‘শ্রিংলা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কোন্নয়নের ভ্যাকসিন’
২১ আগস্ট ২০২০ডয়চে ভেলের ইউটিউব চ্যানেলে ‘খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ টকশোতে অংশ নিয়ে আজকাল পত্রিকার এই যুগ্ম সম্পাদক হর্ষবর্ধন শ্রিংলাকে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কন্নোয়নের জন্য ভ্যাকসিন বা কো-ভ্যাকসিন হিসেবে উল্লেখ করেন৷ তার মতে, ঢাকায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করা শ্রিংলাকে বিদেশ সচিব করার পেছনেও ভারত সরকারের এই উদ্দেশ্য থাকতে পারে৷ কেননা, ‘‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভারত বর্ষের পক্ষে খুব জরুরি৷ কারণ, পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের যে সম্পর্ক (তার প্রেক্ষিতে), সীমান্ত রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভালো রাখা দরকার৷’’
তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদী যখন ২০১৪ সালে প্রথমবার নির্বাচিত হলেন, তার শপথ অনুষ্ঠানে সার্কের সব দেশের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন৷ এমনকি পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের বাড়িতেও তিনি গিয়েছিলেন৷ পরবর্তীতে মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোট যখন বিপুলভাবে নির্বাচিত হয়ে এলো তখন এমন একটি বার্তা প্রতিবেশী দেশগুলোর দিকে যাচ্ছে যে, ভারত ‘বড়দাসুলভ’ মনোভাব দেখাতে চাইছে৷ সেই ধারণাটা ভাঙা বা আন্তরিকতার প্রলেপ দেয়া ভারতের জন্য জরুরি বলে মনে করেন অনিন্দ্য জানা৷
ভারতীয় তথ্য সূত্রের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ৯০ মিনিট ধরে শ্রিংলা বৈঠক করেছেন৷ একজন রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে একজন বিদেশ সচিবের ৯০ মিনিটের বৈঠক খুব খেলো কথা নয় এই পরিস্থিতিতে৷ বৈঠকের সময়কাল দিয়েই অনেক কিছু নির্ধারিত হয়৷’’
অনুষ্ঠানে সহ-আলোচক হিসেবে ছিলেন ঢাকার জি-নাইন-এর সাধারণ সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্ত৷ তার মতে, ভারতকে বাংলাদেশ যতটা দিয়েছে, ভারত ততটা দেয়নি৷ সিডরের সময় ভারত চালের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা দেয়নি৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারত সফরে এক বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তি হয়েছিল, যা আজও বাস্তবায়ন হয়নি৷ ‘‘ভারত শুধু প্রতিশ্রুতি দেয়৷ বাংলাদেশের পক্ষে আক্ষরিক অর্থে সহমর্মাতা নিয়ে যা করা প্রয়োজন তা করে না বলে বঞ্চনার অভিযোগ আমাদের রয়েছে,’’ বলেন তিনি৷ তার অভিযোগ, ভারতের সরকার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷
আরেক প্রশ্নের জবাবে অনিন্দ্য জানা বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরে ভারতে যা হচ্ছে তাতে মুসলিম সংল্যাঘুদের শঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে৷ রাম মন্দিরে যখন শিলান্যাস হলো, করোনার মধ্যেও যখন এত জাঁকজমকভাবে হলো, তখন তাদের আরো শঙ্কিত হওয়ার কারণ রয়েছে৷ এতে তারা মনে করছেন, সংবিধানে যা-ই থাক না কেন ভারতবর্ষকে ভার্চুয়ালি একটি হিন্দু রাষ্ট্রের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷’’
সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকা উচিত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্ত বলেন, ‘‘রাষ্ট্রের কোনো ধর্মের প্রয়োজন আছে বলে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি না৷ রাষ্ট্রের মধ্যে সব ধর্মের মানুষ বসবাস করবে এবং যে যার ধর্ম পালন করবে, সেখানে রাষ্ট্র নিজে একটা ধর্মের পক্ষ নিয়ে নেবে এটা আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি না থাকা উচিত৷’’ তিনি মনে করেন, উপমহাদেশে যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে তারা নিজেদের সুবিধার জন্য এই ধরনের উদ্যোগ নিয়ে থাকেন৷
এফএস/এসিবি