শলৎসকে বেকায়দায় ফেলতে ব্যর্থ লাশেট
২১ সেপ্টেম্বর ২০২১জার্মানির আসন্ন নির্বাচনে চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হিসেবে জনমত সমীক্ষায় বাকি দুই প্রতিদ্বন্দ্বীকে পেছনে ফেলে বেশ কিছুকাল এগিয়ে রয়েছেন এসপিডি দলের ওলাফ শলৎস৷ দল হিসেবে এসপিডি প্রথমে পিছিয়ে থাকলেও শলৎসের জনপ্রিয়তার ঢেউয়ের ফায়দা তুলে আপাতত শীর্ষ স্থানে রয়েছে, যদিও প্রতিপক্ষ ইউনিয়ন শিবিরের সঙ্গে ব্যবধান কমে আসছে৷ এমন লাগাতার জনপ্রিয়তা ভেঙে দিতে শলৎসের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ইউনিয়ন শিবিরের আরমিন লাশেট একের পর এক হাতিয়ার প্রয়োগের চেষ্টা করছেন৷ এসপিডি দলের নেতৃত্বে আগামী জোট সরকার গঠিত হলে শরিক হিসেবে বামপন্থি দল ‘ডি লিংকে দেশকে রসাতলে ঠেলে দেবে, এমন সতর্কতাবাণী সত্ত্বেও সম্ভাব্য ভোটাররা ভয় পাচ্ছেন না৷ বিশেষ একটি ঘটনার জের ধরে ব্যক্তিগতভাবে শলৎসের নেতৃত্বের দুর্বলতার অভিযোগ তুলেও লাশেট ফায়দা তুলতে ব্যর্থ হচ্ছেন৷
গোটা ঘটনার সূত্রপাত জার্মানির অর্থ মন্ত্রণালয়ে৷ মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ করতে জার্মানিতে ফাইনানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বা এফআইইউ নামের এক নিরপেক্ষ কর্তৃপক্ষ রয়েছে৷ গত ৯ই সেপ্টেম্বর সেই ইউনিটের প্রতিনিধিরা অর্থ ও বিচার মন্ত্রণালয়ে তল্লাশি চালান৷ বিশেষ কয়েকটি ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং এর সন্দেহ সত্ত্বেও এই দুই মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়েছিল কিনা, তা যাচাই করতে এই অভযান চালানো হয়৷ অর্থমন্ত্রী হিসেবে শলৎস নির্বাচনের ঠিক আগে এমন সিদ্ধান্তের মৃদু সমালোচনা করেন এবং এ ক্ষেত্রে তল্লাশির বদলে সরাসরি লিখিত কৈফিয়ৎ চাওয়ার সুযোগের উল্লেখ করেন৷ নির্বাচনি প্রচারের সময়ে এমন ঘটনার জের ধরে লাশেট শলৎসের তীব্র সমালোচনা করেন এবং তদন্তে বাধা সৃষ্টি করার অভিযোগ করেন৷ যে ব্যক্তি নিজের মন্ত্রণালয় সামলাতে পারেন না, তিনি কীভাবে দেশের দায়িত্ব সামলাবেন, এমন বিদ্রূপও করেন লাশেট৷
নির্বাচনি প্রচারের শেষ পর্যায়ে বিরোধীরা তড়িঘড়ি করে সংসদের আর্থিক কমিটির বৈঠকে শলৎসকে আরও বিড়ম্বনায় ফেলার চেষ্টা কার্যত ব্যর্থ হলো৷ সোমবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শলৎসকে জেরা করার কথা ছিল৷ কিন্তু তিনি আচমকা সশরীরে উপস্থিত হয়ে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের হিসেব গোলমাল করে দেন৷ রুদ্ধদ্বার বৈঠকে আত্মপক্ষ সমর্থন করে তিনি সাংবাদিকদের কাছে মানি লন্ডারিং মোকাবিলার ক্ষেত্রে তার নিজস্ব উদ্যোগ ও অবদান তুলে ধরেন৷ শলৎস মনে করিয়ে দেন, যে অর্থমন্ত্রী হিসেবে তিনি ক্রমাগত এফআইইউ ইউনিটের উন্নতির লক্ষ্যে কাজ করে গেছেন৷ তার আমলেই ইউনিটের কর্মীসংখ্যা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়ানো হয়েছে৷ গত ৩০ বছরে যা সম্ভব হয়নি, মাত্র তিন বছরে তা হাসিল করা গেছে বলে শলৎস দাবি করেন৷ তবে বিরোধীরা শলৎসের আমলে ‘ওয়ারকার্ড' ও অন্যান্য আর্থিক অনিয়মের উল্লেখ করেন৷ শেষ পর্যন্ত বিষয়টি ভোটারদের মনে কতটা প্রভাব ফেলবে, সে বিষয়ে এখনো সংশয় থেকে যাচ্ছে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এপি)