শশী থারুরকে নিয়ে সমস্যায় ভারতের কংগ্রেস
১৫ জানুয়ারি ২০১০কখনো তিনি টুইটারে কখনও বা অন্য কোন সোশ্যাল নেটওয়ার্কে৷ সর্বত্রই তিনি চূড়ান্ত জনপ্রিয়৷ টুইটারে তাঁর পাঁচ মিলিয়ন ‘ফলোয়ার'৷ সেই সোশ্যাল নেটওয়ার্ক টুইটারের ফলোয়ারদের সামনে ভারতীয় হিন্দুত্ববাদের ‘গোমাতা' নিয়ে ব্যাপক হাসি মসকরা করেছেন শশী থারুর৷ তাছাড়া জঙ্গিদের ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশ রুখতে ভারত সরকার ভিসা দেওয়া নিয়ে যত কড়াকড়ি করছে, তা নিয়েও থারুর নানান আক্রমণাত্মক মন্তব্য করে বসেছেন৷ ফলে বেশ চটেছে ভারতের রক্ষণশীল মনমোহন সিং সরকার৷ নিজে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের মন্ত্রী হয়েও শশী থারুরের এইসব মন্তব্য ভারতীয় মূল্যবোধকে আঘাত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে৷
শশী থারুর নিজে অবশ্য এমনিতে কোন সাধারণ ব্যক্তিত্ব নন৷ মন্ত্রী হওয়ার বিষয়ে তিনি নিজের সিদ্ধান্তে এগিয়ে এসেছেন এটাও বলা যাবে না৷ জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল পদে দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করতে করতে তিনি কোফি আন্নানের কার্যকালের শেষে জাতিসংঘের মহাসচিব পদের জন্য আবেদন করেন৷ সে সময় ভারতের কংগ্রেস সরকার তাঁকে দেশে ফেরার জন্য অনুরোধ জানায়, শর্ত ছিল নির্বাচনে জিতলে পররাষ্ট্রমন্ত্রকের দায়িত্বে আনা হবে তাঁকে৷ ফলে জাতিসংঘের বিশাল দায়িত্বের কাজ ছেড়ে দেশে ফিরে আসেন শশী৷ নির্বাচনে জেতার পর প্রতিশ্রুতি মত তাঁকে ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদেও বসায় কংগ্রেস৷ কিন্তু সমস্যা বাধতে শুরু করে তিনি তাঁর অন্যধারার মন্তব্য করা শুরু করে দেওয়ার পর থেকে৷ বিশেষ করে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ভারতীয় মূল্যবোধে আঘাত হেনে ঠাট্টামস্করা তো বটেই এমনকি কংগ্রেসের সর্বমান্য নেতা এবং ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর মতবাদ নিয়েও কিছু ইঙ্গিতপূর্ণ মতামত টুইটারে করে বসেন শশী৷
এইসব কাণ্ডের পরে খোদ প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং শশী থারুরকে সতর্ক করে দিয়ে বিবৃতি দেন৷ তাঁর সমালোচনা করতে শোনা যায় কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকেও৷ আদতে শুধু শশীই নন, তরণ প্রজন্মের বেশ কিছু কংগ্রেস মন্ত্রীকে নিয়ে এখন খানিকটা সমস্যায় পড়েছে ভারতের দেড়শো বছরের পুরানো রাজনৈতিক দল কংগ্রেস৷ এঁদের মধ্যে শশী ছাড়াও রয়েছেন বর্তমান সরকারের পরিবেশমন্ত্রী জয়রাম রমেশ এবং বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মা৷ বিশেষজ্ঞদের অভিমত, এই তরুণ তুর্কিরা ক্রমশ সংখ্যায় বাড়বে অদূর ভবিষ্যতে৷ তাই সময়ের সঙ্গে তাল রেখে পুরানো মূল্যবোধকে কিছুটা বদলে ফেলতে হবে কংগ্রেসকেই৷ তা না হলে তাদের পক্ষে ভবিষ্যতকে আহ্বান করা এবং পরবর্তী প্রজন্মের সঙ্গে পা ফেলা সম্ভব নয়৷ কিন্তু, কংগ্রেস কী তাদের মূল্যবোধ বদলাতে পারবে এত তাড়াতাড়ি ? এই প্রশ্নের উত্তর এত সহজে মিলবে না বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা৷
প্রতিবেদন - সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা - হোসাইন আব্দুল হাই