সংসদে লোকপাল বিল নিয়ে বিতর্ক
২৭ ডিসেম্বর ২০১১দুর্নীতি-বিরোধী বিতর্কিত লোকপাল বিল নিয়ে আজ সংসদের বিতর্ক অংশ নিয়ে সরকারের তরফে প্রতিমন্ত্রী ভি. নারায়নস্বামী বলেন, সরকার কড়া লোকপাল বিল পাশ করাতে সচেষ্ট৷এই বিল রাজ্য স্তরে লোকায়ুক্ত গঠনে সাহায্য করবে৷
বিরোধী বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজ তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিলের কিছু সংস্থান অসাংবিধানিক৷ সেগুলি সংশোধন করতে হবে৷ যেমন, লোকপাল প্যানেলে সংখ্যালঘু সংরক্ষণ ব্যবস্থা রদ করতে হবে, বিশেষ করে ধর্মের ভিত্তিতে৷ কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোকে রাখতে হবে সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে৷ রাজ্যগুলির জন্য লোকায়ুক্ত গঠনের অধিকার কেন্দ্র নিজের হাতে রাখলে তা হবে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থি৷সংবিধান অনুযায়ী এই অধিকার রাজ্যের, এমনটাই মনে করেন সুষমা স্বরাজ৷ সংশোধনের পর তা পাঠাতে হবে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে৷ কয়েক মাস পর আবার আনা হতে পারে সংসদে, বলেন তিনি৷
সমাজবাদী পার্টির মুলায়েম সিং এবং সংযুক্ত জনতা পার্টির শারদ যাদব মনে করেন, লোকপাল বিলে দুর্নীতি দূর হবেনা৷ আরজেডির লালু প্রসাদ প্রধানমন্ত্রীকে লোকপালের বাইরে রাখার কথা বলেন৷
সব মিলিয়ে একগুচ্ছ সংশোধনী সরকারের পক্ষে সামলানো সহজ নয়৷ যেহেতু প্রক্রিয়াটা জটিল ও দীর্ঘ তাই চলতি অধিবেশনে তা পাশ করানো সম্ভব হবেনা৷ সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় সরকার পক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও উচ্চকক্ষ রাজ্যসভাতে নেই৷ সেক্ষেত্রে সংসদের যৌথ অধিবেশন ডাকা যেতে পারে৷
অন্যদিকে কড়া লোকপালের লক্ষ্যে সরকারকে চাপে রাখতে মুম্বই-এ আজ থেকে তিনদিনের অনশনে বসেছেন আন্না হাজারে৷ অনশন মঞ্চ থেকে তিনি বলেন, শুধু লোকপাল বিলেই লড়াই শেষ হবেনা৷ দুর্নীতিবাজ রাজনীতিক, আমলা ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মুখোশ খুলে দেবার জন্য চালিয়ে যেতে হবে এই লড়াই৷ এই লড়াই-এ তিনি মৃত্যুবরণ করতেও রাজি, জানান তিনি ৷
দেশের বুদ্ধিজীবী ও চিন্তাবিদ মহল আইনি সংস্কার ছাড়া লোকপাল বিলের কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে৷ তাঁদের মতে, এতে তদন্তের কিছুটা উন্নতি হতে পারে, তবে শাস্তির হার বাড়বেনা৷ আন্নার জন লোকপাল এবং সরকারের লোকপাল বিলে রাজ্যের লোকায়ুক্তের সীমাবদ্ধতা তথা অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রাখা হয়নি৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক