সবরিমালা দুর্ঘটনার জন্য কেরালা সরকারের প্রতি দোষারোপ
১৭ জানুয়ারি ২০১১ঐ দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০৩-এ৷ কেরালা হাইকোর্টের দুজন বিচারপতির যে বেঞ্চ সবরিমালা তীর্থযাত্রার পুরো বিষয়টির দিকে নজর রাখছিলেন, তাঁরা আজ বলেছেন, প্রাথমিকভাবে পুলিশ, বনবিভাগ ও মন্দির পরিচালক পর্ষদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবই এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ি৷ বিচারপতিরা বলেন, এতবড় ভক্ত সমাবেশে ভীড় নিয়ন্ত্রণ ও উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করার দিকে গত ৫ই জানুয়ারি তাঁরা কেরালা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন৷ কিন্তু রাজ্য সরকার তাতে কান দেননি৷ নভেম্বর থেকে আড়াই মাস ব্যাপী সবরিমালা উৎসব পরিচালনা করার মত পরিকাঠামো আদৌ ছিলনা৷
তীর্থযাত্রী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, যাত্রাপথে তীর্থযাত্রিদের জন্য জল, আলো, বিশ্রাম শিবির, পুলিশ ও মেডিক্যাল সুবিধার মত প্রাথমিক সুবিধাটুকু পর্যন্ত ছিলনা৷ উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গ থেকে গিয়েছিলেন দুটি দলে মোট ১৪২জন তীর্থযাত্রী৷ তাঁরা ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন৷ কারণ তাঁরা মকরজ্যোতি দর্শনের জন্য পাহাড়ের উপরে না উঠে নীচে থেকে দর্শন করেন৷
সুশীল সমাজ বলছে, সরকারের গতানুগতিক তদন্তে ওপর কোন আস্থা নেই৷ পুরো সিস্টেমটাই ভেঙ্গে পড়েছে৷ নেই রাজনৈতিক সদিচ্ছা৷ তা না হলে ২০০২ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিন-চারটি অনুরূপ দুর্ঘটনার রিপোর্ট আজও পড়ে আছে হিমঘরে৷ কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি৷ কাজেই সময়-ভিত্তিক তদন্ত রিপোর্ট এবং তার পরবর্তী ব্যবস্থা কার্যকর না হলে এই ধরণের দুর্ঘটনা আবার ঘটার আশঙ্কা রয়েছে৷
অন্যদিকে সবরিমালায় পাহাড়ে শ্রীআয়াপ্পা মন্দিরে মকরদিব্য জ্যোতি নিয়ে ভক্ত ও যুক্তিবাদিদের মধ্যে শুরু হয়েছে বিতর্ক৷ যুক্তিবাদিরা বলছেন, মন্দির কর্তৃপক্ষ জানেন, দিব্য জ্যোতি কোন ঐশ্বরিক ঘটনা নয়৷ এটা মানুষের তৈরি৷ জঙ্গলের ভিতরে কোন একটা জায়গা থেকে কর্পূর জ্বালানো হয়, তা থেকেই এই আলোর ছটা৷ ১৯৯৯-এর দুর্ঘটনার পর মন্দিরের তন্ত্রী তা স্বীকার করেন৷ যুক্তিবাদিদের দাবি এই তথ্য প্রচার করা জরুরি৷
ভবিষ্যতে এই ধরণের বিপর্যয় রোধে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা সবরিমালা এলাকার উপগ্রহ ছবি দিতে চেয়েছে, যাতে ঐ এলাকার পাহাড় ও জঙ্গল রুটের ম্যাপ তৈরি করা যায়৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন