শৈত্য প্রবাহ
১১ জানুয়ারি ২০১৩বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাসের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে গত বুধবার৷ সেদিন দিনাজপুরের তাপমাত্রা ছিল ৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ শৈত প্রবাহে বৃহস্পিতিবার পর্যন্ত প্রাণহানির সংখ্যা কমপক্ষে ৮০৷
ঢাকার ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল এবং গবেষণা কেন্দ্রের চিকিৎসক ডা. ফায়েজ সাজ্জাদ জানান, তীব্র শীতে সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন শিশু এবং বয়োজ্যেষ্ঠরা৷ তাঁদের প্রতি তাই বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে৷ তিনি বলেন, ‘‘শীতের কারণে আমাদের শরীরে উষ্ণতার ভারসাম্য কমে যায়৷ তাছাড়া এ সময় সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি ব্যবহারের পরিমাণও কমে যায়৷ জামাকাপড়-থালাবাসন ধোওয়া হয় কম৷ ফলে শীতকালে মৌসুমি বিভিন্ন রোগের পাশাপাশি ডায়রিয়াও দেখা দেয়৷''
শৈত প্রবাহের ছোবল থেকে রক্ষা পেতে তরুণ এই চিকিৎসকের পরামর্শ হচ্ছে, ‘‘শীত থেকে যে কোনো উপায়ে নিজেকে রক্ষা করতে হবে৷ শীতবস্ত্র এবং বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে৷ পাশাপাশি ডায়রিয়া বা হাঁপানি দেখা দিলে নিকটস্থ হাসপাতালে গিয়ে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করতে হবে৷''
বলাবাহুল্য, বাংলাদেশের মোট জনশক্তির একটি বড় অংশ দারিদ্রসীমার নীচে বাস করছে৷ ফলে অনেকের পক্ষে তীব্র শীত মোকাবিলা করার মতো পোশাক এবং ওষুধপত্র দ্রুত সংগ্রহ করা একরকম অসম্ভব৷ রেড ক্রেসেন্ট সোসাইটিও জানিয়েছে, শৈত্য প্রবাহে দুর্গম এলাকায় বসবাসরতরা সবচেয়ে বেশি ভুগছেন৷
সাধারণত প্রতিবছর শীতের মৌসুমে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত, দারিদ্র জনগোষ্ঠীর সহায়তায় এগিয়ে আসে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন মহল৷ কিন্তু এবার শীতের প্রকোপ সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছালেও তাঁদের সহায়তার বিষয়টি তেমন একটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না, বলেন ডা. সাজ্জাদ৷ তাঁর কথা হচ্ছে, ‘‘এই বছর শীতবস্ত্র বিতরণে যথেষ্ট ঘাটতি এখন পর্যন্ত লক্ষ্যণীয়৷ আগে যে পরিমাণ শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছিল, এ বছর সেরকম পরিস্থিতি নেই বললেই চলে৷''
উল্লেখ্য, এর আগে ১৯৬৮ সালে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি শীত পড়েছিল৷ সে বছর শ্রীমঙ্গলে তাপমাত্রা নেমেছিল ২.৮ ডিগ্রিতে৷
সাক্ষাৎকার: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ