লিবিয়ায় ন্যাটো অভিযানের সমাপ্তি, আত্মসমর্পণ করতে পারেন সাইফ
২৮ অক্টোবর ২০১১ন্যাটোর কাজ শেষ
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুযায়ী লিবিয়ার সাধারণ মানুষের প্রাণহানি বন্ধ করতে ‘ইউনিফাইড প্রোটেকশন' নামের অভিযানের আওতায় প্রায় ৭ মাস ধরে বিমান অভিযান চালিয়ে আসছিল ন্যাটো৷ গাদ্দাফিকে একঘরে করে রাখতে আকাশে ‘নো ফ্লাই জোন' ও সমুদ্রেও অবরোধ চালিয়ে এসেছিল এই সামরিক জোট৷ মূলত ফ্রান্স ও ব্রিটেন এই অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর ব্যবস্থা করেছে৷ আরব লিগ'ও এই অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে৷ এবার গাদ্দাফির পতন ও মৃত্যুর পর নিরাপত্তা পরিষদ এই অভিযানের সমাপ্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷
ভবিষ্যতে লিবিয়ায় ন্যাটোর ভূমিকা
শুক্রবার ন্যাটোর মহাসচিব আন্ডার্স ফগ রাসমুসেন টুইটার বার্তায় জানিয়ে দিলেন, সোমবার ৩১শে অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে লিবিয়ায় অভিযান শেষ হচ্ছে৷ তিনি লেখেন, ‘‘আমাদের সামরিক কাজ শেষ হয়েছে৷'' তবে সেইসঙ্গে তিনি এও বললেন, যে লিবিয়ার নতুন নেতৃত্ব যদি চায়, সেক্ষেত্রে ন্যাটো সাহায্য করতে প্রস্তুত৷ গাদ্দাফির দীর্ঘ ৪২ বছরের শাসনকালের পর বিশেষ করে
সেদেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলির সংস্কারের কাজে ন্যাটো সাহায্য করতে পারে বলে তিনি মনে করেন৷ তবে লিবিয়ার শাসক এনটিসি ইতিমধ্যেই সীমান্তরক্ষা ও বে-আনি অনুপ্রবেশ রুখতে ন্যাটোর কাছে সহায়তার যে আর্জি জানিয়েছে, সেবিষয়ে ন্যাটো এখনো কোনো মন্তব্য করে নি৷
সাইফ আল ইসলামের আত্মসমর্পণ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা
আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত শুধু জানিয়েছে, যে আনুষ্ঠানিক কাঠামোর বাইরে কিছু মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে সাইফ আল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়েছে৷ চরম বেকায়দায় পড়ে সাইফ সম্ভবত নিজের বাবার মতো বেঘোরে প্রাণ দিতে চান না৷ তিনি জানেন, নেদারল্যান্ডস'এ ফৌজদারি আদালতের কাছে আত্মসমর্পণ করলে কমপক্ষে প্রাণে বেঁচে যাবেন৷
আদালতের প্রধান কৌঁসুলি লুইস মোরানো ওকাম্পো সেক্ষেত্রে সুবিচারের আশ্বাস দিয়েছেন৷ তিনি বলেছেন, অপরাধী সাব্যস্ত হওয়ার আগে যে কোনো অভিযুক্তের মতো গাদ্দাফি পুত্রকেও নিরপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে৷ বিচারকের রায়ই চূড়ান্ত হিসেবে বিবেচিত হবে৷ উল্লেখ্য, সাইফ আল ইসলাম, গাদ্দাফির নিরাপত্তা প্রধান আব্দুল্লাহ আল সেনুসি সহ গাদ্দাফির ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে ও তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে৷ মঙ্গলবার সাইফ ও সেনুসি সীমান্ত পেরিয়ে নাইজারে প্রবেশ করেছে বলে লিবিয়ার এনটিসি মনে করছে৷ সেনুসি ইতিমধ্যে মালি পৌঁছে গেছে৷ এই সব দেশের সরকারের সঙ্গে তাদের প্রত্যর্পণের বিষয়ে আলোচনা চলছে বলেও জানা গেছে৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক