তদন্ত করছে, সেই অফিস গত বছর ৩০ জন সাবেক নাৎসি সদস্যকে সমন পাঠিয়েছিল৷ এঁদের ৩০ জনই নাকি আউশভিৎসের মৃত্যু শিবিরে কাজ করতেন৷
গত ৬০ বছর ধরে জার্মানির আদালতগুলো নাৎসি নৃশংসতার সাথে এই ব্যাক্তিরা সরাসরি জড়িত কিনা –তার তথ্য-প্রমাণ নিয়ে ঘাটাঘাটি করছে৷ তবে ২০১১ সালে নাৎসি ক্যাম্পগার্ড ইয়ন ডেমইয়ানইয়ুককে
পোল্যান্ডের অপর এক বন্দি শিবির সোবিবরে ২৭,৯০০ ইহুদির হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করার জন্য মাত্র পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় মিউনিখ আদালত৷
আউশভিৎস ‘ডেথ ক্যাম্পে' প্রায় ১১ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, যাঁদের বেশিরভাগই ছিলেন ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ইহুদি সম্প্রদায়ের মানুষ৷ এছাড়া ঐ ক্যাম্পে পোলিশ, রোমা, সোভিয়েত যুদ্ধবন্দি ছিলেন, যাঁদের সকলকেই হত্যা করা হয়৷ ১৯৪০ সাল থেকে ১৯৪৫ সালের ২৭শে জানুয়ারি পর্যন্ত ঐ ক্যাম্পে হত্যাযজ্ঞ চলে৷
উল্লেখ্য, ক্ষমতায় আসার কিছুদিনের মধ্যেই নাৎসিদের স্বরূপ স্পষ্ট হতে শুরু করে৷ বিশেষ করে ইহুদি-বিদ্বেষ ধাপে ধাপে মারাত্মক রূপ নেয়, যার পরিণতি সুপরিকল্পিত ইহুদি নিধনযজ্ঞে, যার ফলে প্রায় ৬০ লক্ষ মানুষকে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে বা অন্যভাবে খুন করা হয়৷
এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, ডিপিএ)