শূন্য কার্বন নির্গমনের লক্ষ্যে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে জার্মানি
১০ আগস্ট ২০২৩জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে ইউরোপ মহাদেশ৷ দক্ষিণে অস্বাভাবিক উষ্ণ তাপমাত্রা, ঝড়-বৃষ্টি-বন্যার ফলে ধ্বংসলীলা সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে ইউরোপের অনেক দেশ৷ এমন অবস্থায় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করতে আরো জোরালো পদক্ষেপের জন্য চাপ বাড়ছে৷ শুধু পরিবহণ ক্ষেত্রে নয়, সার্বিকভাবে কার্বন নির্গমন কমাতে উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্যমাত্রা স্থির করছে ইউরোপের অনেক দেশ৷
জার্মানির মন্ত্রিসভা পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি তরান্বিত করতে আগামী বছরের জন্য প্রায় ৫,৭৮০ কোটি ইউরো বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ ২০২৩ সালের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় সেই অংক প্রায় ৬০ শতাংশ বেশি৷ ২০৪৫ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন শূন্যে আনার লক্ষ্যে জার্মানি ভরতুকিও বাড়াচ্ছে জার্মান সরকার৷ আগামী বছর ‘ক্লাইমেট অ্যান্ড ট্রান্সফর্মেশন'-তহবিলের সিংহভাগ নির্মাণ ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে ব্যয় করা হবে৷ জার্মানির অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী ২০২৪ সালে পুরানো ভবনের সংস্কার ও নতুন পরিবেশবান্ধব ভবন তৈরির লক্ষ্যে ১৮৯ কোটি ইউরো ধার্য করা হচ্ছে৷ সেইসঙ্গে পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে ভরতুকি এবং ব্যাটারিচালিত যান চার্জ করার অবকাঠামোর উন্নতির জন্যও সরকার বড় অংক ব্যয় করবে৷ জার্মানি শুধু আগামী বছরেই পরিবেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে বড় বিনিয়োগ করছে না৷ ২০২৪ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত মোট ২১,২০০ কোটি ইউরো ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে৷
জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে পুরানো ভবনের সংস্কারের প্রশ্নে জার্মানিতে মানুষের মনে অনিশ্চয়তা রয়েছে৷ বিদ্যুৎ ও ঘর গরম রাখার ব্যয় কমাতে যে ধরনের বিনিয়োগ প্রয়োজন, তার দায় মালিক বা ভাড়াটেদের ঘাড়ে চাপানোর বিষয়ে অসন্তোষ রয়েছে৷ নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ক্লারা গাইভিৎস বলেন, সংস্কারের চাপ যাতে সামাজিক অসন্তোষ সৃষ্টি না করে, সেই লক্ষ্যে সরকারি ভরতুকি জরুরি৷ তাছাড়া ঘর গরম রাখার হিটিং ব্যবস্থা যেখানে পৌর পর্যায়ে স্থির করা সম্ভব, সেই পদক্ষেপের জন্যও সরকার আর্থিক সহায়তা দিতে চায়৷ একমাত্র সার্বিক উদ্যোগের মাধ্যমেই জার্মানিতে নির্গমন কমানোর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা যাবে বলে সরকার মনে করছে৷
ব্যাটারিচালিত যানের প্রসার বাড়াতে অবকাঠামোর উন্নতির পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব হাইড্রোজেন জ্বালানির উন্নয়নের জন্যও জার্মান সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে৷ সংকটের সময়ে বিদেশের উপর নির্ভরতা কমাতে চিপ উৎপাদনের ক্ষেত্রে আরো আকর্ষণীয় প্রণোদনা দিতে চায় চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সরকার৷ উল্লেখ্য, বিশ্বের সবচেয়ে বড় চিপ উৎপাদনকারী কোম্পানি তাইওয়ানের টিএসএমসি জার্মানির ড্রেসডেন শহরে কমপক্ষে ১,০০০ কোটি ইউরো মূল্যের কারখানা গড়ে তোলার ঘোষণা করেছে৷
জার্মানির রেল ব্যবস্থা ও অবকাঠামোর উন্নতির জন্যও পরিবেশ তহবিল থেকে বিশাল অংক বিনিয়োগ করা হচ্ছে৷ বিভিন্ন পথে সরকারের সরাসরি অনুদানের পাশাপাশি রেল কোম্পানিও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও অবকাঠামোর উন্নতির লক্ষ্যে বিশাল বিনিয়োগ করবে৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)