সংখ্যালঘু নির্যাতন
২৩ জানুয়ারি ২০১৪তদন্ত কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, তাঁরা সঠিক তথ্য উদঘাটন করে দেশবাসীর সামনে তুলে ধরবেন৷
নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের এলাকাগুলোকে চার ভাগে ভাগ করে একজন করে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব মনোনীত করা হয়েছে৷ তাঁদের নেতৃত্বেই সরেজমিন তদন্ত হবে৷ সিরাজগঞ্জ, বগুড়া এবং গাইবান্ধার ঘটনার তদন্তে নেতৃত্ব দেবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী সমিতির নেতা এ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া৷
নীলফামারী, দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও জেলার ঘটনা তদন্তের নেতৃত্বে থাকবেন সাবেক সচিব এ এফ এম হালিম এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবদাল আহমেদ৷
সাতক্ষীরা, যশোর, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর জেলার নির্যাতন তদন্তে নেতৃত্ব দেবেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজী এবং প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী৷
কুমিল্লা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও চট্টগ্রাম জেলার ঘটনা তদন্তে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শওকত মাহমুদকে আহ্বায়ক এবং দলের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদারকে সদস্য সচিব করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে৷
তদন্ত কমিটির একজন সানাউল্লাহ মিয়া ডয়চে ভেলেকে জানান, বুধবার রাতে পেশাজীবীদের সঙ্গে বৈঠকের পর খালেদা জিয়া কমিটিগুলো গঠন করে দিয়েছেন৷ এই চারটি কমিটি নির্বাচনের আগে এবং পরে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, হত্যা এবং বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করবে৷ তাঁদের কাজ হবে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা এবং কারা জড়িত তা বের করে আনা৷ তিনি বলেন এসব ঘটনায় ঢালাওভাবে বিএনপি-জামায়তকে দায়ী করা হচ্ছে৷ আসলেই কি তাই, না অন্য কোনো গোষ্ঠী বা রাজনৈতিক শক্তি এর সঙ্গে জড়িত, তা তাঁরা জানার চেষ্টা করবেন৷
সানাউল্লাহ মিয়া বলেন কমিটি গঠনের পর তাঁরা বৃহস্পতিবার বৈঠক করেছেন৷ শনিবার থেকে সরেজমিন তদন্তের কাজ শুরু করবেন৷ এই তদন্তে তাঁরা স্থানীয় পর্যায়ের সাংবাদিক, আইনজীবীসহ পেশাজীবীদের সম্পৃক্ত করবেন৷
তিনি দাবি করেন তাঁদের এই তদন্ত হবে নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ৷ তাঁদের এই তদন্ত রিপোর্ট জাতির সামনে প্রকাশ করা হবে৷
তদন্ত কমিটি বিএনপির লোকজন নিয়ে গঠন করা হয়েছে – তাহলে কিভাবে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘‘আমাদের তদন্ত হবে তথ্যপ্রমাণ ভিত্তিক৷''
তদন্ত কমিটির আরেকজন রুহুল আমিন গাজী ডয়চে ভেলেকে জানান, এই তদন্তের কোনো সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়নি৷ তবে তাঁরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ করতে চান৷ তিনি বলেন তাঁরা তদন্ত রিপোর্ট বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কাছে জমা দেবেন৷ এই রিপোর্ট সরকার বা আন্তর্জাতিক মহলকে দেয়া হবে কিনা, সে সিদ্ধান্ত খালেদা জিয়াই নেবেন৷ তবে সংবাদ মাধ্যমে যে প্রকাশ করা হবে তা নিশ্চিত৷
এদিকে, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম ডয়চে ভেলেকে জানান, এধরণের তদন্ত কমিটির কোনো আইনগত ভিত্তি না থাকলেও নাগরিকরা তদন্ত কমিটি করতে পারেন৷ কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তারাই তদন্ত করলে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে৷ আর সবাই যদি যে যার মতো তদন্ত কমিটি গঠন করে তাহলে বিষয়টি এলোমেলো হয়ে যেতে পারে৷ তিনি মনে করেন একারণে জাতীয় ভিত্তিক বা বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা যেতে পারে৷