সমালোচনার মুখে মাক্রোঁ
২০ জুলাই ২০১৮চলতি বছরের পহেলা মে বিক্ষোভ চলাকালে এক যুবককে পিটিয়েছিলেন মাঁক্রোর শীর্ষ নিরাপত্তারক্ষী আলেকজান্দ্রে বেনাল্লা৷ সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তাকে বরখাস্ত করেন মাক্রোঁ৷ এই ঘটনাকে তাঁর প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি মনে করা হচ্ছে৷
এক তদন্ত সূত্র থেকে জানা গেছে, কেবল বেনাল্লা নন, দুই উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাসহ আরও তিনজনকে বরখাস্ত করেছেন মাক্রোঁ৷ বেনাল্লার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে সহিংস আচরণ, পুলিশের পোশাকের অবৈধ ব্যবহার এবং অনুমতি ছাড়া নজরদারি ভিডিও ফুটেজের ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে৷
ফরাসি পত্রিকা লে মঁদে চলতি সপ্তাহে তাদের ওয়েবসাইটে স্মার্টফোনে তোলা একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে৷ সেখানে দেখা যায়, বেনাল্লা এক বিক্ষোভকারী যুবককে পেটাচ্ছেন৷ মে দিবসের ঐ বিক্ষোভের সময় তার মাথায় ছিল পুলিশের হেলমেট৷ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ভিডিওটি প্রকাশ করে ঐ পত্রিকা, যেখানে তাকে পুলিশের পোশাকে এক নারীর সঙ্গে ধস্তাধস্তি করতে দেখা যায়৷
এসব ফুটেজ প্রকাশ হওয়ার পর মাক্রোঁর অফিস থেকে বলা হয়েছিল, বেনাল্লাকে পুলিশের বিভিন্ন অভিযান পর্যবেক্ষণের অনুমতি দেয়া আছে৷ তবে এরপর বেনাল্লাকে দুই সপ্তাহের জন্য ‘বিনা বেতনে' বরখাস্ত করার খবর জানা যায়৷ পাশাপাশি তাকে মাক্রোঁর বিভিন্ন সফরের নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে প্রশাসনিক কাজে লাগানো হয়৷ তবে বিএফএম টিভি চ্যানেল তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, বেনাল্লা চলতি সপ্তাহেই তার কাজে ফিরেছেন৷ এমনকি বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি ফুটবল দলকে যে বাসে করে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেই বাসে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন তিনি৷
শুক্রবার ফরাসি আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ‘‘পহেলা মে বিক্ষোভের সময় বেনাল্লা একা ছিলেন না, তাকে সহযোগিতা করেছেন আরও একজন নিরাপত্তা সহযোগী ভিনসেন্ট ক্রেজ৷ তাকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে৷''
তবে এই কেলেঙ্কারিতে মাক্রোঁর জনপ্রিয়তায় বেশ ভাটা পড়েছে৷ বুধবার ও বৃহস্পতিবার জনমত জরিপে মাক্রোঁর পক্ষে মাত্র ৩৯ শতাংশ ভোট পড়েছে৷ পহেলা মে'র বিক্ষোভের পরদিনই মাক্রোঁ টুইটারে লিখেছিলেন, ‘‘যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে, যারা দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে৷ ''
শুক্রবার বেশিরভাগ সংবাদপত্র লিখেছে, বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মাক্রোঁর এক সফরের সময় এই ঘটনা সম্পর্কে তাঁকে প্রশ্ন করা হলেও তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি৷ পত্রিকাগুলো লিখেছে, লে মঁদে'র অনুসন্ধান ছাড়া এই ঘটনা কেউ জানতেই পারতো না৷ আইনজীবীরা স্বপ্রণোদিত হয়ে তদন্ত শুরু করেছেন৷ বিরোধী দল দাবি করেছে, মাক্রোঁকে পার্লামেন্টে এর জবাব দিতে হবে৷ তবে ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে জানিয়েছিলেন, শিক্ষার্থীদের এ ধরনের বিক্ষোভে হস্তক্ষেপ করার কোনো অধিকার বেনাল্লার নেই৷
এপিবি/এসিবি (এপি, এএফপি)