সাংবাদিকদের নতুন আন্দোলন
২৫ মার্চ ২০১৩সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার-মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবিতে গত এগারোই মার্চ বাংলাদেশের সব ধরনের সংবাদ মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা ধর্মঘট হওয়ার কথা ছিল৷ এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল এক মাস আগে৷ কিন্তু পাঁচই ফেব্রুয়ারি থেকে শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চ এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে চলমান আন্দোলন নিয়ে সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারা দুই মেরুতে আবস্থান নেন৷ তার প্রভাব পড়ে সাগর-রুনির হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে চলমান ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে৷ এই আন্দোলন চালিয়ে আসছিল বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, জাতীয় প্রেসক্লাব এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ঐক্যবদ্ধভাবে৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঐক্য ভেঙ্গে যাওয়ায় এগারোই মার্চে সংবাদ মাধ্যমে ধর্মঘটের কর্মসূচি আর কার্যকর হয়নি৷ নতুন কোন কর্মসূচিও দেয়া হয়নি৷ যা মেনে নিতে পারেনি পেশাদার রিপোর্টারদের সংগঠন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি৷
ইউনিটির সভাপতি শাহেদ চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে জানান, কে আন্দোলনে থাকল আর না থাকল তা দেখার সময় নেই৷ সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন৷ এই কারণেই তাঁরা ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি চত্বরে সোমবারের সমাবেশ ডেকেছেন৷ সাংবাদিক ইউনিয়নে নানা বিভক্তি থাকতে পারে৷ কিন্তু সাংবাদিকদের মধ্যে কোন বিভক্তি নেই৷ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্যরা ঐক্যবদ্ধ৷ এই সমাবেশ থেকে ধারবাহিক কর্মসূচি নিয়ে তাঁরা এগিয়ে যাবেন৷
শাহেদ চৌধুরী বলেন, ‘‘এক বছর পার হয়ে গেলেও প্রকৃত অপরাধীরা গ্রেফতার হয়নি৷ সময় সময় সাংবাদিকদের ঠান্ডা করার জন্য একেকটি গল্প ছাড়া হয়৷ যেমন সাগর-রুনির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর একদিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একটি গল্প ছাড়লেন৷''
ডিআরইউ'র সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান ডয়চে ভেলেকে জানান, তাদের সমাবেশে তারা ইউনিয়ন নেতাদের আমন্ত্রণ জানাননি৷ তবে কেউ এলে আপত্তি থাকবেনা৷ সরকার জজ মিয়া নাটক সাজিয়ে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কাউকে আড়াল করতে চাইছে৷ গত এক বছরে সৌদি কূটনীতিক খালাফ হত্যাকাণ্ডসহ আরো অনেক চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের আসামি গ্রেফতার এবং রহস্য বের হলেও সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের কোন কিনারাই করতে পারেনি তদন্ত কর্মকর্তারা৷ তিনি একে ইচ্ছাকৃত বলে মনে করেন৷
ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ভেঙ্গে যাওয়াকে দুঃখজনক মন্তব্য করে খান বলেন, ‘‘ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আন্দোলন থেকে পিছু হটবেনা৷''
উল্লেখ্য, গত বছরের ১১ই ফেব্রুয়ারি ভোররাতে সাগর-রুনি সাংবাদিক দম্পতি ঢাকায় নিজ বাসায় দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হন৷ হত্যাকাণ্ডের পর এক বছরের বেশি পার হলেও প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করা যায়নি৷ র্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান জিয়াউল হাসান অবশ্য দাবি করেন, এ পর্যন্ত সন্দেহভাজন ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ তাদের ডিএনএ পরীক্ষা করা হচ্ছে৷