লন্ডনে শীর্ষ বৈঠকের পর ব্রেক্সিটের জট ছাড়লো
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ব্রেক্সিটের কালো ছায়া ব্রিটেনের অর্থনীতি ও রাষ্ট্রের ঐক্যের উপর থেকে দূর হচ্ছে না৷ ২০২০ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছেদের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই বাজার নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় ব্রিটেনে একাধিক সংকট দেখা যাচ্ছে৷ তার উপর ইইউ-র সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির বদলে ব্রেক্সিট চুক্তিকে ঘিরে লাগাতার উত্তেজনাও সে দেশের জন্য ক্ষতিকারক হয়েছে৷ চুক্তির নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড প্রোটোকলকে ঘিরে উত্তেজনা কাটাতে সোমবার লন্ডনে শীর্ষ পর্যায়ে বৈঠকে অবশেষে আসার আলো দেখা গেলো৷
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন সোমবার ব্রেক্সিট নিয়ে বিরোধ মেটাতে নতুন বোঝাপড়ার ঘোষণা করলেন৷ ‘উইন্ডসর ফ্রেমওয়ার্ক’ নামের নতুন এই ব্যবস্থা নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড প্রোটোকল কার্যকর করার ক্ষেত্রে অনেক অসুবিধা দূর করবে বলে দাবি করা হচ্ছে৷ এক সংবাদ সম্মেলনে সুনাক বলেন, এক ফলে ইইউ-র সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘নতুন অধ্যায়’ শুরু হলো৷ ফন ডেয়ার লাইয়েন এই বোঝাপড়ার মাধ্যমে আয়ারল্যান্ডের সব সম্প্রদায়ের জন্য শান্তির আশা প্রকাশ করেন৷ তাঁর মতে, নতুন এই ব্যবস্থা উভয় পক্ষের বাজার প্রতি শ্রদ্ধা বজায় রেখে সুরক্ষা নিশ্চিত করবে৷
তবে সাফল্য এলেও সেই ব্যবস্থা উত্তর আয়ারল্যান্ডে অচলাবস্থা কাটাতে পারে কি না এবং ব্রিটেনেও সমালোচকদের শান্ত করতে পারে কিনা, সে বিষয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে৷ ব্রিটেনের বর্তমান সংকটের কারণে রাজনৈতিক আঙিনায় কোণঠাসা হয়ে রয়েছে সুনাকের টোরি পার্টি৷ জনমত সমীক্ষায় বিরোধী লেবার পার্টি অনেক এগিয়ে রয়েছে৷ ব্রেক্সিট চুক্তির সংশোধনকে সাফল্য হিসেবে তুলে ধরে সেই ব্যবধান কমাতে চান প্রধানমন্ত্রী৷ তবে ইইউ-র সঙ্গে বোঝাপড়ার মাধ্যমে কিছু বাস্তব সমস্যা দূর হলেও উত্তর আয়ারল্যান্ডের ব্রিটেন-পন্থি ডিইউপি পার্টি আবার ক্ষমতা বণ্টনের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ফিরে যাবে কিনা, সে বিষয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে৷ ব্রেক্সিট চুক্তি অনুযায়ী উত্তর আয়ারল্যান্ড কার্যত ইইউ-র একক বাজারের অংশ থেকে যাওয়ায় এবং ব্রিটেনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে ব্যবধান দূর না হওয়ায় সেই দলের ক্ষোভ দূর হচ্ছে না৷
নতুন বোঝাপড়ার পরেও উত্তর আয়ারল্যান্ডের রাজনৈতিক জট দূর না হলে প্রধানমন্ত্রীর টোরি পার্টির মধ্যে ইউরোপ-বিরোধী অংশেও বিদ্রোহের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ ২০১৬ সালে গণভোটের মাধ্যমে ব্রিটেনের মানুষ ইইউ ত্যাগের পক্ষে রায় দেবার পর থেকে দলের মধ্যে তীব্র বিভাজন সরকারের কাজকর্মে অচলাবস্থা সৃষ্টি করে আসছে৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি, ডিপিএ)