শিশুদের কবরস্থানে পরিণত হচ্ছে গাজা
৭ নভেম্বর ২০২৩সোমবার দিনভর গাজা স্ট্রিপে একের পর এক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হামাসের একাধিক সামরিক কাঠামো নষ্ট করা হয়েছে বলে ইসরায়েলের তরফে জানানো হয়েছে। এদিকে হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুধুমাত্র সোমবারের আক্রমণে অন্তত ২০০ বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
লেবানন সীমান্তেও লড়াই শুরু হয়েছে। ইসরায়েলের সেনা লেবানন সীমান্তেও সোমবার আক্রমণ চালিয়েছে বলে হেজবোল্লাহের তরফে জানানো হয়েছে। দক্ষিণ লেবাননে একটি গাড়িতে বোমা মারা হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনায় চারজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে লেবাননের প্রশাসন জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যম এবিসি-কে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ''আগামী বেশ কিছুদিন গাজা স্ট্রিপের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবে ইসরায়েল।'' হামাসের মতো কোনো সংগঠন যাতে সেখানে আর তৈরি হতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে চায় তারা। অর্থাৎ, গাজা স্ট্রিপে ইসরায়েল প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ রাখবে। একইসঙ্গে নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, হামাস ২০০ জন পণবন্দিকে মুক্তি না দিলে গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হবে না।
বাইডেন-নেতানিয়াহু কথা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সোমবার ফোনে কথা হয়েছে নেতানিয়াহুর। দুই রাষ্ট্রপ্রধানই সে কথা জানিয়েছেন। চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে তাদের আবার আলোচনা হতে পারে। আলোচনায় বাইডেন লড়াইয়ে কৌশলগত বিরতির প্রস্তাব দিয়েছেন। সাংবাদিকদের বাইডেন জানিয়েছেন, তিনি যুদ্ধবিরতির কথা বলেননি। কারণ, ইসরায়েল আপাতত যুদ্ধবিরতি মানতে চাইছে না। তিনি কৌশলগত বিরতির কথা বলেছেন। ওই সময়ের মধ্যে গাজায় মানবিক ত্রাণ আরো বেশি করে পৌঁছানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন বাইডেন। নেতানিয়াহু অবশ্য সে বিষয়েও নিশ্চিত করে কিছু জানাননি। আগামী বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আবার আলোচনা হওয়ার কথা।
শিশুদের কবরস্থান
জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস জানিয়েছেন, ঘনজনবসতিপূর্ণ গাজা ক্রমশ শিশুদের কবরস্থানে পরিণত হচ্ছে। আরো একবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছএন তিনি। গাজা স্ট্রিপের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, এটি একটি সার্বিক মানবিক সংকটে পরিণত হয়েছে। গোটা বিশ্বের উচিত এই পরিস্থিতি থামানোর জন্য আবেদন করা।
গাজায় তেল ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে ইসরায়েল। কারণ, হামাস সেই তেল ব্যবহার করবে বলে তাদের অভিযোগ। গুতেরেস জানিয়েছেন, তেল না ঢুকলে ইনকিউবেটরে যে শিশুরা আছে এবং কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রের সাহায্যে যে রোগীদের চিকিৎসা চলছে তারা মারা যাবে। কারণ তেল ছাড়া জেনারেটর চলবে না।
এদিকে পেন্টাগন সরকারিভাবে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, গাজায় যে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তা তারা জানে। তবে নির্দিষ্ট সংখ্যা তাদের জানা নেই। এর আগে হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণলয়ের দেওয়া পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বাইডেন। তারই প্রেক্ষিতে পেন্টাগন এই বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)