1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘সভ্য দেশ হিসেবে জার্মানির ভাবমূর্তি ঝুঁকির মুখে'

গ্রেহেম লুকাস/জেডএইচ১৮ মে ২০১৫

জার্মানিতে শরণার্থীদের উপর পুলিশ সদস্যদের নির্যাতনের খবর ব্যাপক সাড়া ফেলেছে৷ পুলিশ এখন পর্যন্ত এই অভিযোগ সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে৷ তবে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/1FRTZ
Deutschland Einreise Visum Reisepass Kontrolle
ছবি: picture alliance/dpa

জার্মান পুলিশ দ্বারা শরণার্থীদের নির্যাতনের খবর আসলেই বেশ আশ্চর্যের এবং এখানকার পুলিশ সম্পর্কে মানুষের যে ধারণা তার সঙ্গে এই ঘটনাটি খাপ খায় না৷ সেজন্য অভিযোগটি আসলেই সত্য কিনা তা আগে নিশ্চিত হতে হবে৷ আলোচিত দুই মামলার যে প্রসিকিউটর তাঁর পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত অস্পষ্ট বক্তব্য পাওয়া গেছে৷ তিনি বলেছেন, পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তার তদন্ত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে৷ তাই এ সম্পর্কে এখনই কোনো সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব নয়৷ পুলিশের দ্বারা যারা নির্যাতিত হয়েছে তাদের পরিচয় প্রকাশ করতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছেন প্রসিকিউটর৷ তবে তিনি এটা নিশ্চিত করেছেন যে, অভিযোগের ভিত্তিতে একজন পুলিশ কর্মকর্তার বাসায় তল্লাশি চালানো হয়েছে৷ ঘটনার সঙ্গে কতজন পুলিশ সদস্য জড়িত ছিলেন তাও জানান নি ঐ প্রসিকিউটর৷

Deutschland Bundespolizei in Hannover
গত সপ্তাহেই জাতিসংঘ আশ্রয়প্রাথীদের উপর হামলা বেড়ে যাওয়ায় জার্মানির সমালোচনা করেছেছবি: picture-alliance/dpa/H. Hollemann

মাত্র গত সপ্তাহেই জাতিসংঘ শ্রমবাজারে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ বৃদ্ধি এবং মুসলিম বিরোধী মনোভাব ও আশ্রয়প্রাথীদের উপর হামলা বেড়ে যাওয়ায় জার্মানির সমালোচনা করেছে৷ জার্মানি থেকে জেনোফোবিয়া দূর করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ৷ বৈশ্বিক এই সংস্থাটি যে জার্মানির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনেছে তাতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই৷ জার্মানির ড্রেসডেনে পেগিডা নামে বিদেশি বিরোধী যে আন্দোলন মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে তাতে জার্মানির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে৷ ১১ বছর ধরে নয়জন বিদেশি সহ একজন পুলিশ অফিসারকে হত্যার দায়ে নব্য নাৎসিদের বিরুদ্ধে যে মামলা চলছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে৷ মামলাটি যেভাবে চলেছে তাতে চরম ডানপন্থিদের দমনে কর্তৃপক্ষের ইচ্ছা আসলে কতটুকু তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে৷ এদিকে জাতিসংঘ যে বলছে যে, শুধু ডানপন্থিদের মধ্যেই নয় পুরো জার্মান সমাজেই বর্ণবৈষম্যমূলক আচরণ ঢুকে পড়েছে, সেটা বিশেষভাবে নিন্দনীয়৷

হ্যানোভারে পুলিশি বর্বরতার যে ঘটনা ঘটেছে সেখানে একটা বিষয় বিশেষভাবে চিন্তার৷ সেটা হলো, ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের এমন মনোভাব দেখা গেছে যে তাতে মনে হয়েছে, এই আচরণের জন্য যে তাদের কারও কাছে জবাবদিহি করতে হবে না সেটা তারা অনুভব করে৷

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের মার্চ মাসে হ্যানোভার রেলস্টেশন থেকে এক আফগান যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ ১৯ বছর বয়সি যুবকটির কাছে পাসপোর্ট বা অন্য কোনো বৈধ কাগজপত্র না থাকায় পুলিশ তাঁর শেকল বাঁধা পা ধরে টেনেহিঁচড়ে প্ল্যাটফর্ম থেকে বাইরে নিয়ে যায়৷ এরপর থানায় নিয়ে তাঁকে পেটানো হয়৷ শুধু তাই নয়, এভাবে নির্যাতন করে আনন্দ পাওয়ার কথা আরেক সহকর্মীকে মেসেজ পাঠিয়ে জানায় নির্যাতনকারী ঐ পুলিশ কর্মকর্তা৷

DW 60 Jahre Grahame Lucas
গ্রেহেম লুকাস, ডয়চে ভেলেছবি: DW/M. Müller

আরেক ঘটনায়, মরক্কোর এক মুসলিম নাগরিককে নির্যাতন করে জোর করে শূকরের মাংস খাওয়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে৷

এই দুই অভিযোগ যদি সত্যি হয় তাহলে সেটা হবে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং চরম বর্ণবাদমূলক আচরণ৷ অনেক জার্মানই এই ঘটনা শুনে আশ্চর্য হবে৷ কারণ আমরা জার্মানিতে থেকে সাধারণত বিশ্বের অন্যান্য দেশে এমন ধরনের নির্যাতনের কথা শুনে থাকি৷ কিন্তু এখানে, জার্মানিতে?

এখন বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে৷ ঘটনা প্রকাশিত হবার আগ পর্যন্ত কেন পুলিশ নিজেই এই অভিযোগ নিয়ে মাথা ঘামালো না? পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কত আগে থেকে এই অভিযোগের কথা জানতেন? কতজন পুলিশ সদস্য এর সঙ্গে জড়িত ছিল? কেন জড়িত সদস্যদের মনে হয়েছে যে কেউ তাদের চ্যালেঞ্জ করবে না? আমাদের এসবের উত্তর জানতে হবে৷

আমাদের ভুললে চলবে না যে, এই মুহূর্তে ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্ন৷ জার্মানিতে ব্যাপক আকারে এমন পুলিশি নির্যাতনের ঘটনার কোনো প্রমাণ নেই৷ তবে এই অভিযোগের যেন সুষ্ঠু তদন্ত হয় এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে জড়িত পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হয়৷ কারণ সভ্য দেশ হিসেবে জার্মানির ভাবমূর্তি এখন ঝুঁকির মুখে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য