1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শরণার্থীদের কাজ পেতে সহায়তা

১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

বাস্তুচ্যুত মানুষদের পক্ষে নতুন জায়গায় কাজ পাওয়া এক কঠিন চ্যালেঞ্জ৷ খোদ জার্মানিতে পাঁচ লাখের মতো শরণার্থী এখন চাকুরি খুঁজছেন, কিন্তু যুতসই কাজ পাচ্ছেন না৷ তাঁদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে মিউনিখভিত্তিক এক স্টার্টআপ৷

https://p.dw.com/p/2sWjo
জার্মানিতে কাজ করছেন এক আফগান শরণার্থী
ছবি: Social Bee

জার্মানির এক অর্গ্যানিক সুপারমার্কেটে কাজ করেন মাসুদ সুতানজাদে৷ ২৪ বছর বয়সি এই আফগানির কাজ হচ্ছে, দোকানের বিভিন্ন তাকে শাকসবজি সাজিয়ে রাখা৷ অধিকাংশ শাকসবজির জার্মান নাম জানেন না তিনি৷ তবে খদ্দেরদের সঙ্গে জার্মান ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করেন৷ উদ্দেশ্য, কাজের ফাঁকে জার্মান ভাষাটাও রপ্ত করে নেয়া৷

তিনি বলেন, ‘‘আমার লক্ষ্য একটাই– আমি একটি সাধারণ জীবন চাই৷ আর এজন্য যে বিষয়টি আমার কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে, নিরাপদ পরিবেশ৷'' 

আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাবাহিনীর ইলেক্ট্রিয়ান হিসেবে কাজ করতেন সুতানজাদে, যা তাঁকে তালেবানের লক্ষ্যে পরিণত করে৷ ফলে ২০১৫ সালে সেদেশ ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তিনি এবং ইরান, তুরস্ক এবং বলকান পেরিয়ে জার্মানিতে পৌঁছান৷ এখানে পৌঁছানোর পরপরই ভাষা শিক্ষার কোর্সে ভর্তি হন উদ্যমী এই যুবক৷ তবে জার্মানির চাকুরির বাজার যে কতটা কঠিন, সেটা তিনি বছরখানেক পরে বিভিন্ন স্থানে চাকুরির আবেদন করতে শুরু করার পর বুঝতে পারেন

সুতানজাদে বলেন, ‘‘কখনো কখনো আমার চাকুরির আবেদন প্রত্যাখানের চিঠি পাই৷ তবে অধিকাংশ সময় কোনো জবাবই পাই না৷'' এখন অবশ্য একটি চাকুরি পেয়েছেন তিনি৷ ‘‘সোশ্যাল-বি আমাকে একটা সুযোগ দিয়েছে,'' বলেন এই আফগান৷

জার্মানির চাকুরি বাজারে শরণার্থীদের দুরবস্থা দেখে কিছু একটা করার তাগিদ থেকে সোশ্যাল-বি স্টার্টআপটি তৈরি করেন ম্যাক্সিমিলান ফেল্সনার এবং জারা ব্রুন৷ অলাভজনক এই প্রতিষ্ঠানের কাজ হচ্ছে শরণার্থীদের যোগ্যতা অনুযায়ী নিয়োগ দেয়া এবং তাঁদের ছোট-বড় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পাঠানো৷

ফেল্সনার বলেন, ‘‘আমরা শরণার্থী এবং রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের আমাদের জন্য কাজ করার সুযোগ দেই এবং পরবর্তীতে আমাদের বিভিন্ন পার্টনার প্রতিষ্ঠানে তাদের পাঠিয়ে দেই৷'' এভাবে সোশ্যাল-বি কার্যত শরণার্থীদের নিয়োগ দিতে একেকটি প্রতিষ্ঠানকে যে জটিল আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়, সেই প্রক্রিয়া থেকে রেহাই দেয়৷ একইসঙ্গে শরণার্থীরাও একটি স্বস্তিকর কাজের সন্ধান পায়৷  

জার্মানিতে আফগান জাতীয় দলের ক্রিকেটার

ইতোমধ্যে আলডি, ভ্যুর্থ, সেপেলিন এবং সিস মাইক্রোটেকের মতো বড় প্রতিষ্ঠান সোশ্যাল-বি'র সহায়তায় শরণার্থীদের কাজ দিতে শুরু করেছে৷ আর অলাভজনক হওয়ায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মী সরবরাহ করে স্টার্টআপটির যে মুনাফা হয়, সেটা পুনরায় স্টার্টআপটিতেই বিনিয়োগ করা হয়৷ তাছাড়া, বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা থেকে সহায়তাও পায় এটি

আপাতত মিউনিখে পঞ্চাশজনের কিছু বেশি শরণার্থীর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে স্টার্টআপটি৷ এ বছরের শেষ নাগাদ সংখ্যাটিকে শতাধিক করার পাশাপাশি জার্মানির অন্যান্য শহরেও নিজেদের কর্মপরিধি বিস্তৃত করতে চায় প্রতিষ্ঠানটি৷ সবকিছু ঠিক থাকলে অদূর ভবিষ্যতে অনেক শরণার্থীর নিরাপদ কর্মস্থলে পরিনত হবে সোশ্যাল-বি, এমন আশা করাই যায়৷

প্রতিবেদন: রিচার্ড ফ্যুকস/এআই