লিবীয় বিদ্রোহীদের জন্য ফরাসি অস্ত্র নিয়ে বিতর্ক
৩০ জুন ২০১১সঙ্গে সঙ্গে তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে৷ ফ্রান্সই প্রথমে কথাটা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে৷ কিন্তু তিন মাস ধরে বোমা অভিযান চালানোর পরও যে গাদ্দাফিকে গদিচ্যুত করা যায়নি, তা'তে ধৈর্য্যচ্যুতি শুধু ফ্রান্সেরই ঘটেনি৷ মাটিতে বিদ্রোহীদের প্রগতিও চলেছে অতি ধীরগতিতে৷ তাই ফ্রান্স মানবিক সাহায্যের সঙ্গে কিছু রকেট লঞ্চার, অ্যাসল্ট রাইফেল, মেশিন গান, ট্যাংক-বিধ্বংসী মিসাইল ইত্যাদি পশ্চিম লিবিয়ার পর্বতাঞ্চলে এয়ারড্রপ করেছে৷
ল্য ফিগারো বলেছে, ফ্রান্সের ন্যাটো সহযোগীরা এ'ব্যাপারে কিছুই জানতো না৷ ন্যাটো শুধু বলেছে, তারা এ'ধরনের কার্যকলাপে সংশ্লিষ্ট ছিল না৷ তবে বিদ্রোহীদের প্রতি অস্ত্রসাহায্য যে চলেছে, তা সাধারণভাবেই জ্ঞাত ছিল৷ ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মন্ত্রী জেরাল্ড হাওয়ার্থ বলেছেন, আমরা এ'ধরনের কাজ করব না৷
ফ্রান্সের বিরুদ্ধে মূল সমালোচনা হল: লিবিয়ায় অস্ত্র পাঠানো জাতিসংঘের প্রস্তাবের বিরোধী - রাশিয়া, চীন অথবা ভারতের যে অবস্থান৷ আসলে গোলমালটা জাতিসংঘের দু'টি প্রস্তাব নিয়ে৷ গত ফেব্রুয়ারির ১৯৭০ নম্বর প্রস্তাবের নবম এবং দশম অনুচ্ছেদ অনুযায়ী লিবিয়ায় অস্ত্রসরবরাহ পুরোপুরি নিষিদ্ধ৷ গত মার্চের ১৯৭৩ নম্বর প্রস্তাবে কিন্তু একটা ফাঁক রেখে দেওয়া হয়েছে৷ বলা হয়েছে, জাতিসংঘের সদস্যদেশরা লিবিয়ায় বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে এবং তা ‘‘১৯৭০ নম্বর প্রস্তাবের নবম অনুচ্ছেদ সত্ত্বেও''৷ জাতিসংঘে ফরাসি রাষ্ট্রদূত জেরার' আরো' ঠিক সেই কথাই আবার বলেছেন গতকাল৷
কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি এই যে, নিরাপত্তা পরিষদের ১৫টি সদস্যদেশের মধ্যে অধিকাংশই মনে করে লিবিয়ায় যে কোনো ধরনের অস্ত্রপ্রেরণ আক্ষরিকভাবে না হলেও, নীতিগতভাবে অস্ত্র অবরোধের সূত্রটি ভঙ্গ করে৷ এবং রাশিয়া শীঘ্রই ফ্রান্সের পদক্ষেপের প্রতি তার সোচ্চার আপত্তি জানাবে বলেই প্রত্যাশা করা হচ্ছে৷
এছাড়া পশ্চিমা শক্তিরা যদি তাদের নিজেদের আরোপিত শাস্তিমূলক ব্যবস্থাকেই এ'ভাবে ফাঁক খুঁজে বার করে করে অচল করে দেয়, তা'হলে সেটা বিশেষ ভালো দৃষ্টান্ত হবে না, বলে বিশ্লেষক এবং জাতিসংঘের কূটনীতিকদের আশঙ্কা৷ কেননা রাশিয়া ইরানের ক্ষেত্রে, অথবা চীন উত্তর কোরিয়ার ক্ষেত্রে ঠিক একই পন্থা অবলম্বন করতে পারে৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই