শহরের বাহন ইলেকট্রিক যান
৬ অক্টোবর ২০১৫বার্লিনের এক স্টার্ট-আপ কোম্পানি ‘ই-স্কুটার শেয়ারিং' চালু করেছে৷ ১৫০টি ইলেকট্রিক স্কুটার কিনে তারা চলতি বছরেই সেগুলি পথে নামাতে চায়৷ এই স্কুটার রিচার্জেবল ব্যাটারিতে চলে৷ ব্যাটারি বার করে সাধারণ প্লাগ-পয়েন্টে চার্জ করা যায়৷ ইলেকট্রিক গাড়ির মতো আলাদা চার্জিং স্টেশনের প্রয়োজন হয় না৷ ই-মিও কোম্পানির সহ প্রতিষ্ঠাতা ভালেরিয়ান সাইটার বলেন, ‘‘স্কুটারের মধ্যে দু'টি ব্যাটারি রয়েছে৷ এক একটির রেঞ্জ ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত, অর্থাৎ দু'টি ব্যাটারি দিয়ে ১০০ কিলোমিটার যাওয়া যায়৷ এই স্কুটার শহরের মধ্যে প্রতিবার ৭ থেকে ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলার উপযোগী৷ অর্থাৎ সেটি দিনে বেশ কয়েকবার চালানো যায়৷''
যেখানে প্রয়োজন, সেখানেই ই-স্কুটার ভাড়া নেওয়া যায়৷ মোবাইল ফোনের অ্যাপ-এর মাধ্যমে সবচেয়ে কাছের খালি স্কুটারের অবস্থান জানা যায়৷ তারপর অ্যাপ-ই পেছনের বাক্স খুলে দেয়, যার মধ্যে চাবি ও দু'টি হেলমেট থাকে৷ এবার পথ চলার শুরু৷
গাড়ি ছাড়াই শহরের মধ্যে ইচ্ছেমতো যাতায়াত করতে অনেকে ইলেকট্রিক সাইকেলও ব্যবহার করেন৷ প্যাডেলে চাপ দিলেই সাইকেলে লাগানো ইলেকট্রিক মোটর চালু হয়ে যায়৷
কিন্তু সমস্যা হলো, এই সব যানের দাম এখনো বড্ড বেশি৷ বার্লিনের ‘ই-বাইক ফাইন্ডার' নামের কোম্পানি তাই কেনার বদলে ‘লিজিং' বা ভাড়ার ব্যবস্থা করেছে৷ তাদের ওয়েবসাইটে ২০টিরও বেশি মডেল থেকে বেছে নেওয়া যায়৷ মাসে ৩০ থেকে ৯০ ইউরো কিস্তি দিতে হয়৷ ‘জববাইক' ওয়েবসাইট ক্রিস্টিয়ান শিন্ডলার বলেন, ‘‘কোম্পানিগুলির মনোভাবেও পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ তাঁরা দেখছেন, রাস্তাঘাটে যানযট, গাড়ি পার্কিং-এর জায়গা পাওয়া মুশকিল, কর্মীদের নড়াচড়া করারও তেমন উপায় নেই৷ এখন উপায় কী? তাদের মনে হয়, অনেকেই তো সাইকেল চেপে আসেন৷ তাই গাড়ি পার্কিং-এর বদলে সাইকেল রাখার আরও ব্যবস্থা রাখা উচিত৷ তাহলে তার সঙ্গে ইলেকট্রোমোবিলিটি, অর্থাৎ ই-বাইক কম্বাইন করলে কেমন হয়!''
এককালে ইলেকট্রিক সাইকেলকে প্রবীণদের যান হিসেবে মনে করা হতো৷ এখন আর সে দিন নেই৷ আজকাল ই-বাইক ও সাধারণ সাইকেলের মধ্যে পার্থক্য সহজে চোখে পড়ে না৷ ব্যাটারিও সাইকেলের কাঠামোর মধ্যে থাকে৷ সাধারণ সাইকেল থেকে মাউন্টেন বাইক – জার্মানিতে প্রতি বছর প্রায় ৫ লক্ষ ব্যাটারিচালিত দুই চাকার বাহন বিক্রি হয়৷ গড়ে সেগুলির দাম প্রায় ২,০০০ ইউরো৷ কিছু মডেলের দাম আকাশছোঁয়া হতে পারে৷
প্যাডেলে চাপ দিতে হবে নিজেকেই৷ ইলেকট্রিক মোটর বিভিন্ন পর্যায়ে চালু করা যায়৷ টুর, স্পোর্টস বা টার্বো মোড৷ যত বেশি সেট করা হবে, সিস্টেম তত জোরে এগিয়ে নিয়ে যাবে৷ ‘ই-মোশন' সাইকেলের দোকানের লেও প্রেৎসে বলেন, ‘‘আমি প্যাডেলের উপর স্বাভাবিক চাপ দিচ্ছি৷ মোটরের কাছ থেকে কতটা সাহায্য নেব, সেটা এখানে স্থির করতে পারি৷''
বার্লিনে টুরিস্টরাও সানন্দে ইলেকট্রিক যান ব্যবহার করছেন৷ যেমন ব্রান্ডেনবুর্গ গেটের কাছে ইলেকট্রিক টুকটুক বা অটো রিকশা ভাড়া নেওয়া যায়৷ ই-টুকটুক কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা অ্যাডাম রাইস বলেন, ‘‘আমরা বার্লিনে পর্যটকদের জন্য এক টেকসই পরিবহণের সুযোগ করে দিচ্ছি৷ বিবেক দংশন ছাড়াই সাইটসিয়িং টুর, শহর উপভোগ করা যায়৷''
সত্যি, পরিবেশ দূষণের অপরাধবোধ ছাড়াই শহর ঘোরার আনন্দ পাওয়া সম্ভব৷